১০ টাকায় ইফতার প্যাকেজ বিক্রি করছেন কুবি শিক্ষার্থী
১০ টাকায় ইফতার বিক্রি করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজী মিরাজ। তার এ ইফতার প্যাকেজে আছে- অল্প কিছু ছোলা, দুটি পেঁয়াজু, একটি বেগুনি, একটি আলুর চপ, একটি জিলাপি, একটি কলা, খেজুর ও মুড়ি।
এ আট ধরনের আইটেম নিয়ে তৈরি ইফতার প্যাকেটির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫০ টাকা। কিন্তু তিনি দাম রাখছেন মাত্র ১০টাকা।
প্রথম রমজান থেকে শুরু করে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) অষ্টম রোজা পর্যন্ত একই ধারাবাহিকতায় ইফতার বিক্রি করছেন মিরাজ। পবিত্র মাহে রমজানে টিউশনির বেতন জমিয়ে মাত্র ১০ টাকায় ইফতার প্যাকেজ বিতরণের আয়োজন করছেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস যতদিন খোলা থাকবে ততদিন তার এই কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন। শুরুর দিন থেকেই ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন মিরাজ। তার কাছে সুলভ মূল্যের এই ইফতারসামগ্রী পেয়ে খুশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন কম খরচে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর জন্য ইফতার নিশ্চিত করতে কুবির প্রধান ফটকের পাশে দাঁড়িয়ে ১০ টাকার বিনিময়ে ইফতার বিক্রি করছেন তিনি।
আরও পড়ুন
সাঈদুল আলম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের। দেশে এখন দ্রব্যমূল্যের যে চড়া দাম সেখানে সারাদিন রোজা শেষে পেট ভরে ইফতার করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সেখানে মিরাজের এই উদ্যোগ রোজাদার শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক প্রশংসনীয়।
জাফর আহমেদ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিদিন ৫০-১০০ টাকায় ইফতার করা আমার মতো অনেকের জন্য অসম্ভব। সেখানে মাত্র ১০ টাকায় ইফতার করছি। এটা আমাদের জন্য অবশ্যই ভালো ব্যাপার। অনেক শিক্ষার্থী তার দ্বারা উপকৃত হচ্ছে।
এ বিষয়ে ১০ টাকার ইফতারের উদ্যোক্তা কাজী মিরাজ বলেন, আমি হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। কয়েকটা টিউশনি করে নিজের খরচ চালাই। দ্রবমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির সময়ে একটি দোকানে গিয়ে ১০ টাকার ছোলা কিনতেও অনেক শিক্ষার্থী দ্বিধায় ভুগে। দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি সেখানে সবাই ইফতার করতে পারছে না। তাদের জন্যই মূলত আমার এই উদ্যােগ। আমার উদ্দেশ্য সবার ইফতার নিশ্চিত করা। প্রথম দিন ৮০টি প্যাকেট দিয়ে শুরু করেছি পরদিন দ্বিগুণ, তারপর দিন আরও দ্বিগুণ। এখন অনেক শিক্ষার্থী আমার কাছ থেকে ইফতার কেনেন। টিউশনি থেকে জমানো টাকায় আপাতত চালাচ্ছি। তবে ফান্ড শেষ হয়ে গেলে আমাদের বিভাগীয় প্রধানসহ অনেকে ফান্ডিং দেওয়ার কথা জানিয়েছে। আমার তহবিল শেষ হয়ে গেলে আমি তখন তাদের টাকায় চালিয়ে যাব। ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।
আরিফ আজগর/আরকে