ঢাবিতে অনুমতি ছাড়া কোরআন তেলাওয়াতের আসর করায় চেয়ারম্যানকে শোকজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ঐতিহাসিক বটতলায় রমজান মাসকে স্বাগত জানিয়ে গত ১০ মার্চ কোরআন তেলাওয়াত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের একদল শিক্ষার্থী। পরে এ আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের ‘কেন শাস্তি প্রদান করা হবে না’— এই মর্মে লিখিত বক্তব্য চান কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাসির। অনুষ্ঠান করার আগে কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি না হওয়া নেওয়ায় এ চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে ঢাকা পোস্টকে জানান তিনি। গত ১৩ মার্চ আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান জুবায়ের মুহাম্মদ এহসানুল হকের কাছে এই লিখিত বক্তব্য চেয়ে নোটিশ প্রদান করা হয়।
গত ১৪ মার্চ থেকেই বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রচারিত হলেও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে নোটিশ প্রদানের বিষয়টি বলতে অপারগ ছিলেন বিভাগের চেয়ারম্যান। তবে, আজ সোমবার (১৮ মার্চ) শোকজের সেই নোটিশটি এই প্রতিবেদকের হাতে আসে।
নোটিশে বলা হয়, কলা অনুষদ ও প্রক্টর অফিসের নিয়ম নীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে আপনার বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘আরবি সাহিত্য পরিষদ’ গত ১০ মার্চ বিকেলে কলা ভবনের সামনের বটতলায় একটি কোরআন মাহফিলের আয়োজন করে। পূর্বানুমতি না নিয়ে এ ধরনের কাজের জন্য কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এ মর্মে আপনাকে লিখিত বক্তব্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করছি।
এ প্রসঙ্গে আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. যুবায়ের মুহাম্মাদ এহসানুল হক বলেন, এখানে কোনো একটা অপতৎপরতা চলছে। শিক্ষার্থীরা কোরআন তেলাওয়াত করেছে, কোনো অনৈতিক কোনো কাজ তো করেনি। তাহলে কেন এত সমস্যা? কত-শত প্রোগ্রাম এখানে হয়, তখন তো কোনো অনুমতি লাগে না... তাহলে কোরআন তেলাওয়াতের প্রোগ্রামে কী সমস্যা আমি বুঝি না।
তিনি বলেন, আমি উপাচার্যের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। আশা করি দ্রুতই বিষয়টির সমাধান হবে এবং যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, সেটি শান্ত হবে।
এ বিষয়ে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাসির ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুধু কারণ দর্শানোর একটি চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা সেখানে পবিত্র কোরআন মাহফিল করেছে এবং টুপিও বিতরণ করেছে, এতে আমার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তারা প্রক্টর অফিস বা অনুষদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। তারা যা করেছে, সেটি শিক্ষার্থীদেরই কাজ... তবে সেটি করার আগে অবশ্যই আমাদেরকে অবহিত করার দরকার ছিল।
বিনা অনুমতিতে অন্যান্য সংগঠনের প্রোগ্রাম করা নিয়ে তিনি বলেন, সবাই নিজেদের প্রোগ্রামের আগে আমাদের অনুমতি নেয়। হয় প্রক্টর অফিসে বা ডিন অফিসে সেটি লিখিত বা মৌখিক অনুমতি নিয়েই প্রোগ্রাম করে। অনুমতি ছাড়া কাউকে প্রোগ্রাম করতে দেওয়া হয় না।
উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের পাশে বটতলায় মাহে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে কোরআন তেলাওয়াত আসরের আয়োজন করে আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘আরবি সাহিত্য পরিষদ’। সেদিন থেকেই এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনা হয়। তবে, অধিকাংশ শিক্ষার্থীই সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে এই অনুষ্ঠানকে গ্রহণ করে।
কেএইচ/কেএ