ভাষা নিয়ে সারা বছর কাজ করতে হবে : সাদেকা হালিম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে যে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল তার অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তিনি ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় সোনার বাংলা গড়তে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও একই পথে চলছেন। কিন্তু সে পথটাও অনেক কণ্টকাকীর্ণ। কেননা আমরা এখনো বিভিন্ন ষড়যন্ত্র দেখতে পাই। তার জীবনের ওপর একুশ বারের মতো হামলা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে মহান ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. সাদেকা হালিম বলেন, ভাষাকে উপজীব্য করে বিশ্বে একটি দেশ গড়ে উঠেছে তা হলো বাংলাদেশ। শুধুমাত্র ভাষার মাসেই ভাষা সৈনিকদের স্মরণ করলে হবে না, তাদের আত্মত্যাগের কারণ অনুধাবন করতে হবে। ভাষা নিয়ে সারা বছর আমাদের কাজ করা প্রয়োজন। এছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার প্রতি মর্যাদা দেওয়ার অনন্য দৃষ্টান্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাহাড়ে শান্তি চুক্তির অন্যতম বড় উদাহরণ। পাহাড়ের মানুষরা প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রাখে। সেখানে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে সবাই জানে প্রধানমন্ত্রীই একমাত্র ভরসাস্থল।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে একুশে ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি থেকেই আমাদের স্বাধিকার ও অধিকার আন্দোলন শুরু হয়। পরে ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু মুক্তির সংগ্রাম বলতে আমাদের সবার অর্থনৈতিক মুক্তি ও সমনাগরিক অধিকার বুঝিয়েছেন। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অর্থ হচ্ছে এদেশে এমন একটি সমাজ হবে- যেখানে প্রত্যেকের যে যার অবস্থানে সমান অধিকার ভোগ করবে।
তিনি আরও বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে যারা পিছিয়ে আছে তাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর মতে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফেটাতে হবে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে মূল্যবোধের অবক্ষয় চরম পর্যায়ে, মানুষের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অনেকক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া মানুষকেও আমরা পিছিয়ে দিচ্ছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মননে ধারণ করে মূল্যবোধসম্পন্ন দক্ষ নাগরিক হতে হবে; আর তাহলেই আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণ রাষ্ট্র তৈরি করতে পারব।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ূন কবীর চৌধুরী বলেন, মাতৃভাষার মাধ্যমেই চেতনার কাঠামো তৈরি হয়ে থাকে। আর নিজস্ব ভাষা বিকাশ না করে আমরা সৃজনশীলতার দিকে যাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায়ও বাংলা ভাষার ব্যবহার আরও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।
আলোচনা সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন কলা অনুষদের ডিন ও উক্ত অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বুশরা জামান। আলোচনা সভা শেষে ছিল সাংস্কৃৃতিক অনুষ্ঠান।
এমএল/এমএ