জবি ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদক গ্রুপের পাল্টাপাল্টি মামলা
সরস্বতী পূজা চলাকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। এতে দুই গ্রুপের ১৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয়ের ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সূত্রাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে মামলা দুটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আবিদ ইশরাক নিলয় বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। তিনি মামলায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন গ্রুপের ৯ নেতাকর্মীকে আসামি করেন। আসামিরা হলেন– অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর মুকিত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি রাকিব তালুকদার, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জয় সরকার অর্জুন, নিরব, ব্যবস্থাপনা বিভাগের হৃদয় রানা, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের আরাফাত, অপু সাহা, সাজিদ ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সোহান। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার গ্রুপের মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে সভাপতি গ্রুপের সাতজনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন। এ মামলার আসামিরা হলেন– নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক মায়েল, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য পারিজাত বিশ্বাস, ছাত্রলীগের কর্মী নৃবিজ্ঞান বিভাগের গাজী শামসুল হুদা, রাহুল আমিন, রিয়াদ আফ্রিদি ও ইতিহাস বিভাগের চয়েন দাস।
দুই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রথম মামলার বাদী আবিদসহ ৫/৬ জন সহপাঠী নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্টার কাবাব হোটেলে যাওয়ার পথে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে আসামি মুকিত, আরাফাত, সোহান, জয়, অপু, নিরব,রাকিব, হৃদয়, সাজিদসহ ২০/২৫ জন পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশে এলোপাতারি লোহার রড, বাঁশের লাঠি, স্টিলের পাইপ, হাতুড়িসহ আমাদের ওপর হামলা করে। এতে বাদী, তার বন্ধু ইসমাইল হোসেন তাফসির ও বড় ভাই বাতেন বিল্লাহ গুরুতর জখমসহ আহত হয়। এ ঘটনার পর বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে ভিক্টোরিয়া পার্ক জামে মসজিদের সামনে আরেক মামলার বাদী মাহমুদুর রহমানসহ তার বন্ধুরা আড্ডা দেওয়ার সময় আসামি গাজী শামসুল, চয়েন, পারিদাস, প্রান্ত, রাহুল, মায়েল রিয়াদসহ ২০/২৫ জন হামলা করে। এতে মাহমুদুরসহ কয়েকজন আহত হয়।
জানা যায়, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীর বিরোধ ঘটে। এ ঘটনার সূত্রে কয়েকদিন ধরে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় হুমকি-ধামকি দিচ্ছিল ও বিরোধ করে আসছিল। পরে বুধবার সরস্বতী পূজার দিনে এ বিবাদ সংঘর্ষে রূপ নেয়। ক্যাম্পাসের ভেতরে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ধাওয়া-পাল্টা দাওয়াও হয়। ক্যান্টিনের ভেতরে লাঠিসোঁটা নিয়ে মারামারি করতেও দেখা যায় দুই গ্রুপকে। এতে পূজা চলা অবস্থায় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে।
এমএল/এসএসএইচ