পাওনা চাওয়ায় ক্যান্টিন মালিকের দাড়ি ছিঁড়লেন ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের ক্যান্টিনে পাওনা টাকা চাওয়ায় ক্যান্টিন মালিককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ সময় অকথ্য ভাষায় গালাগালির একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর দাড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলেন তিনি।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে সূর্যসেন হল ক্যান্টিনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী হল ক্যান্টিন মালিক ফাহিম হোসেন হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেবেন বলে জানান।
ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম আরাফাত হোসাইন অভি। তিনি হলের ২৬৯ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। এছাড়া তিনি সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। রাজনীতিতে তিনি ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ক্যান্টিন মালিক ফাহিম হোসেন বলেন, অভি ভাই গত পরশু ক্যান্টিনে খাবার নিয়ে যায়। তখন আমি তাকে আগের পাওনা টাকা দেওয়ার বিষয়ে বলি। তখন সে কিছু না বলে খাবার নিয়ে যায়। পরে গতকাল সে আর আসেনি। আজকে যখন আবার দুপুরে খাবার নিতে আসে তখন আমি ভাইকে পাওনা টাকার ব্যাপারে বলি। পরে সে আজকের খাবারের টাকাও বাকি খাতায় লিখে রাখতে বললে আমি ম্যানেজারকে দিয়ে লিখে রাখি।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, এর ঠিক দুই মিনিট পরেই তিনি আবার এসে আমাকে ক্যাশ কাউন্টার থেকে ডেকে নিয়ে কার সাথে কীভাবে আচরণ করতে হয় জিজ্ঞেস করেন। আমি বলি, ভাই আমি তো আপনার কাছে শুধু বাকি টাকা চেয়েছি আর কিছু না। এ সময় সে আমার দাড়ি টান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলে এবং আমাকে চড়, কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। তার সাথে অন্যরা তাকে আটকে রাখতে চেষ্টা করলেও সে আমাকে মারতে থাকে এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। আমাকে কোনো কারণ ছাড়া মারা হয়েছে। এখন আমি অভিযোগপত্র রেডি করে প্রভোস্ট স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ করব।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে আরাফাত হোসাইন অভি বলেন, আমি দুপুরে খাবার খেতে গেলে ক্যান্টিন মালিক বকেয়া টাকা চায়। তখন আমি বিকাশে টাকা তুলতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানাই। পরে আমি সেখান থেকে বের হওয়ার সময় তিনি ম্যানেজারকে বলেন আমাকে যেন নেক্সট টাইম খাবার না দেয়। এটা শুনে আমি ক্যান্টিন মালিককে বললাম আপনি এটা কেমন কথা বললেন, একজনের সমস্যা তো থাকতেই পারে। এরপর হঠাৎ করে তিনি আমাকে ধাক্কা মারেন, আমিও তার কলার টেনে ধরি। তারপর ধাক্কাধাক্কির মধ্যে তার দাড়িতে আমার হাত লেগে ছিঁড়ে যায় কিন্তু আমি তাকে মারিনি।
এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমি ঘটনা শুনেছি। আমরা এসব বিষয়ে কাউকে কোনো ছাড় দেব না। সে যত বড় নেতাই হোক সেটা দেখার বিষয় না। আমরা তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
সার্বিক বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়াকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
কেএইচ/এমএ