‘ছাত্র সংসদ গঠনে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই’
দেশের স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ গঠন করা বা না করাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে হস্তক্ষেপমূলক কোনো কাজ করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সিজিপিএপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত চা-চক্রে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের দাবি আদায়ে গঠিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো দৃষ্টিভঙ্গি আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেশিরভাগই স্বায়ত্তশাসিত। এর মধ্যে চারটি বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি স্বায়ত্তশাসিত। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আমরা শিক্ষাবিদদের সঙ্গে আলোচনা করব, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
মন্ত্রী বলেন, তবে ছাত্র সংসদ হলে শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ ভালো হয়। সেটার প্রস্তুতি শুরু করলে আবার অরাজকতা, অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হতে পারে। কাজেই সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। সৃষ্টিশীলতার প্রয়োজনে, নেতৃত্ব দেওয়ার প্রয়োজনে, সংসদের যে কার্যকারিতা, ছাত্র সংসদ সেটাতে আরও বেশি ভূমিকা রাখে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ তাদের দক্ষতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
আরও পড়ুন
নতুন শিক্ষাক্রম বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষাক্রম তৈরি করার ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষ অংশগ্রহণ আছে। আমরা শুধুমাত্র আইইআর-এর না বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়েছি। আমরা বলেছি সকলের সাথে আলোচনা করব, সবার মতামত নেব। সবাইকে নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সবার মতামত নিয়ে সংবেদনশীলতার যে ভিন্ন জায়গা সেটা কমানোর চেষ্টা করব। সমতা অবশ্যই থাকবে, সেই লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যেই কাজ করছি। আশা করছি, যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে তা সমাধান হবে।
শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ফলাফলের উপরে আটকে না থেকে, ফলাফলের বাইরেও যে একটা সমাজ আছে, নিজেকে গড়ে তোলার জন্য সার্বজনীন মানুষ হিসেবে যাতে গড়ে তুলতে পারি সেভাবেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সমাজের সহনশীলতা, নারী-পুরুষের অধিকারের প্রশ্নে সমতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের মূল্যবোধগুলো যাতে হারিয়ে না যায় সেভাবে আমাদের শিক্ষাবিদরা শিক্ষার্থীদের পরিচালিত করবেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, আজকের এই প্রোগ্রামটি শতবর্ষ উদযাপনের অংশ ছিল যা আমরা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পেরেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের শুধু বইয়ের জ্ঞানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং এই বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনার বাইরেও শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বদান এবং সমাজ পরিবর্তনের জন্য তৈরি করে। এখান থেকে কর্মজীবনে তারা আত্মপ্রত্যয়ী হওয়ার অনুপ্রেরণা লাভ করবে।
অধ্যাপক ড. সামসাদ মর্তুজার সঞ্চালনায় চা-চক্রে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এফ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইমেরিটাস অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির এবং সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন বক্তব্য প্রদান করেন।
কেএইচ/এসকেডি