বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, প্রেমিক হাসপাতালে
বৃষ্টি সরকার (২২) নামে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনার পরপরই মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ওই শিক্ষার্থীর প্রেমিক একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী তন্ময়।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে মেসের নিজ কক্ষে বৃষ্টি সরকার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীলসূত্রগুলো এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মৃত শিক্ষার্থী বৃষ্টি সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি সাতক্ষীরায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কর্ণকাঠির এমএম টাওয়ারের ষষ্ঠতলায় একটি মেসে থাকতেন।
জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় রাতে তার মেসের অন্যান্যরা গিয়ে দেখেন বৃষ্টির কক্ষ ভেতর থেকে বন্ধ। তার বন্ধুরা জানালা থেকে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। তারা দরজা ভেঙে সেখান থেকে বৃষ্টিকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, পরিবার থেকে এখনো কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি। থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৃষ্টি সরকার আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. সোহেল রানা বলেন, বৃষ্টি সরকার খুব শান্তশিষ্ট এবং মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অপর এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে সময় দিতে দেখেছি। ওই শিক্ষার্থী আমাদের বিভাগের ছিল না।
ইংরেজী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তানভির কায়সার বলেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী বৃষ্টি সরকারের আত্মহত্যার খবর পাওয়ার পর থেকেই আমার বিভাগের শিক্ষার্থী তন্ময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে গতকাল রাতেই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছে বৃষ্টি সরকারের সঙ্গে তন্ময়ের প্রেমের সর্ম্পক ছিল।
এদিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তন্ময় নামে এক শিক্ষার্থী মানসিক ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, এমন একটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। বিশ্ববিদ্যালয় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর একটি পরিবার। আমরা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখার বিষয়ে নিয়মিত কাউন্সেলিং করে থাকি। তারপরও এমন একটি ঘটনা সত্যি দুঃখজনক।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরকে