যবিপ্রবির শিক্ষার্থীকে নির্যাতন, ২ জন বহিষ্কার
চাঁদা না দেওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ইসমাইল হোসেন নামের এক শিক্ষার্থীকে হলের মধ্যে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আহত ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত ইসমাইল হোসেন যবিপ্রবির পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের চতুর্থ বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি ময়মনসিংহের সদর উপজেলার বলাসপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।
এদিকে এ ঘটনায় শহীদ মসিয়ূর রহমান হল থেকে দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন- ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শোয়েব আলী এবং মো. সালমান এম রহমান। সালমান মসিয়ূর রহমান হলের ৫২৮ নম্বর কক্ষে থাকেন।
সোমবার (৩ এপ্রিল) যবিপ্রবির শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. আশরাফুজ্জামান জাহিদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে মসিয়ূর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেনের অভিযোগ, রোববার দুপুরে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সালমান তাকে মসিয়ূর রহমান হলের ৫২৮ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তার ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। বেল্ট, রড ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে তাকে গুরুতর জখম করা হয়। এ সময় সালমানের সঙ্গে ছিলেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল ও শোয়েব আলীসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন।
আহত ইসমাইল হোসেন বলেন, সালমানসহ অন্যরা আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। টাকা দিতে না পারায় দিনভর তারা আমার ওপর নির্যাতন করে। ইফতারির সময় মেসের বড় ভাই মারুফ হোসেন আমাকে আহত অবস্থায় দেখতে পান। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানালে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শোয়েব ও সালমান বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমরা নিরপরাধ।
এ বিষয়ে জরুরি বিভাগের ডাক্তার বিচিত্র মল্লিক জানান, ইসমাইলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে ইতোমধ্যে হল থেকে সাময়িক বহিষ্কার ও ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তা আমরা গ্রহণ করবো।
এ্যান্টনি দাস অপু/এমজেইউ