মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সমালোচনায় ২৯ বিশিষ্ট নাগরিক
সম্প্রতি আলোচনায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত। ‘মায়ের কান্না’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা তাদের দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি দিতে গেলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তাদের কথা না শুনে এড়িয়ে যাওয়ার ঘটনাকে ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ’ এবং ‘ভিয়েনা কনভেনশনের পরিপন্থি’ উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৯ বিশিষ্ট নাগরিক।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দেওয়া এক বিবৃতিতে বিশিষ্টজনরা বলেন, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সাবেক ছাত্রদল নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের রাজধানীর শাহীনবাগের বাসায় যান। সে সময় তিনি বেরিয়ে আসার পরে ‘মায়ের কান্না’ নামক একটি সংগঠনের সদস্যরা তাদের দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করতে গেলে তিনি তাদের কথা না শুনে বরং তাদের এড়িয়ে যান। পিটার হাসের এ আচরণকে বিশিষ্টজনেরা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ হিসেবে দেখছেন যা কিনা ভিয়েনা কনভেনশনের (১৯৬১) পরিপন্থি। একই সঙ্গে তার এ ধরনের আচরণ কূটনৈতিক দায়িত্বের পর্যায়ে ফেলা যায় কি না, নাকি এর মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সরাসরি জড়িয়ে পড়লেন এবং বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষভুক্ত হলেন কি না এ নিয়ে দেশের জনগণের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ‘সেনাবিদ্রোহ’ দমনের নামে শত শত সেনা সদস্যদের বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৭৭ সালের ৯ অক্টোবর থেকে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে ১১০০ থেকে ১৪০০ জন সেনা সদস্যকে কারাগারের অভ্যন্তরে গণহারে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। সে হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবিতে সে সব শহীদ পরিবারের সদস্যরা সংগঠিত হয়েছেন ‘মায়ের কান্না’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে।
বিবৃতিতে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) পিটার হাস তাদের কাছ থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ করলে কেউ তাকে পক্ষপাতপূর্ণ আচরণের দায়ে অভিযুক্ত করতে পারতেন না উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূতের এ ধরনের আচরণকে শিষ্টাচার বহির্ভূত, পক্ষপাতমূলক, দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত আখ্যা দেওয়া হয়।
বিবৃতিদাতারা হলেন— অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়); অধ্যাপক ড. রফিকুন নবী রনবী (দেশবরেণ্য শিল্পী ও অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়); অধ্যাপক ড. হাশেম খান (দেশবরেণ্য শিল্পী ও অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়); অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাবেক চেয়ারম্যান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন); অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাবেক প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা); অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাবেক উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়); অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাবেক উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়); অধ্যাপক ড. সহিদ আখতার হোসেন (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাবেক প্রো-উপাচার্য); অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামান (সাবেক উপাচার্য, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও বিশ্ববিদ্যালয়); অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়); অধ্যাপক আব্দুল মান্নান (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক চেয়ারম্যান, ইউজিসি); অধ্যাপক ড. এ এ মামুন (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়); অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়); অধ্যাপক ড. আব্দুল বায়েস (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়)।
এইচআর/এসএসএইচ/