ছেলেটা সিগারেটের ধোঁয়াও নিতে পারত না
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) বেলা ১১টায় বুয়েট শহিদ মিনার চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিনও ছিলেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন বলেন, ‘আপনাদের কলম একজন মৃত ব্যক্তির সঠিক বিচার পাওয়ার বিষয় এবং তার চরিত্র তুলে ধরে। আপনারা যখন কলম ধরবেন, তখন হৃদয় দিয়ে ধরবেন, মস্তিষ্ক খাটিয়ে ধরবেন। মৃত ব্যক্তির প্রতি অন্যায় করলে কিন্তু তার কাছ থেকে ক্ষমা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এমন কিছু করবেন না যা তার চরিত্রের ওপর আঘাত করে।’
• আরও পড়ুন : ফারদিন হত্যা মামলা ডিবিতে
তিনি আরও বলেন, যে ছেলেটা কখনও ধূমপানই করে না, সিগারেটের ধোঁয়াটাও নিতে পারে না, সেই ছেলেটার বিরুদ্ধে মাদক নিয়ে লিখতে তো ভালো করে বিচার-বিশ্লেষণ করে নেবেন! আমার দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর ওপর আমি আস্থাহীনতা জানাতে চাই না।
মানববন্ধনে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা লিখিত বিবৃতিতে বলেন, ফারদিন নূর পরশের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা শোকস্তব্ধ এবং ক্ষুব্ধ। ইতোমধ্যে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের সাতদিন অতিবাহিত হয়েছে। প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায় এখন পর্যন্ত প্রকৃত হত্যাকারী চিহ্নিত হয়নি এবং হত্যার কারণ এখনও উদ্ঘাটিত হয়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তের ওপর আমরা আস্থাশীল। আমরা বিশ্বাস করি, তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে ফারদিন হত্যার তদন্ত চালিয়ে যাবেন এবং দ্রুততম সময়ে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবেন।’
• আরও পড়ুন : ফারদিনের বাবার অভিযোগ বুশরার ইন্ধনে হত্যা
তারা আরও বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে গত কয়েকদিন কিছু গণমাধ্যমে ফারদিনকে নিয়ে কিছু আপত্তিকর ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচারিত হয়েছে যা আমাদের হতাশ করেছে। বুয়েট সাংবাদিক সমিতির মাধ্যমে ইতোমধ্যে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং সত্য তুলে ধরেছি। আমরা আশা করব ভবিষ্যতে গণমাধ্যমগুলো সংবাদ প্রকাশে সতর্ক হবে। পাশাপাশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের মাধ্যমে যারা ফারদিন হত্যাকাণ্ডের বিষয় নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করছেন তাদের আমরা ধন্যবাদ জানাই। আমরা প্রত্যাশা করি, ভবিষ্যতেও আপনারা ফারদিন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে আমাদের পাশে থেকে সাহায্য করবেন।’
তারা বলেন, ফারদিন আমাদের সহপাঠী, আমাদের ভাই। তার অকালপ্রয়াণ আমাদের ব্যথিত করেছে, তার পরিবারের অসহায়ত্ব আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে। হত্যাকারীদের শনাক্ত করে দ্রুততম সময়ে গ্রেফতার করা এবং তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি। হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত হত্যাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা, বুয়েট শিক্ষার্থীরা, ফারদিনের পরিবারের পাশে আছি এবং থাকব। আমরা আশা করি ভবিষ্যতে ফারদিনের মতো আর কোনো মেধাবী প্রাণ অকালে ঝরে পড়বে না।’
এইচআর/এনএফ