জাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা : ক্রিকেটের বাইরেও আছে খেলা
করোনা মহামারির কারণে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি ‘ক্রিকেট খেলাকে’ কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকার স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (জাবি)। এর জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছে জাবি ক্যাম্পাস। তবে আপাত দৃষ্টিতে এ সংঘর্ষের নেপথ্য ‘ক্রিকেট খেলা’ হলেও ঢাকা পোস্টের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে আরও কিছু কারণ।
ঢাকা পোস্টের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সঙ্গে লাগোয়া এলাকাগুলো; বিশেষ করে গেরুয়া, ইসলামনগর ও আমবাগানের স্থানীয় ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রভাব বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব, এছাড়া সম্প্রতি যৌন হয়রানির দায়ে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষককে সমর্থন করা শিক্ষকদের একটি গ্রুপ ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রাজনীতিকে ব্যবহার করে নানা সুযোগ খুঁজছেন কিছু শিক্ষার্থী।
করোনাকালেই ঘটনার মূল সূত্রপাত। কেননা, প্রায় বছরখানেক সময় ধরে হলসহ বন্ধ রয়েছে ক্যাম্পাস। এতে সাধারণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীরা গেরুয়া ও ইসলামনগর এলাকায় অস্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এতে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে তাদের সখ্যতাও শুরু হয়। কিন্তু একটা সময় প্রভাব বিস্তারসহ নানা ইস্যুতে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, সংঘর্ষে ক্রিকেট ইস্যু সামনে এলেও এর পেছনে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গেরুয়া ও ইসলামনগর এলাকায় প্রভাব বিস্তার, ক্ষমতা দেখিয়ে স্থানীয় লোকজনকে মারধরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড দেখিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করা।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের সেক্রেটারি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা এক দিনের ঘটনা না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী কিছু হলেই গিয়ে বাজার বন্ধ করে দেয়, লোকজনকে মারধর করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মানে তারা নিজেদের অনেক পাওয়ারফুল (শক্তিশালী) মনে করে, এটাই হলো ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মানেই অনেক কিছু; এটা তো বললেই হবে না।’
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির করা শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করেই তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এর বাইরে তাদের সঙ্গে স্থানীয়দের কোনো বিবাদ নেই। শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র পড়ালেখার উদ্দেশেই গেরুয়া কিংবা ইসলামনগর এলাকায় বসবাস করছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কার্যকরী সদস্য ও স্থানীয়দের হামলায় গুরুতর আহত সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী পিয়াস ইজাদ্দার এলেক্স ঢাকা পোস্ট-কে বলেন, ‘কারণটা আমি সঠিক জানি না, এলাকাবাসী জানে। আমাদের সঙ্গে ওদের যা ঝামেলা খেলা কেন্দ্রিক। কথা কাটাকাটির জের ধরে এলাকার কিছু খারাপ ছেলে স্থানীয় নেতাদের প্রটোকল নিয়ে কাজটা করছে বলে আমি ধারণা করছি।’
‘ওদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে মাঠে। আমরা কয়েক দফা ওদের সঙ্গে মিউচ্যুয়াল করার কথা বলেছি, কিন্তু ওরা এটাতে আসেনি। এরপর এই ঘটনা ঘটাল। দেশি অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ২০০ থেকে ৩০০ লোক এসে আমাদের ওপর হামলা করছে। মাইকে ঘোষণা করল ডাকাত পড়েছে, এরপর এলাকাবাসী হামলে পড়ল সব শিক্ষার্থীদের ওপর।’
পিয়াস ইজাদ্দার এলেক্স, কার্যকরী সদস্য, জাবি ছাত্রলীগ
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আনা চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে জাবির এ শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতা বলেন, ‘তারা এটা বলছে, আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্যই। খুন করা আসামি কখনই বলবে না সে খুন করছে। ওরা ক্যাম্পাস বন্ধ দেখে একটা অ্যাডভানটেজ (সুবিধা) নিল। সবাই পড়াশোনার খাতিরে আসছে, অন্য কোনো কারণে নয়। যারা পড়াশোনা করতে আসছে তারা চাঁদাবাজি করবে এটা তো হাস্যকর। যারা চাঁদাবাজি করে তাদের এলাকায় সেট-আপ থাকে।’
জানা যায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী। সে সময় স্থানীয় কিছু ছাত্রলীগ সমর্থিত নেতার গায়ে হাত তোলেন শিক্ষার্থীরা। যদিও পরবর্তী সময়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এলাকার ছাত্রলীগ নেতারা সমাধানে বসতে রাজি হয়নি। এরই প্রেক্ষাপটে শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় স্থানীয়রা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় মসজিদগুলোতে মাইকিং করে স্থানীয়দের জড়ো করা হয়। এ ঘটনায় অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এর মধ্যে ১১ জন গুরুতর আহত।
এ বিষয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় এক বাসিন্দাকে আটকে চাঁদা দাবি করায় তারা এ হামলা চালিয়েছে। এদিকে, ক্যাম্পাসের বাইরে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের পরদিন নিরাপত্তার দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে একত্রিত হন। সেখান থেকে তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে যান। নিরাপত্তা ইস্যুতে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে হল খুলে দেওয়ার দাবি জানান।
তবে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করার বিষয়ে রাজি হলেও হল খোলা এবং শিক্ষার্থীদের হলে থাকার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভাষ্য ছিল, এটা একান্তই সরকারি সিদ্ধান্ত। সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সরকার যে মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে, সঙ্গে সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগরের হলগুলোও খুলে দেওয়া হবে।
নিরাপত্তার স্বার্থে শিক্ষার্থীদের হল খুলে দেওয়ার দাবি মেনে না নেওয়ার পর হলের তালা ভেঙে ফেলেন শিক্ষার্থীরা এবং গত রাতে হলেই অবস্থান নেন তারা। এখনও তারা হলেই অবস্থান করছেন।
এদিকে, গতকাল সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মূলত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
মামলা এবং শিক্ষার্থীদের হলে থাকার প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ঢাকা পোস্ট-কে বলেন, ‘গতকাল রাতেই আমরা মামলা থানায় পাঠিয়েছি। শব্দগত কিছু কারেকশন (সংশোধন) থাকায় থানা থেকে কপি ফেরত পাঠানো হয়। কারেকশন করে থানায় আবার পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেই, বক্তব্য নেই। কারণ এটার সিদ্ধান্ত নেবে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি আমরা।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সূত্র বলছে, সম্প্রতি যৌন হয়রানির দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সানওয়ার সিরাজকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে প্রশাসন। তারই সমর্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটা অংশ এই সুযোগে ক্যাম্পাস উত্তাল তথা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। মূলত, এর মধ্যে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপে ফেলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া ক্যাম্পাস খোলার বিষয়ে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা না করে শিক্ষার্থীদেরকে ইন্ধন জোগাচ্ছেন এসব শিক্ষকরা।
আমরা মামলা থানায় পাঠিয়েছি। হল খোলার বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেই, বক্তব্য নেই। কারণ এটার সিদ্ধান্ত নেবে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি আমরা।
আ স ম ফিরোজ উল হাসান, প্রক্টর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
অব্যাহতি পাওয়া সানওয়ার সিরাজের পক্ষে ন্যায়বিচারের দাবিতে সমর্থন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি প্রভাবশালী শিক্ষক অধ্যাপক বশির আহমেদ। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘আমি এখন প্রশাসনের কোনো দায়িত্বে নেই। আপাতত গ্রামের বাড়িতে আছি। পরিস্থিতি সম্পর্কে মিডিয়ার (গণমাধ্যম) মাধ্যমে শুনেছি। এর মাঝখানে আমার মন্তব্য করা বেমানান হবে। তবে একজন সাধারণ শিক্ষক হিসেবে বলব, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রথম। তারা যেখানেই থাকুক তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে, এটা নিশ্চিত করা উচিত। সরকার কিন্তু আমাদের এটা নিশ্চিত করার জন্যই এই দায়িত্বটা দিয়েছে। যে যার জায়গা থেকে দায়িত্বটা পালন করলে অরাজকতা তৈরি হয় না।’
সানওয়ার সিরাজকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল হওয়ার কোনো সম্পর্ক আছে কি না- জবাবে সাবেক এই প্রক্টর বলেন, ‘অন্য কোনো ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে না গিয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতির কথাই বিবেচনা করা উচিত। আমাদের দাবি ছিল, উনি যেন ন্যায়বিচার পান। শিক্ষকদের অনেকগুলো দাবির মধ্যে এটা একটা ছিল। যে ঘটনা ঘটেছে শিক্ষার্থীদের এখন আর সেখানে (গেরুয়া ও ইসলামপুর) যাওয়ারও উপায় নেই। এটা শুধুমাত্র সরকারের ঘাড়ের ওপর চাপাইয়া দেওয়ার কিছু নেই, বিশ্ববিদ্যালয় একটা স্বায়ত্তশাসিত। সরকারের দিকে এটা ঠেলে না দিয়ে, প্রশাসনের এটার সমাধান করে দেওয়া উচিত।’
তাহলে কি আপনি হল খুলে দেওয়ার কথা বলছেন- জবাবে জুলকারনাইন বলেন, ‘আমি কিন্তু হল খোলার কথা বলছি না।’
তবে সহকারী অধ্যাপক সানওয়ার সিরাজকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক রাশেদা আক্তারের যোগসাজশ দেখছেন সিরাজের সমর্থিতরা। এসব বিষয়ে রাশেদা আক্তারকে ফোন করা হলে তিনি প্রশ্ন শুনে কিছুই শোনা যাচ্ছে বলে লাইনটি কেটে দেন। পরবর্তী সময়ে তাকে বারবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি কল কেটে দেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যকার চলমান বিবাদ প্রসঙ্গে দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান ঢাকা পোস্ট-কে বলেন, ‘ঘটনার সূত্রপাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি ভাইস চ্যান্সেলর (উপাচার্য), ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতা, প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির সভাপতি, শিক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমি জানতে পেরেছি, কয়েকদিন আগে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র গোলমাল হয়েছে, সেই ইস্যুতে জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা স্থানীয় একটা ছেলেকে ধরে নিয়ে মেরেছে; এতে এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।’
আমি সবাইকে নির্দেশ দিয়েছি, এলাকার জনগণও যেমন আমার সন্তানের মতো একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরাও আমার সন্তানের মতো। আর যেন বাড়াবাড়ি না হয় সেটা।
ডা. এনামুর রহমান, স্থানীয় সংসদ সদস্য
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্থানীয় সংসদ সদস্য (ডা. এনামুর রহমান) তার সংসদীয় এলাকার মানুষকেই সমর্থন করছে- জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এলাকার লোকজনকে সাপোর্ট (সমর্থন) দেওয়ার মতো অবস্থান সৃষ্টি হয়নি। পুলিশ আসছে, ঘটনা আর বাড়তে দেওয়া হয়নি। আমি চেষ্টা করছি, এটা যেন আর বাড়াবাড়ি না হয়। এটার সমাধান হয়ে যাবে।’
এদিকে, হলে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে হলের বাইরে স্থানীয় এলাকাগুলোতে অবস্থান করা মোটেই সম্ভব না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার সাথী বলেন, ‘কোভিডের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হলেও আমাদের অনেক শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন কারণে ঢাকায় থাকতে হচ্ছে। অনেকের বিভিন্ন রকমের পরীক্ষা থাকায় থাকতে হচ্ছে। যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, ওইসব এলাকায় আমাদের থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এখনও বিভিন্ন জায়গায় অনেক শিক্ষার্থী অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন; বাড়িওয়ালা তাদের তালা মেরে রেখেছেন, তাদের বের হতে দিচ্ছে না। তাদের কাছে কোনোপ্রকার খাদ্য ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া আমবাগানসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থীদের বাসা ছেড়ে দিতে বলা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিন্তু বলে দিয়েছে, যারা বাইরে থাকছেন তাদের দায়িত্ব তারা নেবে না। কিন্তু আমাদের তো থাকতেই হবে প্রয়োজনে। আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় আমরা ক্যাম্পাসে উঠেছি। বাইরে কিন্তু এখন আমরা সেফ (নিরাপদ) না, আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থীরা কিন্তু হলে উঠতে চাইতেই পারে।’
এনআই/আলকামা/এফআর/এমএইচএস