আমরা সাংবাদিক-প্রক্টর খাই না, ছাত্রলীগের সেই নেতাদের শোকজ
হল আমাদের। হল আমরা লিজ নিছি। এই রুম যদি তোদের হয়, তাহলে পুরো হল আমাদের। কী করবি তোরা? নিউজ করবি? কর। আমরা সাংবাদিক-প্রক্টর খাই না।
গত ১৬ জুন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আলাওল হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলামের কক্ষে ঢুকে এভাবে হুমকি দেন।
ওই ঘটনার জেরে ৯ জনকে শোকজ করা হলো। যাদের শোকজ করা হয়েছে তারা হলেন- লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের (নিলয়), অর্থনীতি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের রানা আহমেদ, একই সেশনের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ওয়ায়দুল হক লিমন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ২০১৬-১৭ সেশনের আশিষ দাস, দর্শন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের সাজ্জাদুর রহমান, সংস্কৃত বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের তুষার তালুকদার বাপ্পা, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের আহম্মদ উল্লাহ রাব্বি ও একই বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের জাহিদুল ইসলাম এবং সংস্কৃত বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের রুদ্র তালুকদার।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী প্রক্টর মো. শাহরিয়ার বুলবুল তন্ময়।
তিনি বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ৯ ছাত্রকে আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তাদের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তের জবাবের প্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কী হয়েছিল সেই রাতে
চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বরাবর দেওয়া অভিযোগপত্রে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস) বলেছে, গত ১৫ জুন রাত প্রায় দেড়টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মী জোবায়ের নিলয়সহ ৫-৭ জন শিক্ষার্থী হৈ-হুল্লোড় করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে। পরদিন ১৬ জুন রাত ১২টার দিকে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলামের কক্ষে ঢুকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আগের ঘটনার জেরে গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় অকথ্য ভাষায় সাংবাদিকদের হেনস্থা করে তারা সেখান থেকে চলে যায়।
এরপর আরও দুই দফায় এসে তারা সাংবাদিকদের হুমকি দিতে থাকে। তাদের বক্তব্য ছিল এরুপ- ‘এই হল আমাদের। হল আমরা লিজ নিছি। যখন ইচ্ছা তোদেরকে হল থেকে বের করে দেব। এই রুম যদি তোদের হয় পুরা হল আমাদের। কী করবি তোরা? নিউজ করবি? কর। আমরা সাংবাদিক খাই না, প্রক্টরও খাই না।’
এ ছাড়া ছাত্রলীগের এসব অনুসারীরা বারবার কক্ষে ঢুকে সাংবাদিকদের মারার জন্য উদ্যত হয় এবং গায়ের ওপর চড়াও হয়। তারা বেশ কয়েকবার রুমের বাতি বন্ধ করে দিয়ে রুম ভাঙচুরের চেষ্টাও করে।
হুমকিদাতারা শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক গ্রুপ বিজয়ের নেতা মোহাম্মদ ইলিয়াসের অনুসারী।
রুমান হাফিজ/এনএফ