ছাত্রদলের ফুল-কলমে ছাত্রলীগের বাধা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও কলম উপহার দিতে আসলে ছাত্রদলকে বাধা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১০ জুন) পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে অবশ্য পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থীদের হাতে ফুল এবং কলম তুলে দিতে পারে ছাত্রদল।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ফুল দিতে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে কলা ভবন গেটের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। এর পরপরই অপরাজেয় বাংলায় অবস্থান করা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে ছাত্রদলকে সেখানে দাঁড়াতে নিষেধ করে দেয়। তাদের মধ্যে কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি হয়। এরপর সহকারী প্রক্টরদের হস্তক্ষেপে ছাত্রদল এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দুই পাশে সরিয়ে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা যাতে গেট দিয়ে বের হতে না পারে সেজন্য তা লাগিয়ে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে যদিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা খুলে দেওয়া হয়।
আরও জানা যায়, পরীক্ষা শেষ হলে পরীক্ষার্থীদের হাতে ফুল এবং কলম তুলে দেয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এরপর তারা ফুলার রোড দিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে যান। এরপর আর কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
ঢাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক আখতার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ফুল দিতে কলাভবন গেটে আসলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আমাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। তারা বলে আমরা এখানে বিশৃঙ্খলা করছি, অভিভাবকদের সমস্যা হচ্ছে। আমরা স্থান ত্যাগ না করলে আমাদের মারধরের হুমকি দেয়। প্রক্টরিয়াল টিম এবং পুলিশ তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। আমরা তাদের বলি যে ছাত্রদল সুশৃঙ্খল দল কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। পরে আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে ফুল এবং কলম দিয়ে তবেই সেখান থেকে চলে গিয়েছি।
ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমানউল্লাহ আমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আচরণে আমরা মর্মাহত হয়েছি। ছাত্রদল এবং ছাত্রলীগের সবাই ছাত্র হলেও তারা ছাত্রদলের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করেছে। তাদের সামনেই আমাদের হুমকি দিয়েছে এবং প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়েছে। তারা উল্টো আমাদেরই চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আমরা এমটি প্রত্যাশা করি না।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার কল করা হলেও রিসিভ করেননি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান শান্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কোন সংগঠন কেমন আচরণ করবে এটা তাদের বিষয়। কে কোথায় দাঁড়িয়েছে, ফুল দিচ্ছে এটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। শিক্ষার্থীরা ছাড়া কারো বিষয়ে আমাদের কনসার্ন নেই। আমরা তাদেরকে আমন্ত্রণ জানায়নি।
ক্যাম্পাসের পরিবেশ ভালো দাবি করে অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, আমি অনেক পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। বরং সেবার নামে কেউ অসেবা দিলে সেটাকে অভিভাবকরা ভালো চোখে দেখছেন না।
এইচআর/আইএসএইচ