শাবিপ্রবি সংলগ্ন এলাকায় বন্যা, বিপাকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
সিলেট ও ভারতের মেঘালয় রাজ্যে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢলে সিলেটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়ছেই। এরই মধ্যে নদী উপচে সিলেট শহরসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। অনেক জায়গায় বাসা বাড়িতেও পানি ঢুকে পড়েছে।
বন্যার পানি প্রবেশ করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও আশপাশের এলাকায়। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মকর্তারা বিপাকে পড়েছেন।
পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকা আখালিয়া, তপোবন আবাসিক, সুরমা আবাসিক এলাকা এবং নেহারীপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তারা মেসে বা ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। নগরীর এসব এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় তারা বেশি সমস্যায় পড়েছেন।
ওই সব এলাকায় বিভিন্ন ভবনের নিচতলায় পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জিনিসপত্র নিয়ে ঝামেলা পোহাচ্ছেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা থাকায়, ঠিকমতো পড়ার সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
সুরমা আবাসিক এলাকায় মেসে অবস্থানরত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সীমান্ত গোস্বামী জয় বলেন, আমাদের মেস এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। রুমের জিনিসপত্র নিয়ে বেশ ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। মেসের সব জায়গায় পানি ঢুকে যাওয়াতে রান্না করাও সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া এলাকায় বিদ্যুৎও নেই।
তিনি বলেন, আমাদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। এমতাবস্থায় পড়াশোনা করার জন্য নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকায় বন্ধুর মেসে অবস্থান করছি।
এ ছাড়া ওই এলাকায় বসবাসরত ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী সাদিক আল মুকসিত বলেন, রাস্তায় কোমড় পানি। ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে আসতেও ওই পানি পার হয়ে ভিজে ভিজে আসতে হচ্ছে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে বাইরে আসলেও এ ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে আমাদের।
নগরীতে বন্যায় উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার তারিখ পেছানো হয়েছে বলেও জানা যায়। শিক্ষার্থীদের সমস্যার দিকটি বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন বিভাগের প্রধানবৃন্দ।
গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মাহবুবুর রশিদ বলেন, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। বন্যার কারণে ৩য় বর্ষের একটি পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। এ ছাড়া বন্যার কারণে তিনিও দুর্ভোগে আছেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমিও তপোবন আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকি। রাস্তায় কোমর পর্যন্ত পানি। অফিসে আসতে হচ্ছে প্যান্ট ভিজিয়ে। মূল ফটকে এসে কাপড় বদলানো লাগছে। এ নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ ছাড়া ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগের পরীক্ষাও পেছানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগটির প্রধান অধ্যাপক জি এম রবিউল ইসলাম।
শিক্ষার্থীদের এমন দুর্ভোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্ঠা ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীনের কাছে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় আছি। আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। ছাত্রদের কাছ থেকে আমরা তথ্য নিচ্ছি।
জুবায়েদুল হক রবিন/আরআই