টিএসসির নতুন নকশায় শিক্ষার্থীদের সন্তোষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পুরনো স্থাপনাগুলো অক্ষত রেখে নতুন নকশা প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও এই নকশাটি এখনো চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি। টিএসসির বর্তমান স্ট্রাকচার ভেঙ্গে সম্পূর্ণ নতুন রূপে তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের দাবির প্রেক্ষিতে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে প্রশাসন। পুরনো স্থাপনাগুলো অক্ষত রেখে প্রকাশ করা নতুন নকশায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ঐতিহ্য বজায় রেখে আধুনিক টিএসসি নির্মাণকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন তারা।
নতুন নকশা অনু্যায়ী, পুরনো স্থাপনাগুলো অক্ষত থাকবে। পরিত্যক্ত সুইমিং পুলের স্থানে নতুন স্থাপনা তৈরি করা হবে। সেখানেই নান্দনিক আর্কিটেকচারাল ভিউকে প্রাধান্য দিয়ে ১০তলা বিল্ডিং করা হবে। আর অডিটোরিয়াম কিছুটা বড় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। নতুন নকশায় টিএসসির মাঠ আগের মতোই রাখা হয়েছে।
টিএসসির নতুন নকশার বিষয়ে জানতে চাইলে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ হিল বাকি বলেন, টিএসসির নতুন নকশা মোটামুটি সবার কাছেই ভালো লেগেছে। এটির বিশেষ দিক হলো, টিএসসির পুরোনো স্থাপনাগুলো আগের মতোই থাকবে, সেগুলো ভাঙ্গতে হবে না। নতুন নকশার সবচেয়ে ভালো লাগার দিকটা হলো, ১০তলা যে ভবন করা হবে সেটার দেয়ালে পরিবেশসম্মত ভার্টিকাল গার্ডেন থাকবে। আশা করি পুরো কর্মযজ্ঞ সঠিকভাবেই সম্পন্ন হবে। ভবিষ্যতে আমরা নান্দনিক একটা টিএসসি দেখতে পাব।
অনার্স শেষবর্ষের শিক্ষার্থী নিগার সুলতানা সুপ্তি ঢাকাপোস্টকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি ও যুগের চাহিদা অনুযায়ী টিএসসিকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হলো পুরাতন স্থাপনাকে অক্ষুণ্ন রেখে নতুন ভবন নির্মিত হবে। এছাড়া ১০তলা ভবনের গা ঘেঁসে সবুজায়নের প্রভাব থাকবে।
টিএসসির এই সংস্করণকে একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আনারুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি কেবল ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রই নয় বরং এটিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও বলা যায়। পুরাতন টিএসসি ভবন ভেঙে নতুন ভবনের যে নকশা করা হয়েছে সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন হলে টিএসসি হয়ে উঠবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক সকল সংগঠনের জন্য একটি মুক্ত চর্চাকেন্দ্র। টিএসসির বর্তমান ভবনটিতে জায়গার সংকুলান হয় না বলে অনেক সংগঠন স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে পারে না। আমি মনে করি, মান উন্নয়নের লক্ষ্যে টিএসসির এই সংস্করণ একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত।
তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী হলেও টিএসসিকে ‘মিলনমেলার রাজধানী’ বললে ভুল হবে না। ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) নতুন খসড়া নকশায় বিদ্যমান কাঠামো অক্ষুণ্ন রেখে শুধু নতুন একটি ভবন নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। নকশাটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও পছন্দ হয়েছে। সময়ের সাথে তাল মেলাতে টিএসসির আধুনিকায়ন জরুরি। হালের সকল সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ টিএসসি সবারই কাম্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম সিকদার জানিয়েছেন, ঐতিহ্য অক্ষত রেখে কিভাবে সৌন্দর্য্য আরও বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আমরা গণপূর্ত বিভাগের সাথে আলোচনা করেছি।
জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি গণপূর্ত ভবনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে তারা যে নকশা দিয়েছিল সেটিতে আমরা কিছু সংস্কার করতে বলেছিলাম। নতুন নকশায় যেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতিফলন থাকে সেদিকে নজর দিতে বলেছিলাম। আশা করছি মার্চের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে টিএসসির নতুন নকশার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হবে। এরপর টিএসসির সংস্কার শুরু হবে।
এসএসএইচ/এইচকে