ইউএস-বাংলার ফ্লাইটের খবরে মালেতে আনন্দ
সমুদ্রের রানী মালদ্বীপ। দেশটির রাজধানী মালের এক রেস্টুরেন্ট। সেখানে বাঙালি খাবারের স্বাদ নিতে নিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আনন্দঘন সময় কাটাচ্ছেন। তাদের আলোচনার বিষয় দেশে যাতায়াতের একটি সুখবর।
মামুনুর রশীদ নামের এক প্রবাসী ঢাকা পোস্ট প্রতিবেদককে বললেন, আমরা যারা রুটিরুজির জন্য ভিনদেশে পড়ে থাকি, আমাদের মন পড়ে থাকে দেশেই। তাই যখনই সুযোগ পাই আর সাধ্যে কুলায় তখনই মা-মাটির স্পর্শ নিতে দেশে ছুটে যেতে চাই। আমাদের এই ইচ্ছার পালে আনন্দের হাওয়া দিয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। দেশের এই এয়ারলাইন্সটি ১৯ নভেম্বর থেকে ঢাকা-মালে রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালু করছে।
‘এখন চাইলেই দেশে উড়ে যাওয়া যাবে দেশীয় প্লেনেই। ঘাম ঝরিয়ে আয় করা টাকা বিদেশি এয়ারলাইন্সকে দিতে হবে না। তাছাড়া ইউএস-বাংলার টিকিটের দামও যৌক্তিক। তাই এই রেস্টুরেন্টে কয়েকদিন ধরেই এই খবর আলোচনার শীর্ষে।’
এসব কথা যিনি বললেন সেই মামুনুর রশীদ এক দশক ধরে মালেতে রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কথা হচ্ছিল যে ক্যাফেতে তার নাম ‘ভাইলেট ক্যাফে’। মালেতে বাঙালি খাবারের স্বাদ পাওয়া যায় এমন রেস্টুরেন্ট হাতেগোনা। তাই এই ক্যাফেতে বাঙালি খাবারের লোভে ভিড় জমান বাংলাদেশিরা। মামুনুর রশীদ বলেন, ইউএস-বাংলার ঢাকা-মালের ফ্লাইটের খবর এখানে মুখে মুখে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-মালে রুটে প্রতি মঙ্গল, শুক্র ও রোববার ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট চলবে। প্রাথমিকভাবে সব প্রকার ট্যাক্স ও সারচার্জসহ ওয়ানওয়ের ন্যূনতম ভাড়া ২৯ হাজার ৫০৮ টাকা এবং রিটার্ন ভাড়া ৪৫ হাজার ৫৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মালে প্রবাসীরা বলছেন, টিকিটের দাম যৌক্তিকভাবেই নির্ধারণ করা হয়েছে।
মালের একটি সুপারশপে কর্মরত নোয়াখালীর রাজ্জাক আহমেদ দেশে আসা-যাওয়ার জন্য ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সকে বেছে নেবেন বলে জানালেন। তিনি বলেন, নিজের দেশের এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে দেশে ফেরার তৃপ্তিই আলাদা। পরিশ্রমের টাকাটা দেশেই থাকছে বলে ভালো লাগবে।
মালদ্বীপে এক লাখের বেশি বাংলাদেশি কর্মরত। তারা বছরে বিভিন্ন সময় দেশে যাতায়াত করেন। এছাড়া মালদ্বীপ ভ্রমণে যান অনেক বাংলাদেশি। ফলে ঢাকা-মালে-ঢাকা রুটে ইউএস-বাংলার ফ্লাইট স্বল্প সময়েই জনপ্রিয় হবে বলে জানালেন প্রবাসীরা।
রাজ্জাক আহমেদ বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রতিনিয়ত দেশে যাতায়াত করেন। ফ্লাইট শুরুর সাথে সাথেই অনেক যাত্রী পাবে ইউএস-বাংলা।
ইউএস-বাংলার এই ফ্লাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশি প্রবাসীদের ব্যবসার প্রসারের সুযোগ দেখছেন আরেক প্রবাসী রিন্টু। তিনি বলেন, আবাসন, রেস্টুরেন্ট, ডলার বিনিময়, ট্রান্সপোর্ট ব্যবসার সঙ্গে এখানে যেসব বাংলাদেশি জড়িত তারা উপকৃত হবেন ইউএস-বাংলার ফ্লাইটে। এছাড়া দেশি এয়ারলাইন্স চালু হলে এখানে বাংলাদেশিরা ব্যবসা প্রসারের কথা ভাবতে শুরু করবেন।
মালেস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রথম সচিব সোহেল পারভেজ ইউএস-বাংলার ফ্লাইট পরিচালনাকে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, এই ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে দুই দেশের আন্তঃসম্পর্ক আরো বেশি গতিশীল ও জোরদার হবে।
এজেড/এইচকে