বাংলাদেশের আকাশ পরিবহনে স্বপ্নসারথি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স
স্বপ্ন দেখি, স্বপ্ন দেখায় আর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়ে এগিয়ে যাই। এই সত্য কথনটাকে সাথে করে এগিয়ে যাওয়ার গল্প বুনে অগ্রসর হচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
আকাশ পরিবহনে নানাবিধ স্বপ্নকে সাথে নিয়ে আর আকাশ পথের যাত্রীদের নানাবিধ স্বপ্ন পূরণে পাশে থাকছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
একসময় বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন ছিল, দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে কাজ শেষ করে দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার। সেই অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে ইউএস-বাংলার হাত ধরে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর যশোর থেকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং সৈয়দপুর থেকে চট্টগ্রাম রুটে ফ্লাইট শুরু করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। অর্থ ও সময়কে সাশ্রয় করার জন্য আর বাংলার মানুষকে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যেই ক্রস কান্ট্রি ফ্লাইট ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিতে সময়ের অপেক্ষায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
বাংলাদেশের ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা প্রতিবেশী দেশগুলো ভ্রমণে সবসময়ই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম পর্যটন শহর মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে ভ্রমণ করার প্রগাঢ় ইচ্ছা থাকার পরও বাংলাদেশি কোনো এয়ারলাইন্স সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা না করায় এতদিন পর্যন্ত ভ্রমণের ইচ্ছেটাকে অনেকটা সুপ্ত অবস্থায় রেখেছিলেন দেশীয় পর্যটকরা। সেই ইচ্ছেটাকে জাগ্রত করতে এগিয়ে এসেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
আগামী নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ঢাকা-মালে রুটে সপ্তাহে চারদিন সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। সেই সঙ্গে মালদ্বীপের বিভিন্ন শহরে অবস্থানকারী লক্ষাধিক বাংলাদেশির নিজ দেশের উড়োজাহাজে ভ্রমণের স্বপ্নকেও বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা।
স্বাধীনতার পর প্রায় ৪৭ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশের আকাশ পরিবহনে বিচরণকারী বিভিন্ন বিমান সংস্থা চীনের কোনো প্রদেশে সরাসরি বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারেনি। বিগত দিনে চীনে ফ্লাইট পরিচালনায় সব এয়ারলাইন্স স্বপ্ন দেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল থেকে ঢাকা-গুয়াংজু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশের যাত্রীদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী, ছাত্র-ছাত্রী, পর্যটক ও চিকিৎসাসেবা নিতে যাওয়া যাত্রীরা নিজ দেশের এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলায় ভ্রমণের মাধ্যমে তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছে।
প্রতিবছর লাখো বাংলাদেশি রোগী চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করে থাকেন। এর বড় একটা অংশ চেন্নাইয়ের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভ্রমণ করে। বিগত দিনে কখনোই কোনো বাংলাদেশি এয়ারলাইন্স চিকিৎসা সেবা নিতে যাওয়া যাত্রীদের ভ্রমণকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করার জন্য ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম থেকে চেন্নাইয়ে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনাও করেনি, বাস্তবতাতো ভিন্ন বিষয়।
বাংলাদেশ থেকে কলকাতা হয়ে অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় করে চেন্নাইয়ে ভ্রমণ করতে হতো, ফলে বাংলাদেশি চিকিৎসা সেবা গ্রহণকারীদের ভোগান্তির শিকার হতে হতো। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি চেন্নাইয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করে চিকিৎসাসেবার জন্য ভ্রমণকারীদের নানাবিধ কষ্ট ও দুঃস্বপ্নকে দূরে ঠেলেছে; যা এখন একটি আকর্ষণীয় রুট হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশি যাত্রীদের কাছে।
আকাশপথের ভ্রমণ মানেই ফ্লাইট সিডিউল বজায় না থাকা। দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে লাগেজ প্রাপ্তিতে বিলম্ব। আকাশ পথের যাত্রীদের জন্য এগুলো নিত্যনৈমতিক বিষয় হয়ে যাচ্ছিল। সেখান থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রায় ৯০% এর বেশি অন-টাইম ফ্লাইট পরিচালনার রেকর্ড বজায় রেখে সাত বছর শেষ করে অষ্টম বছরে পদার্পণ করেছে।
আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ফ্লাইট অবতরণ করার পর ১৫ মিনিটের মধ্যেই লাগেজ বেল্টে প্রথম লাগেজ দেওয়ার ব্যবস্থা করছে ইউএস-বাংলা। যার ধারাবাহিকতা অন্য এয়ারলাইন্সের যাত্রীরাও ভোগ করছে। যাত্রীদের লাগেজের বিষয়ে ইউএস-বাংলার বক্তব্য হচ্ছে ‘লাগেজের জন্য আপনি অপেক্ষা করবেন না, লাগেজ আপনার জন্য অপেক্ষা করবে।’
বাংলাদেশের যাত্রীদের একসময় স্বপ্ন চিল অভ্যন্তরীণ রুটে ব্র্যান্ডনিউ এয়ারক্রাফটে ভ্রমণের। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ রুটে ৭টি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর ৭২-৬০০ এয়াররক্রাফট দিয়ে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। যাত্রীদের স্বপ্ন পূরণে সারথী হয়ে আছে ইউএস-বাংলা।
মো. কামরুল ইসলাম ।। মহাব্যবস্থাপক- জনসংযোগ, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স