বিমান ল্যান্ডিং অতঃপর যাত্রীদের হাততালি
অন্যান্য যাত্রার মতো বিমানযাত্রা আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হয়। ২০১০ সালে আমি প্রথম বিমানে উঠি, সেটি ছিল থাই এয়ারওয়েজ। যাত্রাটি আমার কাছে অন্যসব যাত্রার মতোই মনে হয়েছে, যেমন নৌ বা স্থলপথের যাত্রা।
বিমানসংক্রান্ত নানা যাত্রার স্মৃতি আছে, তবে ইচ্ছা ছিল করোনাকালে কোরিয়ার ইনছন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে আসা নিয়ে লিখব, কিন্তু লেখা হয়নি। কোনো একদিন লিখে ফেলব। কাজের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় বিমানযাত্রা বেশ নিয়মিতই ছিল। এখন পড়াশোনার সুবাদে জার্মানিতে। এতদিন দেখেছি ভিন্ন ভিন্ন চিত্র।
বিমান রানওয়ে থেকে আকাশ উড়লেই আমি বিমানে ঘুম দিই। গেল কয় মাস আগে জার্মানির হামবুর্গ থেকে ইস্তাম্বুল, ইস্তাম্বুল থেকে বাংলাদেশে যায় টার্কিশ এয়ারলাইন্সে। এবারও ব্যত্যয় না ঘটিয়ে টার্কিশ এয়ারলাইন্সে আসি তবে যাত্রা জার্মানির ব্রেমেনে, যেখানে বর্তমানে আমার বসবাস। তবে এবারে দেখলাম ভিন্ন চিত্র।
গত ২৬ আগস্ট যখন টার্কিশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ১৩৩৩ বিমানটি ব্রেমেন রানওয়েতে সাবধানে ল্যান্ডিং করল, বিমানের ভেতরের যাত্রীরা হাততালি দিয়ে উঠল। প্রতিটি কাজে ধন্যবাদ দিলে মানুষ উৎসাহিত হয়। হৃদয়ে আনন্দ অনুভব করে।
এখন আপনি আমি বলতে পারেন, শিক্ষকের কাজ পড়ানো, সাংবাদিকের কাজ রিপোর্ট করা, ড্রাইভারের কাছ গাড়ি চালিয়ে গন্তব্য পৌঁছে দেওয়া। যার যা দায়িত্ব সে পালন করেছে, আপনি বলতে পারেন, বৈমানিক মাসে মাইনে পান, সে তার দায়িত্ব পালন করেছে, বিমান ভালোভাবে ল্যান্ড করানো তার নৈতিক দায়িত্ব। আসলে শিক্ষক, সাংবাদিক বা বৈমানিক হোক, কারো ধন্যবাদের জন্য বা হাততালির জন্য তারা কাজ করেন না। কিন্তু কারো কাজে কেউ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে, আপনাআপনি মানুষ খুশি হয়। এতে যেকোনো পেশার মানুষ নিজ কাজে আনন্দ খুঁজে পায়। যেমনটি ক্যাপ্টেন নওশাদ তার ফার্স্ট অফিসারের ভূমিকায় ২৭ আগস্ট জীবন রক্ষা পেয়েছিল ওমান থেকে ঢাকার উদ্দেশে আসা ১২৪ যাত্রী।
২০১৬ সালে আরেকটি দুর্ঘটনার হাত থেকে ১৪৯ যাত্রী এবং সাত ক্রু’র জীবন প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন নওশাদ। আসলেই বিমান সুন্দরভাবে ল্যান্ডিং হলে যাত্রীরা খুশি হয়, ব্রেমেন এয়ারপোর্টে বিমান ল্যান্ডিংয়ের সাথে সাথে, যাত্রীরা হাততালি দিলে আমিও হাততালি দিই। ছোট বড় প্রত্যেকটা কাজে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে অনেক সুন্দর আবহ তৈরি হয়।
ওমর ফারুক হিমেল ।। সাংবাদিক