স্বাস্থ্যবিধি মেনে আকাশপথ খোলা রাখার মত
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সোমবার (২৮ জুন) থেকে বুধবার পর্যন্ত সীমিত পরিসরে লকডাউন কার্যকর করবে সরকার। আর বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে ৭ দিন সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। লকডাউনে সরকার দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করার কথা ভাবছে। ইতোমধ্যে আন্তঃজেলা বাস এবং আন্তঃনগর ট্রেন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সর্বাত্মক লকডাউনে অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট বন্ধের কথাও ভাবছে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
তবে সম্ভাব্য লোকসান এড়াতে এবং এয়ারলাইন্স ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালাতে চায় এয়ারলাইন্সগুলো। বিশেষজ্ঞরা বলছে, এয়ারলাইন্সগুলো এ পর্যন্ত সরকারের সব কথা রেখেছে, যাত্রীদের স্বাস্থ্য নিয়ে আপস করেনি। তাই তাদের ফ্লাইট পরিচালনা চলমান রাখতে দেওয়া উচিত।
বিশিষ্ট এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহিদুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইমার্জেন্সি বা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাজে অনেক সময় যোগাযোগের প্রয়োজন হতে পারে। সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দিলে এগুলো থমকে পড়বে। আমার মতে যোগাযোগের একটা পথ খোলা রাখা উচিৎ, আকাশপথ খোলা রাখা উচিৎ।
তিনি আরও বলেন, আকাশপথে যাত্রীদের চলাচল অনেক নিয়মকানুনের মধ্যে হয়। অনেক স্তর পাড় হয়ে প্লেনে ওঠে যাত্রীরা। তাছাড়া আকাশপথে চলাচলের কারণে কোনো যাত্রীর করোনা হয়েছে বলে আমরা কখনও শুনিনি। সেক্ষেত্রে আকাশপথ চালু রাখা যেতেই পারে।
এই এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি এত বাড়ার পরেও বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো বাংলাদেশ থেকে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। তারা ফ্লাইট বন্ধ করেনি। যাত্রী নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হলে তারা যাত্রী নিত না। তারা যেহেতু ফ্লাইট চালাচ্ছে তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চলতেই পারে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিগত দিনে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও সরকার যখন ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিয়েছিল তখন এয়ারলাইন্সগুলো স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং সিভিল এভিয়েশনের মোট ৩৫টা নির্দেশনা মেনে ফ্লাইট পরিচালনা করে। এয়ারলাইন্স থেকে করোনা ছড়িয়েছে গত ১ বছরে এমন কোনো নজির নেই। তাই এভিয়েশন সেক্টরের স্বার্থে সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা ফ্লাইট পরিচালনা করতে চাই।
এদিকে আগামী বৃহস্পতিবারের লকডাউন নিয়ে তথ্য অধিদফতর থেকে বলা হয়েছে, লকডাউনে জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী যান ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে শুধু যানবাহন চলাচল করতে পারবে। জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না। গণমাধ্যম লকডাউনের আওতা বহির্ভূত থাকবে।
এআর/এইচকে