ই-পাসপোর্ট থাকলেই ব্যবহার করা যাবে ই-গেট
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মঙ্গলবার (৭ জুন) থেকে চালু হয়েছে ই-গেট (ইলেকট্রনিক গেট)। এটি একটি স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থা। বাংলাদেশের নাগরিক যাদের ই-পাসপোর্ট রয়েছে তাদের সবাই ই-গেট ব্যবহার করে নিজের ইমিগ্রেশন নিজেই করতে পারবেন।
এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক পরিপত্রে কূটনীতিক, সিআইপিসহ বিশেষ শ্রেণির ব্যক্তিরা প্রাথমিকভাবে ই-গেট ব্যবহার করতে পারবে বলে জানানো হয়েছিল। মঙ্গলবার ই-গেট উদ্বোধনের পর থেকেই অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন ছিল যে তারা আদৌ ই-গেট ব্যবহার করতে পারবেন কি না। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ই-পাসপোর্ট ব্যবহারকারী প্রত্যেকেই ই-গেইট ব্যবহার করতে পারবেন।
বুধবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘যাদের কাছে ই-পাসপোর্ট রয়েছে কেবল তারাই এটি ব্যবহার করতে পারবেন। তবে বিশেষ কোন শ্রেণির জন্য নয় বরং ই-পাসপোর্টধারী প্রত্যেকের জন্য ই-গেট উন্মুক্ত। যাত্রীরা নিজেই ১৮ সেকেন্ডের মধ্যে নিজের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে বোর্ডিং ব্রিজের দিকে যাবেন।’
বাংলাদেশে ২০২০ সালে ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ই-গেট স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহির্গমন এলাকায় ১২টি এবং আগমনী এলাকায় ৩টি ই-গেট স্থাপন করা হয়। তবে নানা কারণে এগুলো এতদিন সচল করা হয়নি।
ই-গেটগুলো স্থাপনের পরপরই ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ (বহির্গমন শাখা-১) ই-গেট নিয়ে একটি পরিপত্র জারি করে। এতে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশি ই-পাসপোর্টধারী কূটনৈতিক, অফিসিয়াল ই-পাসপোর্টধারী সরকারি কর্মকর্তা, বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা (সিআইপি), সেরা করদাতা কার্ডপ্রাপ্ত ই-পাসপোর্টধারী ব্যক্তিরা, ই-পাসপোর্টধারী পাইলট ও ক্রুরাই কেবল ই-গেট ব্যবহার করতে পারবেন। তবে উদ্বোধনের সময় সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে পরিপত্রটির কার্যকারিতা নেই। তাই প্রত্যেকে ই-পাসপোর্টধারী ব্যক্তি ই-গেট ব্যবহার করতে পারবেন।
যেভাবে কাজ করে ই-গেট
ই-গেটের সামনে গিয়ে প্রথমেই ই-পাসপোর্টের ছবি সম্বলিত স্মার্ট কার্ডের পৃষ্ঠাটি স্ক্যান করতে হবে। সেখানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে আপনার সব তথ্য যাচাই করা হবে। সব তথ্য সঠিক পেলে ই-গেট খুলে যাবে। এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসিয়াল রিকগনিশনের মাধ্যমে পাসপোর্টের ছবির সঙ্গে আপনার মুখমণ্ডল (ফেস) মেলানো হবে। যদি মিলে যায় তাহলে দ্বিতীয় গেট খুলে যাবে। এভাবেই আপনার ইমিগ্রেশন শেষ হবে।
কোন কারণে ই-পাসপোর্টের ছবির সাথে আপনার বর্তমান মুখমণ্ডলের (ফেস) চেহারা না মিললে ই-গেট ব্যবহার করা যাবে না।
তবে ই-গেট ব্যবহারের আগে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাত্রীর ভিসা, টিকিট, লাগেজ, এবং পাসপোর্ট চেকিং সম্পন্ন করতে হবে। যাত্রীর ফ্লাইটের তথ্য, শেষ গন্তব্যস্থান, যাত্রা শুরুর স্থান, ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও ভিসার তথ্য অবশ্যই ইমিগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ডাটাবেজে সংরক্ষিত তথ্যের সঙ্গে ই-গেট সিস্টেমে সংরক্ষিত তথ্য যাচাই করতে হবে।
বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর এর তত্ত্বাবধানে ই-গেটের পুরো প্রকল্পের প্রযুক্তিগত বাস্তবায়ন করেছে একটি জার্মান প্রতিষ্ঠান।
এআর/এসকেডি