যদিও করোনা মহামারীর কারণে এখন কোথাও ঘুরতে যাওয়ার চিন্তা করা বৃথা, কিন্তু এই বৈশ্বিক লকডাউন তো সবসময় থাকবে না। বরং মানুষকে ঘর থেকে বের হয়ে আসতে হবে একদিন। খুব শিগগিরই পর্যটকদের পদধ্বনি শোনা যাবে বিশ্বের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দর্শনীয় স্থানগুলোতে। 

আজ আপনাকে জানাবো বিশ্বের সেরা ১৫ দর্শনীয় স্থানের কথা- 

১. ফোর্ডল্যান্ডিয়া, ব্রাজিল 

ব্রাজিল কয়েকটি কারণে মানুষের কাছে পরিচিত। এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাজিলের ফুটবল তারকা নেইমারসহ আরও কয়েকজনের তুঙ্গে ওঠা খ্যাতির কারণে ব্রাজিল দেশটি মানুষের কাছে পরিচিত। এছাড়া ব্রাজিলেও কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান। কিন্তু পর্যটকদের অধিকাংশই জানেন না যে অ্যামাজন জঙ্গলেই ফোর্ডলান্ডিয়া নামে একটি শহর রয়েছে। যা ১৯২৮ সালে হেনরি ফর্ড নামে এক ব্যক্তি খুঁজে পান। 

২. আয়ারল্যান্ড 

আয়ার‌ল্যান্ডের মতো দ্বিতীয় কোনো জনপ্রিয় জায়গা আছে বলে মনে হয় না। কেননা আয়ারল্যান্ডে গোটা ইউরোপ মহাদেশের মধ্যে চতুর্থ বৃহত্তম স্টেডিয়াম রয়েছে। সেই স্টেডিয়াম দেখার জন্য প্রতিদিন শয়ে শয়ে লোক এসে ভীড় করে। 

৩. মেক্সিকো 

উত্তর আমেরিকায় অবস্থিত মেক্সিকো মানুষের কাছে তাদের খাদ্যাভ্যাসের জন্য পরিচিত। মেক্সিকোর মানুষ ৩ শতাধিক ভাষায় কথা বলে থাকে। আপনি যদি কখনো কোনো কারণে মেক্সিকোর জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় এমন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেয়ে থাকেন, তবে জেনে রাখুন আপনাকে জাতীয় সঙ্গীতের পুরোটুকুই গাইতে হবে। কারণ দেশটির সরকার তাদের জাতীয় সঙ্গীত অশুদ্ধভাবে গাইলে গায়ককে জরিমানা করে থাকে। 

৪. বাওবাব বার, দক্ষিণ আফ্রিকা 

আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণাংশে অবস্থিত দক্ষিণ আফ্রিকা মানুষের কাছে ব্যাপক আকারে পরিচিত তাদের বৈচিত্র্যপূর্ণ বন্যজীবন, মনোমুগ্ধকর সমুদ্রসৈকত এবং ব্যতিক্রমধর্মী সংস্কৃতির কারণে। সাইমনের শহরের পাশে অবস্থিত বোল্ডারের সমুদ্রসৈকত এমন একটি জায়গা যা দর্শনার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় জায়গা। 

৫. ইতালি 

বিশ্বে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ইতালির অবস্থান পঞ্চম এবং প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থী দেশটির সিস্টিনে চ্যাপেলে ভ্রমণ করে থাকলেও মজার বিষয় হলো এই জায়গার সঙ্গে খুব কম লোকই পরিচিত। 

৬. আইসল্যান্ড 

পৃথিবীর মধ্যে নিরাপত্তার দিক দিয়ে সবচেয়ে সুখী দেশ হলো আইসল্যান্ড। এতটাই সুখী যে সেখানে কোনো সেনাবাহিনী বা বিমানবাহিনী নেই। অন্য কোনো দেশের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর কোনো প্রশ্নই ওঠে না। দেশটিতে মায়েরা রেস্তোরাঁর উঠানে শিশুকে রেখে দিলেও এমন কেউ নেই যারা তার কোনো ক্ষতি করবে।

৭. হাওয়াই 

হাওয়াই নামটি শুনলেই সমুদ্রসৈকতের ছবি মনের ভেতর উঁকি দেয়। প্রকৃতপক্ষে এটি একটি দ্বীপপুঞ্জ। বেশিরভাগ মানুষ এখানে ছুটি কাটাতে আসেন। এখানে প্রচুর পরিমাণ নারিকেল গাছ রয়েছে। 

৮. নিউইয়র্ক সেন্ট্রাল পার্ক 

নিউইয়র্ক শহরকে বলা যেতে পারে বিনিদ্র শহর। এই শহরে সবসময় মানুষের আনাগোনা থাকে। নিউইয়র্ক শহরের সেন্ট্রাল পার্কে সবসময় অন্য পার্কের তুলনায় মানুষের ভীড় বেশি দেখা যায়। 

৯. স্যান্ড গ্লোর, দুবাই 

সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই কৃত্রিম দ্বীপে প্রতি বছর কয়েক মিলিয়ন পর্যটক ঘুরতে যায়। পর্যটকদের কাছে দুবাইয়ের অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গা এই কৃত্রিম দ্বীপ। দ্বীপটি ২০০১ সালে তৈরি করা হয়। 

১০. স্কটল্যান্ড 

স্কটল্যান্ড একটি দারুণ জায়গা। এখানে লচ নেস নামের একটি জায়গায় নির্মিত ভাস্কর্যটি বেশ মনোমুগ্ধকর। স্কটল্যান্ড হলো রূপকথার গল্পে বর্ণিত দেশের মতো। এটি যুক্তরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ। স্কটল্যান্ডের মানুষ সংগ্রামমুখর জীবনযাপন করে। 

১১. নিউজিল্যান্ড 

নিউজিল্যান্ডের ভেড়াগুলো ধবধবে সাদা লোমের। দেশটির পথেঘাটে ভেড়া দেখতে পাওয়া যায়। ঔপনিবেশিক সময়ে এটি যুক্তরাজ্যের একটি উপনিবেশ ছিলো। যুক্তরাজ্যের চেয়ে নিউজিল্যান্ডে বেশি ফাঁকা জায়গা রয়েছে। এসব ফাঁকা জায়গায় নিউজিল্যান্ডের রাখালরা ভেড়া পালন করে থাকেন। তাই নিউজিল্যান্ডকে ভেড়ার চারণভূমি বলা হয়। পর্যটকদের কাছে নিউজিল্যান্ড ভেড়ার জন্য বিখ্যাত। 

১২. জার্মানি 

জার্মানি পর্যটকদের কাছে কেন পরিচিত? উত্তরটা খুব সহজ। জার্মানিকে পর্যটকরা চিনে থাকেন বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য। অনেকে তাদের সমর্থন করে থাকেন। তবে আরেকটি বিষয়েও পর্যটকরা জার্মানিকে ভ্রমণের জন্য গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। সেটি হলো জার্মানিতে অনেকগুলো গাড়ির ব্র্যান্ড রয়েছে। এসব ব্র্যান্ড বিলাসী পর্যটকদের কাছে পছন্দের। 

১৩. ইংল্যান্ড 

ইংল্যান্ডের নাম শুনলেই চা এবং ক্রাম্পেটের (এক প্রকার তেলে ভাজা খাদ্যবিশেষ) কথা মনে পড়ে যায়। তবে আমুদে সঙ্গীতপ্রিয় পর্যটকরা বিটলসের কথা বলে থাকবেন। যে যেভাবেই ভাবুক না কেন, ইংল্যান্ড তাদের নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের জন্য বিখ্যাত। তবে আমরা অনেকেই হয়তো জানি না ইংল্যান্ডের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে ভ্লাড দ্য ইমপলার নামে একজন রাজার মিল রয়েছে। যাকে নিয়ে লেখা হয়েছে ড্র্যাকুলা উপন্যাসটি। 

১৪. পেরু 

২০১৭ সালে একবার অনুমান করা হয়েছিলো পেরু আগামী ২০২১ সালের মধ্যে পর্যটকসমৃদ্ধ একটি দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। এর মূল কারণ পেরু মাচু পেচু স্থাপনার জন্য বিশ্বখ্যাত।

১৫. ব্যাংকক 

থাইল্যান্ডের অন্যতম পর্যটকসমৃদ্ধ এবং সবচেয়ে বড় শহর ব্যাংকক। এটি থাইল্যান্ডের রাজধানী। এখানে হাজারো পর্যটক এসে থাকেন কেবল ওয়াট আরুন মন্দিরটি দেখার জন্য। এছাড়া তিন মাথাযুক্ত একটি হস্তিভাস্কর্য, ব্যাং ক্র্যাচো গার্ডেনসহ আরও অনেক জায়গা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। 

লিস্টভার্স ডট কমে প্রকাশিত ইস্টেলের লেখা অবলম্বনে এইচএকে/এএ