শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যে ১০ খাবার না খেলেই নয়
রুচিশীল ও মানসম্মত খাবারে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা দেশ শ্রীলঙ্কা। ভারতের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মতো শ্রীলঙ্কার খাবারেও বিভিন্ন ধাঁচের মসলা ব্যবহার করা হয়। তবে ভারতীয় উপমহাদেশের খাবারের সঙ্গে এর পার্থক্যও কম নয়। তাছাড়া দ্বীপ রাষ্ট্র হওয়ায় শ্রীলঙ্কান খাবারে সামুদ্রিক মাছের আধিক্য থাকে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক, শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যে দশটি খাবার না খেলেই নয়-
কট্টু
বিজ্ঞাপন
শ্রীলঙ্কার অন্যতম জনপ্রিয় খাবার হলও কট্টু। দেশটির পুরো অংশ জুড়েই খাবারটি পাওয়া যায়। রাস্তার পাশের ছোট দোকান থেকে শুরু করে পাঁচ তারকা হোটেল পর্যন্ত সবখানেই কট্টু কেনার ব্যবস্থা রয়েছে। কট্টু গোদাম্বা নামক একটি রুটির সঙ্গে সবজি, ডিম অথবা মাংসের মিশ্রণে তৈরি এক ধরণের খাবার। খাবারটি মসলা, পনির, ডলফিন, পালান্দি, চকোলেটসহ বিভিন্ন স্বাদ যুক্ত করে তৈরি হয়।
আপ্পা বা হপার
আপ্পাকে এক জাতীয় প্যানকেক হিসেবে অভিহিত করা যেতে পারে। চালের গুঁড়া এবং নারকেলের দুধ দিয়ে এটি তৈরি হয়। বাইরের অংশ মচমচে এবং ভেতরের অংশ নরম হয়। শ্রীলঙ্কার মানুষ একে হপার নামে চিনে থাকেন। দেশটিতে এ খাবার অনেক প্রসিদ্ধ। ভারতীয় উপমহাদেশেও খাবারটি পাওয়া যায়।
মালু আম্বুল থিয়াল
সমুদ্রের তীরবর্তী দেশ হওয়ার সুবাদে শ্রীলঙ্কায় প্রচুর সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায়। সে কারণে দেশটির হোটেলগুলোতে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের আইটেম পাওয়া যায়। সবচেয়ে জনপ্রিয় সামুদ্রিক মাছ হলও মালু আম্বুল থিয়াল। এটি স্বাদে টক। সাধারণত টুনা জাতীয় মাছ দিয়ে এটি রান্না করা হয়। তবে বোনিতো বা ম্যাক্রল মাছ দিয়েও রান্না করা সম্ভব। শ্রীলঙ্কানরা এটি রুটি দিয়ে খেতে ভালোবাসেন।
ল্যামপ্রেইস
শ্রীলঙ্কার মানুষের পছন্দের খাবার ল্যামপ্রেইস। ডাচ বার্গার হিসেবে এটি খাওয়া যায়। ল্যামপ্রেইস তৈরিতে ব্যবহৃত হয় হলুদ চাল, লামপারা কারি, সিনি স্যাম্বল, ফিশ কাটলেট, কাঁচা কলার তরকারি, ওয়াম্বাতু মজু বা ডিমের তরকারি এবং সেদ্ধ ডিম ভাজি। এর রান্না দুই ধাপে হয়ে থাকে। প্রথমে ভাত এবং অন্যান্য উপাদান আলাদা রান্না করা হয়। পরে রান্না করা খাবারটি কলার পাতায় মুড়ে পোড়ানো হয়।
ইদিয়াপ্পাম
শ্রীলঙ্কার ঐতিহ্যবাহী খাবার ইদিয়াপ্পাম। চালের গুঁড়া থেকে এটি প্রথমে নুডুলসের মতো তৈরি করে ভাপে সেদ্ধ করা হয়। শ্রীলঙ্কা ছাড়া ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের অঙ্গরাজ্যগুলোতেও এর জনপ্রিয়তা রয়েছে। খাবারটির প্রচলন প্রথম শতক থেকে শুরু হয়। এটি সকালের নাশতা অথবা রাতের খাবার হিসেবে খাওয়া হয়। কখনও কখনও এর সঙ্গে শ্রীলঙ্কানরা হোদি বা আলুর তরকারি, পারিপ্পু বা ডাল, স্পাইসি পোল সাম্বল বা নারকেলের সাম্বল খেয়ে থাকেন। মাঝেমধ্যে নারকেলের দুধ ও চিনিতে ভিজিয়েও এটি খান তারা।
পারিপ্পু বা ডাল
শ্রীলঙ্কার অন্যতম প্রধান খাবার পারিপ্পু বা ডাল। এটি মসুরের ডাল ও জাফরান দিয়ে রান্না করা হয়। জাফরানের কারণেই খাবারটি হলুদ রঙের হয়ে থাকে। ভাত, রুটিসহ সব ধরনের খাবারের সঙ্গেই পারিপ্পু খাওয়া যায়।
পিট্টু
শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় খাবার পিট্টু। চাল বা নারকেল দিয়ে এটি রান্না করা হয়। সাধারণত ঘি, চিনি অথবা ঝোলযুক্ত তরকারির সঙ্গে দেশটির মানুষ এটি খেয়ে থাকেন। পিট্টু দুই রকমের হয়- একটি গমের ময়দা দিয়ে তৈরি হয় যা মানি পিট্টু নামে পরিচিত এবং আরেকটি নারকেল দিয়ে তৈরি হয় যা পোল পিট্টু নামে পরিচিত।
পোলোস
শ্রীলঙ্কার অধিবাসী ও পর্যটকদের কাছে পছন্দের খাবার পোলোস। এটি কাঁচা কাঁঠাল দিয়ে রান্না হয়। কাঁচা কাঁঠালের মধ্যে স্থানীয় কিছু মসলা যেমন সরিষা, হলুদ, মরিচের গুঁড়া, কেয়া পাতা ও কারি পাতা দিয়ে রান্না করা হয়। দেশটির অধিকাংশ রেস্তোরাঁয় পোলোস পাওয়া যায়।
ওয়াম্বাতু মজু
বেগুন দিয়ে তৈরি এক ধরনের বিশেষ খাবার ওয়াম্বাতু মজু। বেগুন কেঁটে তেলে ভাজার পর চিনি, ভিনেগার, লাল পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, সরিষা, মরিচের গুঁড়া ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে আবার ভাজা হয়। শ্রীলঙ্কার বেশিরভাগ মানুষ এটি ভাতের সঙ্গে খেয়ে থাকেন।
আকচারু বা আচার
শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় খাবার আকচারু বা আচার। যেকোনো খাবারের সঙ্গে এটি খাওয়া যায়। এছাড়া কোনও খাবার তৈরিতেও এটি ব্যবহৃত হয়। দেশটির মানুষের কাছে এটি অনেক পছন্দের খাবার। এগুলো মূলত বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফলমূল থেকে তৈরি হয়ে থাকে।
এইচএকে/আরআর/এএ