অর্ণব
শায়ান চৌধুরী অর্ণব দেশের সঙ্গীতের উজ্জ্বল এক নাম। যিনি শ্রোতাদের দিয়েছেন সঙ্গীতের ভিন্ন এক স্বাদ। শুধু মৌলিক গান নয়। পুরনো অনেক গানকে নতুনভাবে তুলে ধরেছেন তিনি। বিশেষ করে রবীন্দ্রসঙ্গীতকে তরুণদের মাঝে নতুনভাবে উপস্থাপনা করেছেন।
ছোটবেলায় অর্ণবকে ঢাকার একটি স্কুলে ভর্তি করানো হয়। দ্বিতীয় শ্রেণিতে উঠার পর ভর্তি হোন কলকাতার একটি স্কুলে। তখন শান্তিনিকেতনে পড়তেন অর্ণবের মা। একদিন অর্ণব ও তার বোনকে মা ঘুরতে নিয়ে যান সেখানে। শান্তিনিকেতন দেখে মুগ্ধ অর্ণব। বায়না ধরেন সেখানেই পড়তে চান তিনি। ছেলের অনুরোধে শান্তিনিকেতনে ভর্তি করান মা। চিত্রকলা বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেন অর্ণব। পরবর্তীতে পাঠ্য ভবন থেকে মাধ্যমিক ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
বিদ্যালয়ে থাকাকালীন অর্ণব গিটার এবং কিবোর্ড বাজানো শুরু করেন। সপ্তম শ্রেণিতে থাকার সময় শেখেন ক্লাসিক্যাল এস্রাজ। ২০০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকজন বন্ধু মিলে শুরু করেন ‘বাংলা’ ব্যান্ড। যেখানে বাংলাদেশ থেকে যোগ দেন আনুশেষ আনদালি। এরপর ব্যান্ডে যোগ দেন বুনো। ব্যান্ডের উদ্দেশ্য ছিল লোক গান তুলে আনার। শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা শেষে ২০০২ সালে দেশের ফিরে ফিরেন। প্রকাশ করেন ‘বাংলা’ ব্যান্ডের প্রথম অ্যালবাম ‘কিংকর্তব্যবিমূড়’।
‘সে যে বসে আছে একা একা’ গান দিয়ে অর্ণবকে চেনেন শ্রোতারা। ‘অফবিট’ নাটকের জন্য গানটি করেন তিনি। কিন্তু নাটকের চেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠে এই গান। তরুণদের ফোনে ফোনে বা রেডিওতে কান পাতলেই শোনা যায় ‘সে যে বসে আছে একা একা’। ক্যারিয়ারে একটি রবীন্দ্রসঙ্গীত অ্যালবাম ও ৭টি মৌলিক অ্যালবাম প্রকাশ করেন। এরমধ্যে রয়েছে চাইনা ভাবিস (২০০৫), হোক কলরব (২০০৬), ডুব (২০০৮), রোদ বলেছে হবেম (২০১০), খুব ডুব (২০১৫) ও অন্ধ শহর (২০১৭)।
অর্ণব ও শাহানা বাজপায়ি ছিলেন জনপ্রিয় তারকা দম্পতি। কলকাতা ছেড়ে অর্ণবের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন শাহানা। বিয়ে করেন ২০০১ সালে। দাম্পত্য জীবনে একসঙ্গে অনেকগুলো গান করেছেন তারা। অর্ণব শাহানা বিচ্ছেদ হয় ২০০৮ সালে। বিচ্ছেদের পর কলকাতায় ফিরে যান শাহানা বাজপায়ি। ২০২০ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন অর্ণব। আসামের মেয়ে সুনিধি নায়েকের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন তিনি।