বেসিস নির্বাচনে জিতলে দুটি বিষয়ে ফোকাস করব : শাহরুখ ইসলাম
মাত্র ১৯ বছর বয়সে স্বপ্ন দেখা মানুষটি ১০ বছর পর এসে একটি কোম্পানিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের প্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছেন বন্ডস্টাইন টেকনোলজি লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মীর শাহরুখ ইসলাম। গত ১০ বছর ধরে তিনি বন্ডস্টেইন টেকনোলজি লিমিটেডকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আইওটি ইন্ডাস্ট্রিতে মার্কেট লিডিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে।
প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য হিসেবে প্রায় ১৩টি পরীক্ষায় ৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর মেধার সঠিক মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত হয়েছে দেশীয় বন্ডস্টাইন টেকনোলজির উদ্ভাবন করা প্রশ্নফাঁস রোধ প্রযুক্তির। এছাড়াও বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি বিষয়ক ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে বাংলাদেশের প্রথম আইওটি ফ্যাসিলিটি তৈরির রূপকার মীর শাহরুখ ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
আত্মপ্রত্যয়ী মীর শাহরুখ দৃঢ় আত্মবিশ্বাস আর প্রযুক্তির উৎকর্ষ দিয়ে দেশের প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি সেক্টরে। বন্ডস্টাইন টেকনোলজি লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মীর শাহরুখ ইসলাম বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নির্বাচনে সিনাপর্জি স্কোয়াডের হয়ে পরিচালক পদে নির্বাচন করছেন। ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজির (আইওটি, মেশিন লার্নিং, আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্ট) পলিসি লেভেলে কাজ করতেই তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন বলে ঢাকা পোস্টকে জানান মীর শাহরুখ ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি স্বপ্ন দেখাতে। ১০ বছর আগে যখন ব্যবসা করেছিলাম, তখনও স্বপ্ন দেখতাম, একদিন আমাদের দেশে অনেকগুলো টেক কোম্পানি থাকবে, আমরাও পৃথিবীর বড় বড় জায়ান্ট টেক ডেসটিনেশনোর মতো লিড করব। সেই স্বপ্ন অনেকাংশেই পূরণ হচ্ছে। এই স্বপ্ন পুরোপুরিভাবে পূরণ করতে আমাদের সবার একত্রে কাজ করতে হবে। সে জায়গা থেকে আমি মনে করি আমার কাজ করার, আমার কন্ট্রিবিউট করার কিছু অপশন রয়েছে।’
বেসিস নির্বাচনের প্রাক্কালে মীর শাহরুখ বলেন, ‘এ বছর আমি বেসিস নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। বেসিসকে যদি ফিউচারিসটিক ভিশনভিত্তিক ট্রেড বডিতে পরিণত করতে হয়, তাহলে ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজির (আইওটি, মেশিন লার্নিং, আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্ট) ওপর ভিত্তি করা ছাড়া আমাদের উপায় নেই। তার ওপর ভিত্তি করেই আমার নির্বাচনে আসা। প্রযুক্তিভিত্তিক এ খাতের উন্নয়নে নির্বাচনে আসা। আশা করি বেসিস সদস্যরা আমার পূর্ণ প্যানেলের পক্ষে রায় দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি দুটি বিষয়ে নজর দিতে চাই। প্রথমত, ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি অর্থাৎ আইওটি, মেশিন লার্নিং, আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স এসব বিষয় নিয়ে দেশে পলিসি লেভেলে কাজ করতে হবে। আমাদের ইকো সিস্টেম ডেভেলপ করা এখন অপরিহার্য। আমাদের গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড রিসোর্স ডেভেলপ করতে হবে, যেন দেশকে বিশ্বে একটি ট্রাস্টেড টেক ডেসটিনেশন করতে পারি। এই বিষয়গুলো বুঝে কাজ করতে হবে। সুতরাং ইন্ডাস্ট্রিতে যাদের ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি নিয়ে অভিজ্ঞতা আছে, তাদের আসাটা এখন সময়ের দাবি।’
‘দ্বিতীয়ত, আমি সদস্যদের সেবার মান নিয়ে কাজ করতে চাই। বর্তমানে আমাদের সদস্যদের সেবা পাওয়ার যে পদ্ধতি রয়েছে, সেখানে আমরা ফিডব্যাক সিস্টেম ব্যবহার করতে পারি। যার মাধ্যমে আমাদের প্রত্যেক সদস্য যে ধরনের সেবা বেসিস থেকে নেবেন, তার বিপরীতে একটা রেট করতে পারবেন, ফিডব্যাক দিতে পারবেন। তাহলে নির্ধারণ করা সহজ হবে, বেসিসের কোন সেবার জন্য মানোন্নয়ন জরুরি। একই সঙ্গে ডিরেক্টর-ইন-ওয়েটিং কনসেপ্টের মাধ্যমে সহজেই ভিসিবিলিটি নিশ্চিত করা যাবে। সেই জায়গাটাতে কাজ করাই আমার মূল লক্ষ্য। যাতে করে সদস্যের সেবা দেওয়ার বিষয়টা আরও সহজ করতে পারি। আর একটু ইনক্লুসিভ অর্গানাইজেশন যাতে আমরা ডেভেলপ করতে পারি।’
শাহরুখ আরও বলেন, আমার কোম্পানি বন্ডস্টাইন দেশের আইওটি মার্কেট লিড দিচ্ছে। ১৯ বছর বয়সে যখন ইউনিভার্সিটির ফাস্ট ইয়ারে ছিলাম তখন থেকেই উদ্যোক্তা হিসাবে আমার যাত্রা শুরু। ১০ বছর ধরে এ খাতে ব্যবসা করছি। বিগত ৫ বছর ধরে আমাদের ইনোভেট করা টেকনোলজি ব্যবহার করে বাংলাদেশে প্রশ্নফাঁস রোধ করার মতো একটি জাতীয় সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে। এ বছর প্রায় ১৩টি পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের মেধার মূল্যায়নে ব্যবহৃত হয়েছে আমাদের প্রযুক্তি। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ভর্তি পরীক্ষায়, গুচ্ছভিত্তিক সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় ও মেডিকেল পরীক্ষায় আমাদের প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে বাংলাদেশের প্রথম আইওটি সুবিধা তৈরি করেছি। গ্রাহক হিসেবে আক্সিয়াটা, টেলিনর, গুগলের মতো লিডিং ব্র্যান্ডদের আমরা পেয়েছি। আমরা মূলত আইওটি হার্ডওয়্যার ও আইটি ক্লাউড নিয়ে কাজ করি।’
আগামী ২৬ ডিসেম্বর রাজধানীর কাওরান বাজারের বেসিস কার্যালয়ে ২০২২-২৩ মেয়াদের বেসিস কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৮৭৬ জন। এর মধ্যে সাধারণ ভোটার ৬৫৪ জন, অ্যাসোসিয়েট ১৮২ জন, অ্যাফিলিয়েট ৩৭ জন ও আন্তর্জাতিক ভোটার তিনজন। নির্বাচনে সাধারণ সদস্যপদে লড়ছেন ২৪ জন, অ্যাসোসিয়েট পদে দুজন, অ্যাফিলিয়েট পদে দুজন ও আন্তর্জাতিক পদে একজন। আন্তর্জাতিক পদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় সৈয়দ এম কামাল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন। ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ২৮ জন।
এসআর/ওএফ