বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উৎপাদনের ঘোষণা দিয়েছে শাওমি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ আয়োজনের মাধ্যমে এই ঘোষণা করা হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিল্পখাত ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ‘তরুণ নেতৃত্ব ও শাওমির মতো তরুণ কোম্পানির ওপর আমাদের যথেষ্ট বিশ্বাস রয়েছে। এমন নতুন প্রজন্মের সব কোম্পানি ও উদ্যোক্তাই হচ্ছে বাংলাদেশের একেকটা সফলতা। ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে শাওমির প্রথম উৎপাদন ইউনিট স্থাপনে আমরা অংশীদার হতে পেরে অনেক আনন্দিত। এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে দেশের তরুণদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বৈশ্বিক মানের ইলেক্ট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠা হবে। বাংলাদেশে এমন সূর্যোদয়ের জন্য শাওমিকে স্বাগতম।’

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আজকে আমার ও বাংলাদেশের জন্য একটা আনন্দের দিন। কারণ শাওমির মতো একটা প্রখ্যাত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কারখানা করতে যাচ্ছে। শাওমিকে ধন্যবাদ জানাই, তারা যে বাংলাদেশকে স্মার্টফোন উৎপাদনের জন্য বেছে নিয়েছে। আমদানিকারক দেশ থেকে স্মার্টফোন উৎপাদক দেশ হওয়ায় জন্য আমরা বহুদিন থেকেই যুদ্ধ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করেন, সেটার বাস্তবায়ন এখন দেখা যাচ্ছে। করোনার সময় সেটা আমরা টের পেয়েছি। ডিজিটাল ডিভাইসের গুরুত্ব আমরা বুঝেছি। শাওমি অনেক দূর এগিয়ে যাবে, এমনটাই আমাদের বিশ্বাস।’    

এসময় বিশেষ অতিথি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উৎপাদন কারখানা চালুর জন্য শাওমিকে অভিনন্দন। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এবং এর মাধ্যমে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ উদ্যোগ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো। আমার বিশ্বাস, এখন থেকে দেশের মানুষ একটি প্রতিযোগিতামূলক দামে, বিশ্বমানের শাওমির সর্বশেষ সব উদ্ভাবনী পণ্য উপভোগ করতে পারবেন।’

ডিবিজি টেকনোলজি বিডি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশে স্মার্টফোন তৈরি করবে শাওমি। ডিবিজি একটি গ্লোবাল ইএমএস কোম্পানি, তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং বিজনেস রয়েছে বিশ্বব্যাপী। বিভিন্ন দেশের স্বনামধন্য কিছু ব্র্যান্ড ও কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য তাদের কারখানায় তৈরি হয়। ডিবিজি হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি।

কারখানাটিতে শাওমি বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ স্মাার্টফোন তৈরি করবে। প্রাথমিক অবস্থায় এই কারখানায় প্রায় এক হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। প্রায় ৫৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের কারখানাটির অবস্থান গাজীপুরের বাইপাস রোডের কাছে ভগরায়। 

শাওমি বাংলাদেশে কারখানাটিতে রেডমি সাব-ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন দিয়ে শুরু করছে ফোন উৎপাদন। যেটি আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর ধীরে ধীরে শাওমির অন্য স্মার্টফোনের পাশাপাশি পোকোর ফোনও তৈরি হবে কারখানায়। 

অনুষ্ঠানে শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উৎপাদনের মধ্য দিয়ে শাওমি আরও এগিয়ে গেলো, সে সঙ্গে বাংলাদেশের এই খাতে সামনের দিনগুলোতে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ রাখতে পারবে। বাংলাদেশকে আকর্ষণীয় ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে গড়ে তোলার রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে দূরদর্শী ভিশন, সেখান থেকেই আমরা স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উৎপাদনে আগ্রহী হয়েছি। স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উৎপাদনের মধ্য দিয়ে দেশের বাজারে দীর্ঘস্থায়ী কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সেই সঙ্গে দেশে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও আমরা অবদান রাখতে পারছি। বাংলাদেশের মানুষের জীবনমানকে উন্নত করতে ভূমিকা রাখতে পেরে আমরা সত্যিই উচ্ছ্বসিত।’

এএ