দেশে সাড়ে ৪ হাজার সাইবার হামলার ঘটনা শনাক্ত
দেশে ৪ হাজার ৫৫০টি সাইবার হামলার ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
শনিবার (২ অক্টোবর) ‘টেকসই উন্নয়নে সাইবার নিরাপত্তা’ বিষয়ক অনলাইন সেমিনারে তিনি এ তথ্য তুলে ধরেন। কন্ট্রোলার অব সার্টিফায়িং অথরিটিজ (সিসিএ) এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি এ সেমিনারের আয়োজন করে।
বিজ্ঞাপন
সেমিনারে ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক মো. খায়রুল আমীনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিসিএর নিয়ন্ত্রক আবু সাঈদ চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মামুন অর রশীদ।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সমকালের সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোল্যা নজরুল ইসলাম, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ এবং এটুআই এর চিফ টেকনোলজি অফিসার আরফে এলাহী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পলক বলেন, বিজিডি ই-গভ সিআইআরটির মাধ্যমে ৪ হাজার ৫৫০টি সাইবার হামলার ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৭৮টির বেশি ছিল আমাদের সরকারি প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট। সরকারি দফতরের পাশাপাশি আমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থাসমূহের সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টিও সিআইআরটি দেখছে। গ্লোবাল সাইবার ইন্ডেক্সে আমাদের অবস্থান ১৬০টি দেশের মধ্যে ৪১তম।
ই-গভার্নমেন্ট বাস্তবায়নের ফলে দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করেন পলক বলেন, করোনাকালে মুক্তপাঠে ৭০ লাখ সাবস্ক্রিপশন, ৩৩৩, ৯৯৯ বিডি পুলিশ, ভার্চুয়াল কোর্ট, ৪ কোটি ই-নথি ও ৮ হাজার দফতরে এর ব্যবহারসহ করোনাকালে ই-অফিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের ব্যবহার হয়েছে। সবই ই-গভার্নমেন্ট চালু থাকায় সম্ভব হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে সাড়ে ৪ কোটি মানুষের ভ্যাকসিন নিবন্ধন, আড়াই কোটি ভ্যাকসিন দেওয়া, বিশ্বের ৭ম বৃহত্তম ডেটা সেন্টার স্থাপনের নজির এবং সক্ষমতাও আমাদের রয়েছে। ডিজিটাল বিপ্লবের এসব অর্জন ম্লান করে দিতে পারে সাইবার নিরাপত্তার ব্যর্থতা।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮১ বিলিয়ন ডলার পাচারের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে এ সময়ে কোন দেশে সরাসরি অ্যাটাকের দরকার হয় না। সাইবার অ্যাটাকের মাধ্যমে একটি দেশকে অকার্যকর করে দেওয়া যায়। ২০০৭ এ এসতোনিয়া, ইউকে, ইরানে সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে আমাদের যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, জানা-অজানায় আমরা ১৪ ধরনের সাইবার হামলার শিকার হই। স্প্যাম, র্যানসামওয়্যার, ফিসিং, মেলওয়্যার, ইনফরমেশন লিকেজ, ইনসাইডার থ্রেট বটনেটস্ এর মধ্যে অন্যতম।
সাইবার নিরাপত্তায় আইসিটি বিভাগের প্রস্তুতির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, বিজিডি ই-গভ সিআইআরটি, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি গঠন, অত্যাধুনিক ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনসহ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান ও করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি ক্যাপাসিটি মডেল, ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার, সাইবার লিটারেট সোসাইটি এবং সাইবার ইকো-সিস্টেম গঠনের মধ্যে দিয়ে সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন, বিধি-বিধান প্রণয়ন, দক্ষ জনবলসহ কাঠামোগত সক্ষমতা অর্জন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সহযোগিতা মিডিয়ার যথার্থ ব্যবহারের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে সাইবার অপরাধ থেকে বেঁচে থাকার জন্য সবার আগে ব্যক্তি পর্যায়ের সচেতনতা তৈরির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
একে/এসকেডি