প্রযুক্তি খাতের ১ যুগের সাফল্য তুলে ধরলেন পলক
এক যুগে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের অর্জন ও ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এসময় তিনি জানান, আগামীতে এ খাতে ২০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) আগারগাঁও আইসিটি টাওয়ারে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ১২ বছর’ শীর্ষক এক সংবাদ সংম্মেলনে তিনি গত এক বছরের অর্জন ও আগামীর কর্মপরিকল্পনার ফিরিস্তি তুলে ধরেন।
বিজ্ঞাপন
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। উপস্থিত ছিলেন হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হোসনে আরা বেগমসহ আরো অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের পথিকৃৎ বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় পলক বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিতে গত ২০০৮ সালে ৫০ হাজারেরও কম মানুষের কর্মসংস্থান ছিল। যা ১২ বছরে বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ লাখের বেশি হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সংখ্যা ৫৬ লাখ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ১২ কোটি, সরকারি ওয়েবসাইট ৫০টি থেকে ৫১ হাজারেও বেশি, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বাজার ২৬ মিলিয়ন থেকে এক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারটি মাইলস্টোন দিয়েছেন উল্লেখ করে পলক বলেন, এর মধ্যে প্রথম ২০২১ সালের রূপকল্প ডিজিটাল বাংলাদেশ, দ্বিতীয় ২০৩০ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, তৃতীয় ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা ও ২১০০ সালের জন্য চতুর্থ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা।
২০২১ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তথ্য বাতায়ন বাংলাদেশের বলে জানান তরুণ এ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তরুণ বয়সে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন আর্কিটেক্ট অব ডিজিটাল বাংলাদেশ সজীব ওয়াজেদ জয়।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে দেশের জনগণ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে উল্লেখ করে পলক বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য কানেকটিভিটি নিশ্চিত করা হবে। সরকারের স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় নাগরিক সেবা পৌঁছানো হবে। এছাড়াও ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সবাইকে প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রদানে একত্রে কাজ করে ব্যাপক সফলতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি জানান, শুধু পরিসংখানের নিরিখেই নয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে দারিদ্র্য কমানোসহ মানব উন্নয়নে বাংলাদেশের মডেল এখন বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্ত।
পলক জানান, গত ১২ বছরে দেশে একটি শক্তিশালী আইসিটি ব্যাকবোন তৈরি হয়েছে, যা গ্রাম পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। দেশের ৩ হাজার ৮০০ ইউনিয়ন এখন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির আওতায়। ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা হবে।
করোনার মধ্যেও গত ১০ মাসে ই-কমার্সে এক লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হয়েছে। আইসিটি ব্যাকবোন তৈরি হওয়ার কারণে করোনা মহামারিকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অফিস-আদালত, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা ও ব্যবসা বাণিজ্যের কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব হয়েছে। করোনা পরবর্তী পরিকল্পনাও মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)-সহ তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন খাতের সংগঠনের প্রতিনিধিরা, স্টার্টআপ উদ্যোক্তারা, টেক ও টেলিকমে বিনিয়োগকারী, ফ্রিল্যান্সারসহ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যবসায়ী ও সুবিধাভোগীরা।
একে/ওএফ