বিটিআরসির চেয়ারম্যানকেও পড়তে হয় নেটওয়ার্ক সমস্যায়!
বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের গ্রাহকদের কলড্রপ, নেটওয়ার্ক সমস্যা ও ডাটা ঠিকমতো না পাওয়ার অভিযোগ নিত্যদিনের। এর বাইরে নন স্বয়ং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যানও। নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের প্রধান হয়েও চলার পথে তিনি এসব সমস্যায় পড়েছেন।
এ বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার জানান, চলার পথে কলড্রপ, নেটওয়ার্ক সমস্যা, মোবাইল ডাটা ঠিকমতো না পাওয়ার অভিযোগ সত্য। আমি নিজেও কলড্রপ, নেটওয়ার্কের সমস্যায় পড়েছি। তবে আমরা এসব বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি।
রোববার ‘টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম’ সম্পর্কিত গণশুনানিতে এক গ্রাহকের প্রশ্নের তিনি এসব কথা জানান। বিটিআরসি এ গণশুনানির আয়োজন করে।
বিজ্ঞাপন
গণশুনানিতে অংশ নিয়ে আরাফাত সিদ্দিকি নামে এক গ্রাহক বলেন, ঢাকা শহর থেকে ট্রেনে সারাদেশে যে কোনো জায়গায় যাওয়ার সময়ে কোথাও না কোথাও কলড্রপ ও নেটওয়ার্কের সমস্যা হবে। অনেক সময় নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যেতে হয়। অথচ এক সময়ে নেটওয়ার্ক ধরার জন্য রেললাইনের পাশে দাঁড়িয়ে থাকত মানুষ। ফোরজি সেবা নিশ্চিতের সময়সীমাও পার হয়েছে মোবাইল অপারেটরদের। তারপরও তাদের সেবা ভালো নয়। সড়ক ও রেলপথে যাতে নেটওয়ার্কের সমস্যা ও কলড্রপ না হয়, সে বিষয়ে কমিশন কী পদক্ষেপ নেবে?
উত্তরে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, মোবাইল অপারেটরদের সন্তোষজনক সেবা নিয়ে আমাদের একটি কমিটি কাজ করছে। এছাড়া, আমাদের আরও কিছু কাজ চলমান। এর মধ্যে আমাদের ড্রাইভ টেস্ট অন্যতম। আমরা এ পর্যন্ত ৯৮টি উপজেলায় ড্রাইভ টেস্ট করেছি। ৩০০টি উপজেলায় আমরা এ টেস্টগুলো করব। মধ্যবর্তী সময়ে টেস্ট রেজাল্ট যা পাচ্ছি, তা নিয়ে কিন্তু আমরা মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।
তিনি বলেন, আপনি ট্রেনে চলার ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কের যে তথ্য দিলেন, তা সত্য। আমি আপনার সঙ্গে একমত। শুধু ট্রেন নয় আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে সড়ক পথে চলার সময়ে নেটওয়ার্ক পাইনি। আমার কলড্রপ হয়েছে। ডাটা পাইনি। এসব সত্য কথা। আমি নিজে গ্রামীণফোনকে বিষয়টি জানিয়েছি।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বিটিআরসির চেয়ারম্যান জানান, সব এলাকায় একাধিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) সেবা দেবে। কোনো এলাকায় যদি একটি আইএসপি অন্য আইএসপিকে ঢুকতে বাধা দেয়, সেবা দিতে না দেয় তাহলে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থায় অভিযোগ জানানো যাবে। অভিযোগ পেলে বিটিআরসি ব্যবস্থা নেবে।
কোনো লাইসেন্সধারী অপারেটর অন্য আরেকটি লাইসেন্স পাওয়া অপারেটরকে বা কোনো পাড়ার আইএসপি অন্য কোনো লাইসেন্স পাওয়া আইএসপিকে সেবা দিতে বাধা দিলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বিটিআরসির চেয়ারম্যান। গত জুন মাস পর্যন্ত ৮৬টি আইএসপিকে জরিমানা করা হয়েছে।
ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম জুমে অনুষ্ঠিত এ গণশুনানিতে আগে থেকে নিবন্ধিত ব্যক্তিরা অভিযোগ ও প্রশ্ন করেন। এতে ২৫টির বেশি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়। এতে অংশ নিয়ে গ্রাহকেরা নেটওয়ার্ক এর বাইরে মোবাইল হ্যান্ডসেট, বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরদের দুর্বল সেবা, অব্যবহৃত ডেটা ফেরত, কল ড্রপ, ওকলার মোবাইল ইন্টারনেট গতির তথ্য, সময় মতো সেবা না পাওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন।
শুনানিতে অবৈধ মোবাইল সেট বৈধ করার বিষয়ে বলা হয়, কাগজপত্রাদি জমা দেওয়া এবং যাচাইয়ের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীকে ৩ মাস সময় দেওয়া হবে। তারপর সিদ্ধান্ত হবে মোবাইল ফোনের বিষয়ে। গুণশুনানিতে বিটিআরসির বিভিন্ন বিভাগের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিয়ে গ্রাহকের প্রশ্নের উত্তর দেন।
একে/আরএইচ