স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের অনেকেই মেমোরি কার্ডের সঙ্গে পরিচিত। অনেকে একে এসডি কার্ড হিসেবে চেনেন। স্মার্টফোনের স্টোরেজ বাড়ানোর জন্য এই কার্ড ব্যবহৃত হয়।

মেমোরি কার্ডের অনেকগুলো ক্যাটাগরির ব্যাপারে বেশিরভাগ ব্যবহারকারীই জানেন না। এই ক্যাটাগরিগুলোর ওপর নির্ভর করে স্মার্টফোনের গতি। অপেক্ষাকৃত কম দাম কিংবা ধীরগতির মেমোরি কার্ড ফোনের জন্য ভালো না। অর্থাৎ এ কারণে অনেক সময় ফোনের পারফরমেন্স স্লো অথবা হ্যাং হয়ে যেতে পারে।

আরো পড়ুন - ফেসবুক ভেরিফায়েড করবেন যেভাবে

মেমোরি কার্ডের ক্যাটাগরিগুলোর মধ্যে কোনোটির জন্য ফোনের পারফরমেন্স ধীরগতির হয়, আবার কোনোটির জন্য ফোনের পারফরমেন্স দ্রুতগতির। এখন আপনার মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, কোন মেমোরি কার্ডে ফোনের পারফরমেন্স দ্রুত হয়? সেই বিষয়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক-

আইফোনে কেন মেমোরি কার্ড ব্যবহৃত হয় না?

এ কথা সবাই জানে আইফোনে এক্সটার্নাল অপারেটিং সিস্টেম বা মেমোরি কার্ড ব্যবহার করা যায় না। এর কারণ কী? যখন কোনো স্মার্টফোনে মেমোরি কার্ড ব্যবহারের জন্য কোনো অপশন থাকে তখনই ব্যবহারকারী বিভিন্ন ক্যাটাগরির মেমোরি কার্ড সেখানে ব্যবহার করেন। এভাবে ক্যাটাগরি ভিন্ন হওয়ায় ফোনের পারফরমেন্সের তারতম্য হতে থাকে। অর্থাৎ একেক জনের ফোনের পারফরম্যান্স একেক রকম হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফোনের পারফরমেন্স ধরে রাখার জন্যই আইফোনে মেমোরি কার্ড ব্যবহারের অপশন রাখা হয়নি।

একই মডেলের স্মার্টফোন কিনেও পারফরম্যান্স এক নয় কেন?

অনেক ব্যবহারকারীই একটি সমস্যার কথা বলেন। একই মডেল ও কোম্পানির ফোন কেনার পরেও দুজনের ফোনের পারফরম্যান্সে পার্থক্য দেখা যায়। কেন এমন পার্থক্য দেখা যায়?

আরো পড়ুন - গোপনে কে আসে আপনার ফেসবুক প্রোফাইলে জেনে নিন

বিশেষজ্ঞরা এর উত্তর দিয়েছেন, দুজন ব্যবহারকারীর ২ ধরনের মেমোরি কার্ড ব্যবহার করার কারণে পারফরমেন্সে এমন পার্থক্য দেখা যায়।

কীভাবে ভালো মেমোরি কার্ড চিনবেন?

আমরা সবাই একটি জিনিস ভালোভাবে জানি। সেটি হলো মেমোরি কার্ডের ওপর প্রতিষ্ঠানের নাম এবং স্টোরেজ উল্লেখ করা থাকে। মেমোরি কার্ডে কিছু ধরন রয়েছে। যেমন এসডি, এসডিএইচসি ও এসডিএক্সসি।

যেসব মেমোরি কার্ডের ওপর এসডি লেখা থাকে, সেসব মেমোরি কার্ড সাধারণত ১২৮ মেগাবাইট (এমবি) থেকে ২ গিগাবাইট (জিবি) পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এসডি মেমোরি কার্ডের পরেই রয়েছে এসডিএইচসি। এগুলো ‘হাই-ক্যাপাসিটি’ এবং ৪ গিগাবাইট (জিবি) থেকে ৩২ গিগাবাইট (জিবি) পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এসডিএইচসি মেমোরি কার্ড হয় এক্সটেন্ডেড ক্যাপাসিটি। এগুলো ৬৪ গিগাবাইট (জিবি) থেকে ২ টেরাবাইট (টিবি) হয়।

বেশিরভাগ স্মার্টফোনে এসডি ও এসডিএইচসি কার্ড ব্যবহৃত হয়। আর যে ফোনগুলো এক্সটেন্ডেড ক্যাপাসিটি সাপোর্ট করে, সেগুলোতে এসডিএক্সসি কার্ড ব্যবহার করা যায়।

ফোনে কেমন গতির মেমোরি কার্ড ব্যবহার করা যায়?

বিশেষজ্ঞরা বলেন, মেমোরি কার্ডে ইংরেজি ‘সি’ এর মতো একটি চিহ্ন রয়েছে। যেখানে নির্দিষ্ট একটি নাম্বার দেওয়া থাকে। প্রকৃতপক্ষে এই ‘সি’ ক্লাস এবং ভেতরের নাম্বারটি দ্বারা বোঝানো হয় কার্ডটি কোন ক্লাসের। এই ক্লাসগুলো ক্যাটাগরি সাধারণত ‘ক্লাস টু- ২ এমবি, ক্লাস ফোর- ৪ এমবি, ক্লাস সিক্স- ৬ এমবি, ক্লাস টেন- ১০ এমবি’ এমন হয়ে থাকে। তবে কোনো কোনো মেমোরি কার্ডের উপরে লেখা থাকে ‘ইউএইচ ওয়ান- ১০ এমবি, ইউএইচ থ্রি- ৩০ এমবি’। ‘ইউএইচ’ দ্বারা বোঝানো হয় আল্ট্রা-স্পিড। অর্থাৎ এগুলো ক্ষীপ্রগতির হয়ে থাকে।

আরো পড়ুন - অনলাইনে করোনার টিকা সনদ সংগ্রহ করবেন যেভাবে

প্রশ্ন ওঠে, কোন মেমোরি কার্ডের গতি সবচেয়ে বেশি?

এর উত্তর হলো, ক্লাস টু’র ২ মেগাবাইট (এমবি), ক্লাস ফোরের ৪ এমবি, ক্লাস সিক্সের ৬ এমবি এবং ক্লাস টেনের গতি ১০ এমবি হবে। এগুলোর মধ্য থেকেই বের করা যায় কোন মেমোরি কার্ডের গতি সবচেয়ে বেশি। কারণ এগুলোকে স্বাভাবিক গতি অথবা ‘নরম্যাল স্পিড’ হিসেবে ধরা হয়। তার মধ্যে ক্লাস টু, ক্লাস ফোর ও ক্লাস সিক্স ক্যাটাগরি ব্যবহৃত হয় শুধু ভিডিও রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে। এগুলো স্ট্যান্ডার্ড ও এইচডি ভিডিও রেকর্ডিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।

কেউ যদি ফুল এইচডি ভিডিও রেকর্ড করতে চান, তাহলে ক্লাস টেন ও ইউএইচ ওয়ান ক্যাটাগরি ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা ফুল এইচডি ভিডিও রেকর্ডিংয়ের জন্য এগুলো ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।

যাদের ফোনে ‘ফোর-কে’ বা ‘টু-কে’ এই ২ ধরনের ভিডিও অপশন রয়েছে, তাদের ইউএইচ থ্রি মেমোরি কার্ড ব্যবহার করা উচিত।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ক্লাস টেন ও ইউএইচ ওয়ান ক্যাটাগরির মেমোরি কার্ডগুলো সবচেয়ে দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারে। তাই মেমোরি কার্ড কেনার সময় এগুলো দেখে নেওয়া উচিত।

এইচএকে/টিএম/এএ