সার্চ ইঞ্জিন প্ল্যাটফর্ম গুগল দীর্ঘ দিন ধরেই অনলাইন বিজ্ঞাপনের বাজারে একচেটিয়া অবস্থান রয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুন) ইউরোপীয় কমিশনের এক তদন্ত প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রতিদ্বন্দ্বী প্ল্যাটফর্মগুলোকে বিজ্ঞাপনের সুযোগ দিচ্ছে না গুগল। এই অভিযোগে ২০১৮ সালে তাদের বিরুদ্ধে শুরু হয় তদন্ত। সে সময়ে গুগল বলেছিল, তদন্ত কার্যক্রমে তারা সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

‘যৌক্তিক প্রতিযোগিতা’

ইউরোপীয় কমিশনের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্গারেট ভেসটেগার বলছেন, অনলাইন বিজ্ঞাপনের বাজার একাই নিয়ন্ত্রণ করে রেখেছে গুগল। এই কারণে অন্যরা ব্যবসা করার সুযোগ পাচ্ছে না। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করেছি।

মার্গারেট ভেসটেগার বলেন, ‘অনলাইন বিজ্ঞাপনের বাজারে এখন চলছে গুগলের একচেটিয়া কর্তৃত্ব। ফলে অন্য প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবসার সুযোগ পাচ্ছে না। বিশেষ করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্ল্যাটফর্মগুলোকে কোনোভাবেই সুযোগ দিচ্ছে না সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্টটি।’

ভেসটেগার আরও বলেন, ‘ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি করে নিজেদের বিজ্ঞাপনী এজেন্ডা বাস্তবায়নের অভিযোগও খতিয়ে দেখেছি আমরা। আমরা মনে করি, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে যৌক্তিক প্রতিযোগিতা করা যেতেই পারে। কিন্তু অন্য প্ল্যাটফর্মগুলোকে ব্যবসায়িক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে নিজের একচেটিয়া কর্তৃত্ব বিস্তার করা অনলাইন বাণিজ্যের জন্য নিরাপদ নয়।’

এ প্রসঙ্গে গুগল বলেছে, ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণের ব্যাপারে ভবিষ্যতে তারা আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে।

আরও যেসব দেশে তদন্ত চলছে

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের কমপিটিশন অ্যান্ড মার্কেটস অথরিটি (সিএমএ) গুগলের কাছ থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণ না করার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছে। একই সঙ্গে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি না করার ব্যাপারেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এর আগে টানা তিন বার বাজার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগে সার্চ ইঞ্জিন প্ল্যাটফর্ম গুগলকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জরিমানা আদেশ দিয়েছে। পরবর্তীতে প্ল্যাটফর্মটির বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের মার্চে একচেটিয়া কতৃত্ব বিস্তারের অভিযোগে ৯ কোটি ১০ লাখ ডলার জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়।

বিশ্বব্যাপী অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর বিরুদ্ধে চলছে তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম। কিছুদিন আগে বাজার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগে গুগলকে জরিমানার আদেশ দিয়েছিল ফ্রান্স। গত সোমবার জার্মানিতেও শুরু হয়েছে তদন্ত কার্যক্রম। সম্প্রতি ভারতের ডিজিটাল আইন মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম। যদিও হোয়াটসঅ্যাপ আইনটি না মেনে প্রথমে দেশটির হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে। অন্যদিকে নতুন ডিজিটাল আইন মেনে নেওয়ার জন্য সময় চেয়েছে টুইটার।

সূত্র : বিবিসি।

এইচএকে/টিএম/এএ