যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও দেশটির ৪৫টি অঙ্গরাজ্যের প্রসিকিউটরদের করা অ্যান্টিট্রাস্ট মামলাটি খারিজ করে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুক। 

বুধবার এক বিবৃতিতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলেছে, মামলাটির কারণে অন্যান্য টেক কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় তারা পেরে উঠছে না ও তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের গতিশীলতায় বাধা দেয়া হচ্ছে। তারা আরও বলেছে, মামলাটি অযৌক্তিক এবং দ্রুত মামলাটি খারিজ করতে হবে। 

গত বছর ডিসেম্বরে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগে এ মামলা দায়ের করে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও দেশটির ৪৫টি অঙ্গরাজ্যের প্রসিকিউটররা। আগামী ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ফেডারেল আদালত মামলার বিচার মুলতবি করেছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, দীর্ঘ দিন ধরে একচেটিয়াভাবে সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে আসছে ফেসবুক। 

২০১২ সালে ১০০ কোটি ডলারে ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম ও ২০১৪ সালে ১৯০ কোটি ডলারে হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নেয়। ফেডারেল আদালত বলছে, এর মাধ্যমে ফেসবুক একচেটিয়াভাবে সোশ্যাল মিডিয়াগুলো নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। 

২০১৯ সালে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এক দশকে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিটি চারটি অ্যাপের মালিক হয়েছে- ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম। ফেডারেল আদালত একচেটিয়া ব্যবসার ব্যাপারে অভিযোগ করলেও ফেসবুক বলছে, বিষয়টি প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি। 

নিউইয়র্ক অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস এর জবাবে বলেন, ‘এই অভিযোগকে ফেসবুক ভুলভাবে দেখছে। তাদের একচেটিয়া ব্যবসায়িক কার্যক্রমের ব্যাপারে নিউইয়র্কের প্রায় সব অঙ্গরাজ্যের প্রসিকিউটরের অভিযোগ রয়েছে এবং এ বিষয়ে আমরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী।’ 

ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে বড় বড় টেক জায়ান্ট 

যুক্তরাষ্ট্রে কেবল ফেসবুকের বিরুদ্ধে অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা করা হয়েছে এমন নয়। গত বছরের অক্টোবরে সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগলের বিরুদ্ধেও সার্চ ফলাফল ও অনলাইন বিজ্ঞাপনে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের অভিযোগে মামলা করা হয়। 

গত জুলাইয়ে অ্যামাজন, অ্যাপল, ফেসবুক ও গুগল সোশ্যাল মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণের অভিযোগে কাঠগড়ায় দাঁড়ায়। ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান ডেভিড সিসিলিন বলেন, ‘একাধিক বড় টেক জায়ান্টকে পুনর্গঠিত ও দক্ষভাবে পরিচালনা করতে হবে।’ 

নিয়ন্ত্রকরা এসব বড় কোম্পানিকে সীমিত পরিসরে ক্ষমতা দিয়ে ছোট কোম্পানিগুলোকে ব্যবসা করার সুযোগ দিতে চাইছে এবং এটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রকদের চাওয়া নয়। 

ইউরোপীয় কমিশনের এক তদন্তে বলা হয়েছে অ্যাপল ও ফেসবুক ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে। গত বছরের নভেম্বরে অ্যামাজনের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ করা হয়। এমনকি অ্যাপলের বিরুদ্ধে একচেটিয়াভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ করেছে যুক্তরাজ্য।

সূত্র: বিবিসি।

এইচএকে/এসএমডব্লিউ/এএ