বাংলাদেশি স্টার্টআপ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম পেমেন্ট গেটওয়ে ফস্টার কর্পোরেশন লিমিটেডে আটকে থাকা ৩৯৭ কোটি টাকার মধ্যে ২২৪ কোটি টাকা গ্রাহকদের ফেরত দিয়েছে। বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফস্টারের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার মো. আল-বেরুনীর সই করা প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ফস্টারের নিকট কিউকম লিমিটেডের পাওনা প্রায় ৩৯৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ৮টি রিফান্ড লিস্টের মাধ্যমে ১৮ হাজার ৪৩২টি অর্ডারের বিপরীতে ২৬ হাজার ৮৫৬টি ট্রানজেকশনের মোট ২২৪ কোটি ২৩ লাখ ১০ হাজার ৭০৮ টাকা ফস্টারের মাধ্যমে গ্রাহকদের পরিশোধ করা হয়েছে। 

বাকি ১ হাজার ২০০টি ট্রানজেকশনের মোট ৭ কোটি ৬৩ লাখ ৩৫ হাজার ৪০২ টাকা গ্রাহকদের পরিশোধের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যে অবশিষ্ট সকল রিফান্ড দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। 

কিউকম জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পেমেন্টের বিপরীতে থাকা মেয়াদোত্তীর্ণ চেক নিয়ে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহতভাবে চলছে। গত ২৪ জানুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ ২০ জন গ্রাহককে ৪০ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার মধ্যে দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করেন। 

এপ্রিলে কিউকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. রিপন মিয়া কারাগার থেকে মুক্তির পর এ কার্যক্রমে গতি আসে। কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পর গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়ার ইতিহাস বিরল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুবর্ণ বড়ুয়া এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব ইতিহাসেই এটি উদাহরণ হয়ে থাকবে যে, গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।’ 

গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি নতুন উদ্যমে সুপার অ্যাপের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। মার্কেটপ্লেসের পাশাপাশি অনলাইনে দ্রুত খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কিউফুড, গ্রোসারি শপ কিউমার্ট এবং লজিস্টিক ও পার্সেল ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান পিকমি এক্সপ্রেস নিয়েও কাজ করছে কিউকম। 

শিগগিরই ফ্যাশন, মেডিসিনসহ আরও বেশ কিছু সেবা চালু করবে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন করে ব্যবসা শুরুর বিষয়ে কিউকমের সিইও মো. রিপন মিয়া বলেন, অনেক সততার পরীক্ষার পর করপোরেট কোম্পানি, এসএমই মার্চেন্ট ও গ্রাহকদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা আবার নিয়মিত কার্যক্রম শুরু করেছি। পুনরায় শুরু করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হিসেবে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং গ্রাহকবান্ধব ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে সর্বোচ্চ সচেষ্ট থাকব। 

গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুনরায় ব্যবসা করার অনুমতিসহ সার্বিক সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান, উপ-সচিব সাঈদ আলী, ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও গণমাধ্যমের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়।

আরএইচ