নবম ও দশম শ্রেণীর বাংলা দ্বিতীয় পত্র : প্রতিবেদন লিখন
সুপ্রিয় নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিয়ো। আজ তোমাদের বাংলা দ্বিতীয় পত্রের `সাধারণ প্রতিবেদন / প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন ও সংবাদ প্রতিবেদন লিখনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ’ নিয়ে আলোচনা করব।
প্রশ্ন : সাধারণ প্রতিবেদন / প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন ও সংবাদ প্রতিবেদন লিখনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ কী কী?
বিজ্ঞাপন
উত্তর : নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন ও সংবাদ প্রতিবেদন লিখনে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।
১. সাধারণ প্রতিবেদন / প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন :
সাধারণত আমরা যে প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থাকি সেই প্রতিষ্ঠানে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা, বিষয় বা প্রসঙ্গ সম্পর্কে যে প্রতিবেদন লিখতে হয় সেটিই প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন বা সাধারণ প্রতিবেদন। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেসব অনুষ্ঠান হয়ে থাকে যেমন- বার্ষিক বিজ্ঞানমেলা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, বিতর্ক উৎসব, নবীনবরণ, বর্ষবরণ, বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বিদায় অনুষ্ঠান, বইমেলা, গ্রন্থাগার, শিক্ষাসফর, বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ইত্যাদি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন লিখতে বলা হয়।
সাধারণ প্রতিবেদন / প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখায় বিবেচ্য বিষয়সমূহ :
ক. সাধারণ প্রতিবেদন লেখার জন্য সর্বপ্রথম কর্তৃপক্ষের কাছে একটি সাধারণ আবেদনপত্র লিখতে হয়। যেমন- তুমি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হলে সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক/অধ্যক্ষের কাছে একটি সাধারণ আবেদনপত্র লিখবে।
খ. আবেদনপত্রের উপরে বামদিকে তারিখ, কর্তৃপক্ষের পদবি-ঠিকানা, বিষয় ও সূত্র/স্মারক নম্বর (কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত চিঠির নম্বরই সূত্র/স্মারক নম্বর) লিখবে।
গ. আবেদনপত্রের শেষে নিচে বামদিকে শিক্ষার্থী তার নাম ঠিকানা (প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত নাম-ঠিকানা) লিখবে। এরপর শিরোনামসহ মূল প্রতিবেদন লিখবে।
ঘ. মূল প্রতিবেদনের প্রথম অনুচ্ছেদটি 5W+1H Formula ব্যবহার করে লিখতে হয়। অর্থাৎ W= What, W= Where, W= When, W= Who, W= Why I H= How এই প্রশ্নগুলোর উত্তর একত্রিত করে শিক্ষার্থী প্রথম অনুচ্ছেদটি লিখবে।|
ঙ. প্রথম অনুচ্ছেদের (Intro) পর একাধিক অনুচ্ছেদে ধারাবাহিকভাবে পুরো বিষয়টি বর্ণনা করবে।
চ. মূল প্রতিবেদন লেখা শেষে ‘বিনীত নিবেদক’, ‘প্রতিবেদক’, ‘ইতি’- এ ধরনের কথাগুলো লেখা যাবে না।
ছ. প্রতিবেদন লেখায় কোনো খাম দিতে হয় না। তবে প্রতিবেদন লেখা শেষে প্রতিবেদক ও প্রতিবেদন সম্পর্কিত একটি তথ্য-ছক দিতে হবে।
২. সংবাদ প্রতিবেদন :
সাধারণত নাগরিক জীবনের বিভিন্ন সমস্যা, কোথাও ঘটে যাওয়া জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘটনা, দুর্ঘটনা, বিষয় বা প্রসঙ্গ সম্পর্কে তথ্যমূলক বিবৃতি লিখনই সংবাদ প্রতিবেদন। উক্ত বিষয় সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করাই সংবাদ প্রতিবেদনের লক্ষ্য। এক্ষেত্রে আমরা হয়ে যাই কোনো পত্রিকার সাংবাদিক অর্থাৎ নিজস্ব সংবাদদাতা/স্টাফ রিপোর্টার/নিজস্ব প্রতিবেদক বা কোনো জেলা/থানা প্রতিনিধি। একজন রিপোর্টার হিসেবে সংবাদপত্রে প্রকাশ উপযোগী করে এ ধরনের প্রতিবেদন লিখতে হয়।
সংবাদ প্রতিবেদন লেখায় বিবেচ্য বিষয়সমূহ :
ক. সংবাদ প্রতিবেদন লিখতে সম্পাদক/কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো আবেদনপত্র লিখতে হয় না।
খ. হেডলাইন (শিরোনাম) দিয়ে প্রতিবেদন লেখা শুরু করতে হয়।
গ. এরপর ডেটলাইন (প্রতিবেদকের নাম/পদবি, তারিখ ও স্থান) লিখে প্রথম অনুচ্ছেদ লিখতে হয়।
ঘ. প্রথম অনুচ্ছেদের (Intro) পর একাধিক অনুচ্ছেদে ধারাবাহিকভাবে পুরো বিষয়টি বর্ণনা করতে হয়।
ঙ. মূল প্রতিবেদন লেখা শেষে ‘বিনীত নিবেদক’, ‘প্রতিবেদক’, ‘ইতি’- এ ধরনের কথাগুলো লেখা যাবে না।
চ. প্রতিবেদন লেখায় কোনো খাম দিতে হয় না। তবে প্রতিবেদন লেখা শেষে প্রতিবেদক ও প্রতিবেদন সম্পর্কিত একটি তথ্য-ছক দিতে হবে।
ছ. সংবাদ প্রতিবেদন লিখনে প্রতিবেদককে অবশ্যই নির্মোহ ও নৈর্ব্যক্তিক হতে হবে।
জ. সংবাদ প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে উত্তম পুরুষে লেখার (যেমন- গিয়ে দেখলাম) দরকার নেই। ভাববাচ্যে (যেমন- গিয়ে দেখা গেল) লেখা বাঞ্ছনীয়।
শিক্ষক, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা
এমকে