কে বলবে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা হেরে গিয়েছেন? ডেভিস কাপের ম্যাচে তার দেশ স্পেন হেরেছে নেদারল্যান্ডসের কাছে? স্টেডিয়ামজুড়ে তখন আবেগের বিস্ফোরণ। কাঁদছেন রাফায়েল নাদাল। চোখের জলে ভাসছেন উপস্থিত হাজার হাজার দর্শক।  ২২ বারের গ্র্যান্ড স্লামজয়ী স্প্যানিশ কিংবদন্তির ২৩ বছরের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে ঘিরে এমন আবহই দেখা গেল মালাগায়। 

নিজের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ হেরেছিলেন রজার ফেদেরারও। আর একই ঘটনা ঘটল তার ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’ নাদালের সঙ্গেও। এদিন মালাগায় না থেকেও উপস্থিত ছিলেন ফেদেরার। যিনি নাদালের ‘ভক্ত’ হিসেবে দীর্ঘ চিঠি লিখেছিলেন।

অবশ্য শুধু ফেদেরার নন, ছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস, জোকোভিচ, আন্দ্রে ইনিয়েস্তারাও। ম্যাচের পর ভিডিও বার্তায় তারা উজাড় করে দেন ২২টি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী নাদালের প্রতি শ্রদ্ধা ও মুগ্ধতা।

ম্যাচের আগে স্পেনের জাতীয় সঙ্গীতের সময় ক্যামেরা ধরা পড়েছিল নাদালের আবেগী মুখটা। আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন চোখের পানি সামলানোর, পারলেন কোথায়! বিদায়বেলার সুরটা যেন নিজেই ঠিক করে দিলেন। ম্যাচের পর স্টেডিয়ামজুড়ে শুধু ‘রাফা রাফা’ ধ্বনি। তার মাঝেই সদ্য কিংবদন্তি বললেন, ‘আমার পদক, সাফল্য, সেসব তো রইলই। শুধু চাই, লোকে আমাকে মায়োরকার এক ছোট্ট গ্রাম থেকে উঠে আসা ভালো মানুষ হিসেবেই মনে রাখুন।’

বললেন, ‘আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এতো ভালবাসা পেয়েছি যে বুঝতে পারছি না কোথা থেকে শুরু করব।’ একটু থেমে বললেন, ‘২০ বছরের ক্যারিয়ারের বরাবর আপনারা সাহস জুগিয়েছেন, পরের পয়েন্ট জিততে সাহায্য করেছেন। কঠিন মুহূর্তে আমার পাশে থেকেছেন। আমি লড়াইয়ের সাহস পেয়েছি। স্পেন এবং গোটা বিশ্বে সমর্থকদের ভালবাসা পেয়ে আমি আপ্লুত।’

নাদাল জানালেন, জোর করে নিজেকে না টেনে পরের প্রজন্মের উদ্দেশে দরজা খুলে দেওয়ার দরকার ছিল। বলেছেন, ‘সত্যি কথাটা হল, কোনো ক্রীড়াবিদই চায় না এই মুহূর্ত কোনো দিন আসুক। আমি টেনিস খেলতে গিয়ে কখনও ক্লান্ত হই না। কিন্তু শরীর আর চাইছে না টেনিস খেলতে। পরিস্থিতি মেনে নিতেই হবে। আমি কৃতজ্ঞ। নিজের পছন্দের একটা বিষয়কে পেশা বানাতে পেরেছি। যত দিন ভেবেছিলাম তার থেকে বেশি দিন খেলেছি।’

এফআই