ম্যাচ জিতে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি জোকো। নিজের জামা ছিঁড়ে ফেলেন। ছবি-সংগৃহীত

গেল জুলাইয়ে উইম্বলডনের ফাইনালে কুড়ি বছর বয়সী কার্লোস আলকারাজের তারুণ্যের কাছে হার মানতে হয়েছিল টেনিসের বড় নক্ষত্র নোভাক জোকোভিচকে। সেই হারের বদলা এবার নিলেন জোকো। সিনসিনাটি ওপেনের ফাইনালে বিশ্বের নাম্বার ওয়ানকে হারালেন সার্বিয়ান কিংবদন্তি। এদিন ম্যাচ জিতে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি জোকোভিচ। দু’হাতে নিজের জামা ছিঁড়ে ফেলেন। 

ম্যাচ শেষে জোকা জানালেন, ‘কী বলব বুঝতে পারছি না। আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ আলকারাজ। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমরা লড়েছি। একবারের জন্যও আলকারাজ হাল ছাড়েনি। তবে এই দিনটা আমার ছিল।’

রোববারের লড়াইয়ে প্রথম সেটে হেরে যাওয়ার পরে দ্বিতীয় সেটেও একটা সময় হারের মুখে দাঁড়িয়েছিলেন জোকোভিচ। সেখান থেকে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ান। শেষ পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা ৪৯ মিনিটের লড়াইয়ে ৫-৭, ৭-৬ (৯-৭), ৭-৬ (৭-৪) গেমে ম্যাচ নিজের করে নেন জোকোভিচ।

প্রথম সেট থেকেই টান টান লড়াই চলছিল দুই তারকার মধ্যে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও লম্বা র‌্যালি খেলছিলেন তারা। দ্বাদশ গেমে আলকারাজের ব্যাকহ্যান্ডের রিটার্ন করতে না পেরে প্রথম সেট হারেন জোকোভিচ। প্রথম সেটে আলকারাজের তুলনায় একটু বেশি ক্লান্ত দেখাচ্ছিল জোকোভিচকে। হতে পারে টানা ম্যাচ খেলার ধকল সামলাতে সমস্যায় পড়ছিলেন সার্বিয়ার তারকা।

জোকোভিচের সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ এখন তরুণ আলকারাজ।

দ্বিতীয় সেটেও একটা সময় ৪-২ এগিয়ে ছিলেন আলকারাজ। দেখে মনে হচ্ছিল স্ট্রেট সেটে ম্যাচের ফয়সালা হবে। কিন্তু সপ্তম গেমে আলকারাজ সার্ভিসে ভুল করেন। সেই সুযোগ নেন জোকোভিচ। সার্ভিস ভাঙেন তিনি। টাইব্রেকারে গড়ায় সেট। সেখানে একটা সময় চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্টে ছিলেন আলকারাজ। সেই পয়েন্ট বাঁচান জোকোভিচ। তার পরে ২৫ শটের র‌্যালিতে আলকারাজকে পরাস্ত করে দ্বিতীয় সেট নিজের নামে করেন ২৩ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক।

দ্বিতীয় সেট হেরে মেজাজ হারান আলকারাজ। তার চেয়ারের পাশে থাকা পানীয়ের একটি বাক্সে ঘুষি মারেন তিনি। ফলে আঙুল কেটে যায় তার। কিছুক্ষণ মেডিক্যাল বিরতি নিতে হয় তাকে।

তৃতীয় সেটেও টান টান লড়াই চলছিল। সপ্তম গেমে আলকারাজের সার্ভিস ভেঙে এগিয়ে যান জোকোভিচ। নবম গেমে দু’টি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট ছিল জোকোভিচের কাছে। হারের মুখে দাঁড়িয়েও লড়াই ছাড়েননি আলকারাজ। দু’টি ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে সেই গেম জেতেন তিনি। পরের গেমে জোকোভিচের সার্ভিস ভাঙেন আলকারাজ। ৩-৫ থেকে ৫-৫ করেন তিনি। তৃতীয় সেটও টাইব্রেকারে গড়ায়। সেখানে আলকারাজের আনফোর্সড এররের সুবিধা নেন জোকোভিচ। স্পেনের তারকার একটি ফোরহ্যান্ড লাইনের বাইরে পড়ায় ম্যাচ জিতে যান নোভাক।

ক্যারিয়ারের ৯৫তম ট্রফি জিতলেন জোকোভিচ। এটি তার ৩৯তম মাস্টার্স ১০০০ প্রতিযোগিতা জয়। আগামী ২৮ অগস্ট থেকে শুরু ইউএস ওপেন। কোভিড টিকা না নেওয়ায় গত বার খেলতে পারেননি জোকোভিচ। এবার খেলবেন বলেই ধরে নেওয়া যায়। তবে সেখানেও বড় প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকবেন সেই আলকারাজ।

এফআই