মুখ থেকে কিশোরসুলভ ভাবটা এখনো মুছে যায়নি। চেহারা দেখলে বোঝা যায়, তারুণ্যের পরিপক্বতা এখনো চেপে বসেনি। তবে, টেনিসের কোর্টে নেমে যেন সেসব উড়িয়ে দিলেন কার্লোস আলকারেজ। উইম্বলডন ফাইনালে তার খেলা দেখে বলার সাধ্য নেই, বয়স তার মাত্র কুড়ি। 

লন্ডনের অল ইংলিশ কোর্টে ৪ ঘন্টা ৪২ মিনিটের ম্যারাথন লড়াই শেষে নোভাক জোকভিচকে হারিয়ে উইম্বলডনের শিরোপা নিজের করে নিয়েছেন স্প্যানিশ নাম্বার ওয়ান আলকারেজ। টেনিসের বড় নক্ষত্র নোভাক জোকোভিচকে  ১-৬, ৭-৬ (৮/৬), ৬-১, ৩-৬, ৬-৪ গেমে হারিয়েছেন এই তরুণ। ক্যারিয়ারে এটি তার ২য় গ্র্যান্ডস্ল্যাম। আর দশ বছরের মধ্যে উইম্বলডনে এটিই ছিলো জোকোভিচের প্রথম হার। 

আলকারেজ আদর্শ মানেন আরেক গ্রেট রাফায়েল নাদালকে। এমনকি পানির বোতলটাও দু পায়ের মাঝে সাজিয়ে রাখেন নাদালের মতো করে। গতকালের খেলায় সেই নাদালকেই যেন মনে করিয়ে দিলেন বারবার। ২০০৮ সালে এমনই এক লড়াকু ফাইনালে টেনিস জগতে নিজের নামটা জানান দিয়েছিলেন নাদাল। গতকাল তারই পুনরাবৃত্তি করেছেন আলকারেজ। 

কয়েকমাস আগেই জোকোভিচের মুখোমুখি হয়েছেন ফ্রেঞ্চ ওপেনের সেমিফাইনালে। প্রতিপক্ষকে নিয়ে বেশি ভাবতে গিয়েই খেই হারিয়েছিলেন নাম্বার ওয়ান তারকা। দুই সেট পরেই ইনজুরিতে পড়তে হয় তাকে। কিন্তু কয়েকমাস পরেই পরিণত এক আলকারেজকেই যেন দেখা গেলো। 

প্রথম সেটে হেরেছেন ৬-১ গেমের বড় ব্যবধানে। তবে তাতে মুষড়ে পড়েননি আলকারেজ। দ্বিতীয় সেটে হলো তুমুল লড়াই। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকে হলো নিষ্পত্তি। সেট জিতলেন স্প্যানিশ তারকা। 

তৃতীয় সেটে জোকোভিচ লড়েছেন নিজের সবটা দিয়ে। কিন্তু ফলাফল বললো অন্য কথা। ৬-১ গেমে সেট জিতে এগিয়ে গিয়েছেন আলকারেজই। 

চতুর্থ সেটে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন জোকো। অনেকটা লড়াই করেই ৩-৬ গেমে সেট নিজের করে নিয়েছিলেন তিনি। তখনই ধারণা করা হচ্ছিলো, হয়ত আরও একবার প্রত্যাবর্তনের দারুণ গল্প লিখতে চলেছেন এই সার্বিয়ান। তার সামনে তখন সর্বকালের সর্বোচ্চ গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের হাতছানি। 

কিন্তু তরুণ আলকারেজ তা আর হতে দেননি। ৬-৪ গেমে জোকোভিচকে হারিয়ে উইম্বলডনের ঘাসের কোর্টের রাজা বনে গেলেন তিনি। ফেদেরার-নাদাল-জোকোভিচের পর আলকারেজকেই টেনিসের ভবিষ্যত মানছেন অনেকেই। সেই ভবিষ্যতের বার্তাটাও হয়ত ইংল্যান্ডের অল ইংলিশ কোর্ট থেকেই দিয়ে রেখেছেন তিনি। 

জেএ