ছেলে হয়ে জন্মালে ক্রিকেট বেছে নিতেন সানিয়া
ভারতীয় টেনিসে আলো ছড়ানো একটি নাম সানিয়া মির্জা। একের পর এক শিরোপা জয়ে ভারতকে তিনি বিশ্বের বুকে গর্বিত করেছেন। সম্প্রতি টেনিস ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন তিনি। সাবেক এই টেনিস কিংবদন্তি মনে করেন, তিনি যদি ছেলে হয়ে জন্মাতেন, তাহলে হয়তো টেনিস নয় খেলতেন ক্রিকেট!
ধ্রবতারার মতো উত্থান। ছয়টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম, ৪১ টা ডাবলস জয়। অনেক সাফল্য, অনেক ইতিহাস। তারপর হঠাৎ করেই পথচলা থামিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত। সানিয়া মির্জার অবসরের ঘোষণা স্বাভাবিকভাবেই তাই মেনে নিতে পারছিলেন না অনেকে। তবে নিজের অবসর নিয়ে কোনো খেদ নেই সানিয়ার।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ‘খেলা ছাড়ছি না কেন এটার চেয়ে কেন ছাড়লাম শোনা তৃপ্তিদায়ক’
নিজের অবসর প্রসঙ্গে একবার বলেছিলেন, ‘আমি মাথা উঁচু করে টেনিসকে বিদায় জানাতে চেয়েছিলাম। তাই মনে হলো, এটাই অবসরের ঠিক সময়। জানি, এখনও আমার বড় ম্যাচ জেতার ক্ষমতা রয়েছে। সেই আত্মবিশ্বাসে ভর করেই শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেলেছি। আসলে আমি ওই পর্যায়ে খেলতে পছন্দ করি। এখনও কেন খেলা ছাড়ছি না, এটা শোনার থেকে ‘কেন খেলা ছাড়লেন’শোনা আমার কাছে অনেক বেশি তৃপ্তিদায়ক। বরাবর আমি কঠিন থেকে কঠিনতর চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করেছি। তার জন্য পরিশ্রম, আত্মত্যাগ কম কিছু করতে হয়নি। সেই তাগিদটায় ঘাটতি আসুক চাইনি। তাই মনে হলো, এটাই খেলা ছাড়ার আদর্শ সময়।’
এদিকে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সানিয়া বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, আমি যদি মেয়ে না হয়ে ছেলে হয়ে জন্মাতাম, তাহলে হয়তো ক্রিকেটই খেলতাম। এমনিতে মনে হয়, ক্রিকেট খেলাটা যেন আর পাঁচটা খেলার থেকে আলাদা।’
আরও বলেন, ‘তবে আমি মেয়ে হওয়ার জন্যই হয়তো মনে হতো ক্রিকেটটা আমাদের খেলা নয়। এই চিন্তাধারাটা অবশ্যই হালের নয়। আমি বলতে চাই, সেটা প্রায় ত্রিশ বছর আগের সাধারণ ভারতীয়-মনোভাব।’ উল্লেখ্য, টেনিস ছাড়ার পর অবসরের পরবর্তী ক্যারিয়ার হিসেবেও বেছে নেন ক্রিকেটকে। সর্বশেষ নারী আইপিএলের জন্য রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে দায়িত্ব পালন করেন টেনিস এই কিংবদন্তি । ভারতের তারকা এই টেনিস তারকা মূলত দলটির মেন্টরের দায়িত্ব সামলান।
আরও পড়ুন: খেলাধুলা জগতে সব নারীর কাছেই তুমি আশার প্রতীক ছিলে
কে ছিলেন তার ‘রোল-মডেল’? এমন প্রশ্নের শুরুতেই সানিয়া বলেছেন স্টেফি গ্রাফের নাম। সঙ্গে এটাও মনে করিয়েছেন, তার বেড়ে ওঠার সময়কালে একমাত্র পি টি উষা ছাড়া কোনো ভারতীয় মহিলা খেলোয়াড়কে নিয়েই সেই অর্থে আলোচনা হতো না। সানিয়ার কথায়, ‘আমার বেড়ে ওঠার সময় যাবতীয় প্রচারটা ছিল স্টেফি গ্রাফকে কেন্দ্র করে। হয়তো সেই কারণেই ওকে আদর্শ ভেবে নিয়েছিলাম। আমাদের দেশে সে সময় পি টি উষাকে নিয়েও প্রচুর আগ্রহ ছিল। গোটা উপমহাদেশে সাধারণ মানুষের মুখে মুখে ঘুরত উষার নাম। সে সময় ভারতের কোনো মেয়ে অ্যাথলিট হতে চাইলে উষাকে সামনে রেখেই নিজেদের উদ্ধুদ্ধ করত।’
সানিয়া জীবনের শেষ ম্যাচ খেলেন দুবাই টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে মেয়েদের ডাবলসে। যেখানে প্রথম রাউন্ডেই হেরে বিদায় নেন তিনি।
এফআই