দেশের দাবার পাঁচ গ্র্যান্ডমাস্টারের মধ্যে অন্যতম রিফাত বিন সাত্তার। নিয়াজ মোর্শেদ, জিয়াউর রহমানের পর গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছিলেন তিনি। দেশের অন্য চার গ্র্যান্ডমাস্টার এমনকি ফিদে মাস্টার তরুণ দাবাড়ু– ফাহাদ রহমান বিশ্বকাপ দাবায় খেললেও রিফাত এখনও বিশ্বকাপ দাবায় অংশগ্রহণ করেননি। 

একমাত্র গ্র্যান্ডমাস্টার হিসেবে বিশ্বকাপ দাবায় অংশগ্রহণ না করার জন্য অবশ্য তেমন আক্ষেপ নেই রিফাতের, ‘আমি যখন ফর্মের তুঙ্গে ছিলাম তখন এশিয়ান জোনালের প্রতিদ্বন্দ্বীতা অনেক বেশি ছিল। ফলে কোয়ালিফাই করতে পারিনি। আর এখন তো আমি দাবা খেলি শখে। অন্য চার জিএমের কাছে পেশা। বিশ্বকাপ দাবা না খেলতে পারলেও আমার কোনো আক্ষেপ নেই।’ 

রিফাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করেন। এরপর তিনি দাবাকে পুরোপুরি পেশা হিসেবে নেননি।  বহুজাতিক উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। মাঝে কম্বোডিয়ায় সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টরও ছিলেন। তখন দাবা থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হন। দেশে ফেরার পর আবার জাতীয় দাবাসহ অন্য টুর্নামেন্টে মাঝে মধ্যে খেলেন। 

বিশ্বকাপ দাবায় না খেলতে পারলেও দাবা অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়েছেন কয়েকবার। দাবা বিশ্বকাপ ও অলিম্পিয়াডের মধ্যে পার্থক্য বা তুলনা করতে চান না এই দাবাড়ু, ‘বিশ্বকাপটা ব্যক্তিগত আর অলিম্পিয়াড দলগত ইভেন্ট। এই দুটির মধ্যে ঠিক তুলনা করা যায় না। দলগত ইভেন্টের সময় দেশের পতাকা থাকে, অনেক দেশ থাকে একটা ভিন্ন অনুভূতি কাজ করে। বিশ্বকাপ দাবা ব্যক্তিগত ইভেন্ট। বিশ্বকাপ আমি যেহেতু খেলিনি তাই এর অনুভূতি সম্পর্কে তেমন কিছু বলতে পারব না।’

২০১৯ সালে ফাহাদ রহমান এশিয়ান জোনাল চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপ দাবায় খেলেন। সেই চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে ছিলেন রিফাত, ‘ওই চ্যাম্পিয়নশিপে ভালোই খেলছিলাম কিন্তু শেষ দিকে একটু ছন্দপতন হয় এজন্য রানার্স আপ হই। না হলে হয়তো বিশ্বকাপ খেলা হয়ে যেত।’ 

দাবাড়ুদের বয়সসীমা নেই। রাণী হামিদ ৭৭ বছর বয়সে এখনো খেলে যাচ্ছেন। রিফাতের বয়স প্রায় ৫০। এরপরও বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা সেভাবে দেখছেন না, ‘জাতীয় ও জোনাল দাবা সেভাবে খেলতে পারছি না সময়ের জন্য। ফলে আমার বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা কম।’ শখের বশে আজীবন দাবা খেলে যাবেন রিফাত। 

উল্লেখ্য, সামনের মাসে রাশিয়ার সোচিতে বিশ্বকাপ দাবায় বাংলাদেশের দুই গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ ও জিয়াউর রহমান খেলবেন। ফিদে বিশ্বকাপ দাবায় দাবাড়ুর সংখ্যা বাড়ানোয় বাংলাদেশ থেকে দুই জন খেলার সুযোগ পাচ্ছেন। নিয়াজ সরাসরি দেশের কোটায় খেলছেন সর্বশেষ জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আর জিয়া জোনাল পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপে নিজের নাম ৫ম বারের মতো লেখালেন।

এজেড/এমএইচ