দাবাড়ুদের মত নিয়ে পথচলা শুরু ফেডারেশনের
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নয়টি ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি করেছে। সবার আগে গতকাল নির্বাহী কমিটির সভা করেছে হকি ফেডারেশন। এরপর আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় হয়েছে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের মিটিং।
দাবা ফেডারেশন নির্বাহী কমিটির এই সভার আগে একটি মতবিনিময় সভা করেছে। যেখানে দাবা খেলোয়াড়, অভিভাবক ও সংগঠকদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। এসোসিয়েশন অফ চেস প্লেয়ার্স বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের নতুন কমিটির কাছে বেশ কিছু প্রস্তাবনাও দিয়েছে। অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফিদে মাস্টার ও বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ম সচিব তৈয়বুর রহমান সুমন বলেন, ‘দাবাড়ুদের প্রাধান্য দিয়েই ফেডারেশনের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে। বিগত সময়ে অনেক ক্ষেত্রে অন্যরকম প্রাধান্য থাকলেও, আমি ব্যক্তিগতভাবে দাবা ফেডারেশনে দাবাড়ুদের প্রাধান্যে বিশ্বাসী।’
বিজ্ঞাপন
স্বাগত বক্তব্যের পর পাওয়ার পয়েন্টে দাবা খেলোয়াড় সমিতির নানা প্রস্তাবনা প্রদর্শিত হয়। সেখানে তৃণমূলে দাবার বিকাশ থেকে শুরু, আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ, দাবা খেলার পরিবেশ, বিচারকদের সুযোগ-সুবিধা ও আর্থিক স্বচ্ছতাসহ সবকিছুই রয়েছে। সমিতির অনেক দাবির সঙ্গেই ফেডারেশনের নতুন সাধারণ সম্পাদক একমত পোষণ করেছেন। নির্বাহী কমিটির সভায় অনুমোদনের মাধ্যমে অনেক দাবি বাস্তবায়ন যোগ্যও বলে জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় সক্রিয় চার গ্র্যান্ডমাস্টারের মধ্যে এসেছিলেন আব্দুল্লাহ আল রাকিব। অনেকদিন পর দাবা ফেডারেশনের আনুষ্ঠানিক কোনো প্রোগ্রামে আসলেন রাকিব। তাই উপস্থিত দুই সাংবাদিকের স্বাভাবিক জিজ্ঞাসা, ‘দাবায় নিয়মিত হচ্ছেন কি না?’ রাকিবের স্বভাবজাত ভঙ্গিতে উত্তর, ‘বেশ ওজনদার প্রশ্ন। দেখা যাক সামনে কি হয়।’ মতবিনিময় সভায় রাকিব কোনো মতামত না রাখলেও সাংবাদিকদের কাছে তার ফেডারেশনের কাছে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন এভাবে, ‘দাবার সঙ্গে অন্য খেলার পার্থক্য হচ্ছে খেলা চলাকালে অন্যসব ইভেন্টে কোলাহল উন্মাদনা-উত্তেজনা বাড়ায়। দাবায় একেবারে নিস্তব্ধতা প্রয়োজন। আমরা যে পরিবেশে খেলি সেটা মোটেও দাবাময় নয়। খেলায় উন্নতি হলে দাবার নিজস্ব জায়গা প্রয়োজন।’
মতবিনিময় শেষে নির্বাহী কমিটির সভা শুরুর সময় উপস্থিত হন আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাত বিন সাত্তার। বর্তমান জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মনন রেজা নীড়, আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমান, মহিলা জাতীয় চ্যাম্পিয়ন নোশিন আঞ্জুমসহ আরও অনেক জাতীয় দাবাড়ুই উপস্থিত ছিলেন। তাদের সবাই গতিশীল ফেডারেশনের প্রত্যাশা করেন।
১৬ বছর পর দাবা ফেডারেশনে ফিরেছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি সৈয়দ সুজাউদ্দিন আহমেদ। তিনি মতবিনিময় সভায় বলেন, ‘অ্যাডহক কমিটি স্বল্প সময়ের জন্যই। দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন অন্যতম লক্ষ্য। এই সময়ের মধ্যে যতটুকু সম্ভব দাবার উন্নয়নে কাজ করব।’
আজকের মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন সদ্য বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম। কমিটিতে না থাকলেও তিনি দাবার জন্য কাজ করতে চান। অ্যাডহক কমিটির সম্পাদক সুমনও তাকে দাবার উন্নয়নে সঙ্গে রাখতে চান, ‘শামীম ভাই দাবার আন্তর্জাতিক দুটি কমিটিতে রয়েছেন। ফলে বাংলাদেশের দাবায় তার উপস্থিতিও প্রয়োজন।’
ওই সভার পর দাবা ফেডারেশনের নতুন কমিটি ঘণ্টা দুয়েক বৈঠক করেছে। সেই সভায় অবশ্য কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত আসেনি। পরবর্তী সভায় বেশ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে কর্মকাণ্ড শুরু হবে। ফিদের কাছে দাবা ফেডারেশনের কয়েক হাজার ইউরো ঋণ রয়েছে, তেমনি বেশ কয়েকজন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনাও আছে বাংলাদেশি সংস্থাটির। সভা শুরুর আগে বিদায়ী ও নতুন সাধারণ সম্পাদক এ নিয়ে বৈঠক করেছেন।
এজেড/এএইচএস