বিশ্ব দাবা অলিম্পিয়াডে উন্মুক্ত ও মহিলা দুই বিভাগেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের এমন সাফল্যের বিপরীতে বাংলাদেশ করেছে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে ফলাফল। উন্মুক্ত বিভাগে ৭৮ ও মহিলা বিভাগে ৮১তম স্থান নিয়ে অলিম্পিয়াড শেষ করেছে বাংলাদেশ। 

অলিম্পিয়াডের ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বাজে ফলাফল ছাপিয়ে আলোচনায় ৮২ বছর বয়সী আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রাণী হামিদের আট খেলায় সাত জয়। জিতেছেন টানা ছয় খেলায়। এই বয়সে রাণী হামিদের অসাধারণ এই পারফরম্যান্স বাংলাদেশে তো বটেই, দাবা অলিম্পিয়াডেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

গতকাল রাতে হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট থেকে ঢাকা রওনা হওয়ার আগে ঢাকা পোস্টের সিনিয়র স্পোর্টস রিপোর্টার আরাফাত জোবায়ের কথা বলেছেন দাবার এ কিংবদন্তির সঙ্গে। নিজের ব্যক্তিগত সাফল্য আর অতীতের সঙ্গে উঠে এসেছে পারিবারিক অধ্যায়ও। কথা বলেছেন, দাবার অর্জন আর সম্ভাবনা নিয়েও।

ঢাকা পোস্ট : দলীয়ভাবে বুদাপেস্ট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশের জন্য ব্যর্থতার হলেও আপনার ব্যক্তিগত অর্জন তো বেশ ভালোই হলো... 

রাণী হামিদ : হ্যাঁ, আমার জন্য ভালোই হয়েছে বলতে হবে। আসলে সত্যিকার অর্থে আমি ভালোই খেলি। সমস্যা হলো হঠাৎ অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল হয়। এই অলিম্পিয়াডে সেইরকম ভুল হয়নি, তাই জিতেছি। মাঝে একটা খেলায় হেরেছি। সেটা সামান্য ভুলের জন্যই। অলিম্পিয়াডে ভালো খেলার আরেকটি কারণ পরিবেশ। দেশে অনেক খেলা খেলতে হয় গরমের মধ্যে; কারেন্ট থাকে না, এসি ভালোমতো চলে না। আমি গরমে খেলতে পারি না, ভুল বেশি হয়।

ঢাকা পোস্ট : ৮২ বছর বয়সে আপনি এবারের অলিম্পিয়াডে খেলেছেন। আপনার টানা জয়ে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সবাই উচ্ছ্বসিত ও অনুপ্রাণিত। সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার সুশান পোলগার আপনাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। অলিম্পিয়াড ভেন্যুতেও আপনাকে নিয়ে নিশ্চয়ই অনেক আলোচনা হয়েছে? 

রাণী হামিদ : সুশানের সঙ্গে আমার অনেক দিনের পরিচয়। ওর বয়স যখন ১৪, তখন থেকেই চিনি। ওর মায়ের সঙ্গে আসত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে। ওর হাঙ্গেরিয়ান মা খুব চিন্তায় থাকত মেয়ের দাবা নিয়ে। সুশানের বিশ্ব দাবার সম্রাজ্ঞী হওয়া তো আমার চোখের সামনেই। সুশান ছাড়াও আরো কয়েকজন আমার সঙ্গে আলাদা করে দেখা ও কথা বলেছে। দেড়শ’র বেশি দেশ খেলেছে, সবাই যার যার মতো ব্যস্ত। সেভাবে আড্ডা দেয়ার সময়-সুযোগ কমই।

ঢাকা পোস্ট : সুশান আপনার অদম্য স্পৃহার প্রশংসা করে লিখেছেন আপনার দাবার শুরু ৩৪ বছর বয়সে। দাবাড়ুদের জন্য এটা অনেক বিলম্ব। এত বিলম্বে দাবায় আসার কারণ কী?

রাণী হামিদ : পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানে সেভাবে মহিলা দাবা ছিল না। ৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলো। এরপর দাবা ফেডারেশন গঠন হলো। তারপর ফিদের সদস্য হওয়া, এরও পরে মহিলা দাবার শুরু। ফলে ৭৭-৭৮ সালের আগে আসার সুযোগ সেভাবে ছিল না। 

ঢাকা পোস্ট : আপনি একটানা বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ মহিলা দাবায় চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার হয়ে থেমে গেলেন। প্রথম মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার না হতে না পারার আক্ষেপ কতটুকু?

রাণী হামিদ : আসলে ভাবলে আফসোস লাগে। তবে বাস্তবিক অর্থে সেভাবে চেষ্টাও করিনি। এর পেছনে নানা কারণ আছে। গ্র্যান্ডমাস্টার হতে হলে বিদেশে অনেক টুর্নামেন্ট খেলতে হয়। একা একা ভালো লাগে না যেতে। লন্ডনে আমার আত্মীয় ছিল। তাই বছরে একবার লন্ডনে ব্রিটিশ দাবা খেলতাম। সেখানে চ্যাম্পিয়নও হয়েছি। বাংলাদেশের প্রথম মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার যোগ্যতা-সামর্থ্য ছিল কিন্তু সেভাবে চেষ্টা করিনি। 

আপনাদের মিডিয়ারও খানিকটা দায় রয়েছে। মিডিয়া সবসময় বিদেশি ফুটবল, ক্রিকেট নিয়ে এত লেখালেখি করে সেই তুলনায় দাবা নিয়ে করে না। অথচ দাবায় বাংলাদেশের অর্জন যেমন আছে সম্ভাবনাও আছে। এখন নয়, অনেক দিন থেকেই বাংলাদেশের মিডিয়ার উপর আমার এই অনুযোগ।

ঢাকা পোস্ট : আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার লিজা দাবা থেকে দূরে। আরেকজন শিরিনের পারিবারিক ব্যস্ততা বেশি। আপনার জীবদ্দশায় বাংলাদেশে মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার দেখে যাওয়ার আশা দেখছেন?

রাণী হামিদ : নতুন কয়েকজন প্রতিভাবান নারী দাবাড়ু উঠে এসেছে। তারা তো অনেকটা আদাজল খেয়েই নেমেছে গ্র্যান্ডমাস্টার হবে। তাদের সম্ভাবনাও আছে। খেলার এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২-৩ বছর পর বলা যাবে তাদের গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু।

ঢাকা পোস্ট : আপনি প্রায় পাঁচ দশক বাংলাদেশের দাবার সঙ্গে আছেন। মহিলা দাবার শুরু থেকে বর্তমান সবটাই চোখের সামনে। মহিলা দাবার একাল-সেকাল কীভাবে দেখছেন? 

রাণী হামিদ : সত্যিকার অর্থে অনেকটা একই লেভেলে আছে। নারীদের আরো বেশি খেলা প্রয়োজন। বছরে অধিকাংশ সময় বসেই থাকে। এভাবে তো আসলে আর আগানো যাবে না। নিয়মিত খেলা আয়োজন করতে হবে, খেলতে হবে। বর্তমান সময়ে মেয়েরা নেভি, আনসার থেকে সাপোর্ট পাচ্ছে, এটা অত্যন্ত ইতিবাচক।

ঢাকা পোস্ট : উপমহাদেশে প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার বাংলাদেশে। সেই দেশ অলিম্পিয়াডে দুই বিভাগেই সত্তরের পরে আর পার্শ্ববর্তী ভারত দুই বিভাগেই চ্যাম্পিয়ন। কীভাবে দেখছেন? 

রাণী হামিদ : নিয়াজ আশির দশকে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছে। আমিও আশির দশকে ব্রিটিশ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতাম। সেই সময় আমাদের স্ট্যান্ডার্ড ঐ পর্যায়ে ছিল। এরপর বিশ্ব গেছে আকাশে, আমরা গেলাম পাতালে। খুব দুঃখজনক বিষয়। এর পেছনে অনেক কারণ আছে। ফেডারেশনে যোগ্য নেতৃত্ব, পৃষ্ঠপোষকতা আরও অনেক বিষয়ই অছে। আপনাদের মিডিয়ারও খানিকটা দায় রয়েছে। মিডিয়া সবসময় বিদেশি ফুটবল, ক্রিকেট নিয়ে এত লেখালেখি করে সেই তুলনায় দাবা নিয়ে করে না। অথচ দাবায় বাংলাদেশের অর্জন যেমন আছে সম্ভাবনাও আছে। এখন নয়, অনেক দিন থেকেই বাংলাদেশের মিডিয়ার উপর আমার এই অনুযোগ।

ঢাকা পোস্ট : এবার ফলাফল এত খারাপ হওয়ার কারণ কী ?

রাণী হামিদ : আমরা মেয়েরা কয়েকটি রাউন্ড ভালোই খেলেছি। ঐ ধারায় খেলতে পারলে ৪০-৫০ এর মধ্যে থাকা যেত। শেষের দিকে এসে কিছুটা ছন্দপতন হয়েছে। শেষ দিনেও দুই টেবিল থেকে হাফ হাফ পয়েন্ট পেলে আরো উপরে থাকতে পারতাম। উন্মুক্ত ইভেন্টেও একই পরিস্থিতি। অনেক জেতা বোর্ড ড্র হয়েছে। না হলে এত পেছনে পড়ার কথা নয়। তবে গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়া না থাকা একটা বড় শূন্যতা। 

ঢাকা পোস্ট : এবার একটি রাউন্ডে আপনার বোর্ডের খেলা ৫ ঘন্টা হয়েছে। এই বয়সে এত সময় বোর্ডে মনোযোগ রাখেন কীভাবে ?

রাণী হামিদ : শেষ খেলাটিই ৯০ চালের হয়েছে। দশ রাউন্ড পর্যন্ত খেলা হয়েছে বিকেলে। শেষ রাউন্ড সকালে। দশম রাউন্ড খেলার পর সারা রাত ঘুমাইনি। ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমিয়েছি। কয়েক ঘন্টা পর খেলা শুরু করি। ভালোই খেলছি.. দুই বিশপ রাখছিলাম, কিংয়ের উপর অ্যাটাক দিচ্ছিলাম। প্রতিপক্ষ চাইলে রিজাইন করতে পারত। সেও শেষক্ষণ পর্যন্ত চেষ্টা করেছে তাই অনেক সময় লেগেছে। বেশি সময় নিয়ে খেলতে আমার তেমন কষ্ট হয় না। হঠাৎ ভুল করে ফেলি, ভুল না করলে আমি খেলতে পারি। 

নারীদের আরো বেশি খেলা প্রয়োজন। বছরে অধিকাংশ সময় বসেই থাকে। এভাবে তো আসলে আর আগানো যাবে না। নিয়মিত খেলা আয়োজন করতে হবে, খেলতে হবে। বর্তমান সময়ে মেয়েরা নেভি, আনসার থেকে সাপোর্ট পাচ্ছে, এটা অত্যন্ত ইতিবাচক।

ঢাকা পোস্ট : এই অলিম্পিয়াডে আপনার এত ভালো পারফরম্যান্স হলো কীভাবে, কতটুকু প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?

রাণী হামিদ : প্রস্তুতি নেওয়ার আর সুযোগ পেলাম কোথায়। ভিসা নিয়ে অনেক ভোগান্তিতে ছিলাম। আশির বেশি বয়স। ফলে অনেক পাসপোর্ট আমার। এর মধ্যে সবচেয়ে পুরান একটি পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে। ভিসা আবেদনের সময় সেই পাসপোর্ট নিয়ে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল। ঐ ভোগান্তি না হলে আরো কয়েকদিন সুন্দর করে অনুশীলন করতে পারতাম। অন্য মেয়েরা গ্র্যান্ডমাস্টার রাজীবের কোচিং নিয়েছে অলিম্পিয়াডে আসার আগে। আমি কোচিং নিইনি। এবার আমার প্রতিটি খেলাই উইনিং পজিশনে ছিল। ভুল করিনি, তাই জিতেছি।

ঢাকা পোস্ট : আপনার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মুহূর্ত নিশ্চয়ই এবারের অলিম্পিয়াড... 

রাণী হামিদ : এবারের অলিম্পিয়াড নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। আমি এর আগেও প্রথম বোর্ডে টানা ছয় বার জিতেছি। সাবেক বিশ্ব রানারআপ, মহিলা জুনিয়র বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকেও হারিয়েছি। তখন এত আলোচনা হয়নি। আমার কাছে সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত লন্ডনে যখন প্রথম আইএম নর্ম পেয়েছিলাম এক গ্র্যান্ডমাস্টারকে হারিয়ে। যার রেটিং ছিল ২৪০০।

ঢাকা পোস্ট : এবার বেশি আলোচনা হওয়ার কারণ আপনার বয়স। এই বয়সে মানুষের স্বাভাবিক কার্যক্রম করাই কঠিন। সেখানে একটি খেলার সর্বোচ্চ আসরে অংশগ্রহণ এবং টানা জয়... 

রাণী হামিদ : বয়স হয়েছে, শরীর মাঝে মধ্যে খারাপ করে। এখানে এসেও খানিকটা ভয়ে ছিলাম। কোন সময় কী হয়, ফেডারেশনকে না কোনো বিপদে ফেলি। তবে এখানকার ব্যবস্থাপনা অনেক ভালো। শুধু একটু কষ্ট হয় হোটেল থেকে বাসে ভেন্যুতে নামানোর পর বেশ কিছুক্ষণ হাঁটতে হয়। এছাড়া আর তেমন কষ্ট হয়নি। 

ঢাকা পোস্ট : আপনি তো ওপেন বিভাগেও কয়েকবার খেলেছেন। এই কৃতিত্ব বাংলাদেশের অন্য কারো নেই…

রাণী হামিদ : শুধু বাংলাদেশ কেন অন্য অনেক দেশেই নেই। আমি তিন বার বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিভাগে অংশ নিয়েছি। সেই সময় মহিলা দাবাতেই মহিলা দাবাড়ু কম ছিল আর উন্মুক্ত বিভাগে মহিলা দাবাড়ুর অংশগ্রহণ তো একেবারেই ছিল না। আমি বাংলাদেশের তিন প্রজন্মের সঙ্গে খেলেছি। গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়ার বাবা পয়গাম আহমেদের সঙ্গেও খেলেছি, পরে জিয়া এরপর ওর ছেলে তাহসিনের সঙ্গেও। তিন প্রজন্মের সঙ্গে খেলার সৌভাগ্য ও সুযোগ অনেকের হয়নি।

ঢাকা পোস্ট : আপনার এক ছেলে কিংবদন্তী ফুটবলার কায়সার হামিদ। আরেক ছেলে ববি হামিদ হ্যান্ডবল ফুটবল দুটোই খেলেছে। আরেক ছেলে সোহেল হামিদ স্কোয়াশ খেলোয়াড় (ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন)। এই বয়সেও আপনি খেলছেন- আপনার পরিবারের সহায়তা কতটুকু?

রাণী হামিদ : আমার ছেলেরা চায় আমি যেন সবসময় খেলি। আমার ছেলে সোহেল আমার কোনো খেলা সহজে মিস দেয় না। এবার অনলাইনে সব খেলা দেখেছে। সেগুলো বিশ্লেষণ করে আমাকে আবার পাঠিয়েছে। যেটা দেখে আমি আবার অনুশীলন করেছি। আমার ছেলেদের স্ত্রীরা এবং নাতিরাও দাবা পছন্দ করে।

ঢাকা পোস্ট : আপনার স্বামী কর্ণেল হামিদ নেই অনেক বছর। ছেলে ববি হামিদকেও হারিয়েছেন বছর দু’য়েক হলো। শোক কাটিয়ে এখনো খেলা তো বেশ কষ্টকর...

রাণী হামিদ : আমার খেলাধুলার পেছনে অন্যতম অবদান স্বামীর। তিনি আর্মি অফিসার হলেও খেলাধুলা খুবই পছন্দ করতেন। বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তা ছিলেন। আমার পুরো পরিবারই খেলাধুলার। ববির চলে যাওয়া আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। সবার ভালোবাসায় অনেক কষ্টে আবার খেলায় মনোযোগ ফিরিয়েছি। দাবা আমার জীবনেরই অংশ।

ঢাকা পোস্ট : দাবা অনুশীলন নির্ভর খেলা। দিনে কয় ঘণ্টা অনুশীলন করেন?

রাণী হামিদ : কম্পিউটারেই বেশি খেলতে হয়। আসলে কম্পিউটারে খেলে সেভাবে অনুশীলন হয় না। আগে যারা বাসায় এসে খেলত, তারা এখন সবাই ব্যস্ত। আমি আগে ফেডারেশনে গিয়ে আকমল হোসেনসহ অনেকের সঙ্গে খেলেছি। এখন রাস্তায় যানজট। ফেডারেশন-বাসায় আসা-যাওয়াতেই দিন শেষ হয়ে যায়।

ঢাকা পোস্ট : আপনার লেখা ‘মজার খেলা দাবা’ বইটি দাবার অনেকটা পাঠ্যবইয়ের মতো। আরেকটি বই কি লেখার ইচ্ছে আছে?

রাণী হামিদ : বাংলাদেশের বহু মানুষ এই বইটি পড়েছে। গ্র্যান্ডমাস্টার রাকিব বেশ কয়েকবারই বলেছে, ‘আমার বই পড়ে সে দাবা শুরু করেছে’। এ রকম আরো অনেকে বলেছে। একটি বই লেখা অনেক কঠিন কাজ। আমার স্বামী কর্ণেল হামিদের অনুপ্রেরণায় আমি লিখেছি। আমি শুধু লিখেছি। সম্পাদনা, প্রকাশনা সবকিছুই তার উদ্যোগ ও বাস্তবায়ন। বইটি মাঝে মধ্যে পুনঃপ্রকাশ হয়।

ঢাকা পোস্ট : ২০২৬ সালে উজবেকিস্তানে পরবর্তী অলিম্পিয়াড। সেখানে খেলার ইচ্ছে আছে?

রাণী হামিদ : আসলে এখন প্রথম চ্যালেঞ্জ সুস্থ থাকা। দিন দিন শরীর নরম হয়ে যাচ্ছে। যত দিন সুস্থ থাকব তত দিন দাবা খেলব। নতুন মেয়েরা উঠে আসছে। এবার তো অনেকটা ভাগ্যক্রমেই খেললাম। জাতীয় মহিলা দাবায় পঞ্চম স্থানে প্লে অফে হেরে যাই। শিরিন পারিবারিক কারণে না যাওয়ায় অলিম্পিয়াডে সুযোগ পাই। ভাগ্যের লিখন যায় না খণ্ডন, দুই বছর পর ভাগ্যে কী আছে আল্লাহ জানেন!

এজেড/জেএ