রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ক্রীড়াঙ্গনে লেগেছে বড় ধাক্কা। অনেক ফেডারেশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বিদেশ থেকে ফিরছেন না, আবার অনেকে দেশে থেকেও আত্মগোপনে। এই পরিস্থিতিতে ক্রীড়াঙ্গনে নেমে এসেছে সংকট। 

বাংলাদেশের ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানটি সকল ফেডারেশনের তদারকি করে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অধিভুক্ত ফেডারেশন/এসোসিয়েশনের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের অবস্থান জানতে চিঠি দেয়। 

সাধারণত জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চিঠিপত্রের উত্তর দেয় ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকরা। অ্যাথলেটিক্স, সাঁতার, হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অনুপস্থিত থাকায় এনএসসি চিঠির উত্তর পায়নি। শীর্ষ তিন ফেডারেশনসহ মোট ১৭ ফেডারেশন থেকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কোনো তথ্য পায়নি। বেশ কয়েকটি ফেডারেশন তথ্য দিয়েছে তাদের সভাপতি উপস্থিত, আবার কেউ লিখেছেন অনুপস্থিত। উপস্থিত-অনুপস্থিত উভয় বিষয়টি সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষর করে নিশ্চিত করেছেন। 

ফুটবল, ক্রিকেট ও বিওএ (বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন) ছাড়া দেশের সকল ফেডারেশনের সভাপতি সরকার মনোনীত। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে অধিকাংশ ফেডারেশনের সভাপতি নেই। আবার অনেক ফেডারেশনের নেই সাধারণ সম্পাদকও। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও ফেডারেশনগুলোর কমিটির অনেকেই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় তারাও সামনে আসছেন না।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ

ফেডারেশনগুলোর অভিভাবক সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তাদের হাতে ফেডারেশনের কমিটি ভাঙা-গড়ার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। যদিও সেই ক্ষমতার আলোকে দুই শীর্ষ ফেডারেশন ফুটবল ও ক্রিকেটে গড়াপেটা করলে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা আছে।

ফুটবল-ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা থাকলেও অন্য ফেডারেশনগুলোতে নেই। সেই সকল ফেডারেশনে অ্যাডহক কমিটি অথবা সহ-সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদককে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বা ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের আদেশ দেওয়ার এখতিয়ার রাখে এনএসসি। ফেডারেশনগুলোর নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ ৪ বছর। কিছু ফেডারেশনের মেয়াদ শেষের দিকে, আবার কিছু ফেডারেশন মেয়াদোত্তীর্ণ, আবার কিছু অ্যাডহক কমিটির অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ইতোমধ্যে সব ফেডারেশনের হালচিত্র নিয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দিয়েছে। সেই চিঠিতে খেলাধুলা চলার স্বার্থে অ্যাডহক কমিটির সুপারিশ করা হয়েছে। 

ফেডারেশন ছাড়াও জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোতেও অচল অবস্থা। অধিকাংশ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। জেলা ক্রীড়া সংস্থা যেহেতু আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা নেই, তাই জেলা-বিভাগে অ্যাডহক গঠনের অভিপ্রায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। 

এজেড/এএইচএস