স্তাদে দ্য ফ্রান্স স্টেডিয়াম প্যারিসের উপকণ্ঠ সেন্ট ডেনিসে অবস্থিত। কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেই সুউচ্চ স্টেডিয়াম চোখে পড়ে। গতকাল সেই স্টেডিয়ামের সামনে ছিল গণজোয়ার। সবাই ছুটছিলেন অ্যাথলেটিক্স দেখতে। 

হিট দেখতেই অলিম্পিক গেমসের গ্যালারি থাকে পরিপূর্ণ। সেখানে গেমসের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ১০০ মিটার স্প্রিন্টে তিল ধারণের ঠাঁই নেই এবং সেটাই স্বাভাবিক। আয়োজকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন ১০০ মিটারের আকর্ষণ বাড়াতে। কিছুক্ষণ লাইট অফ করে, স্ক্রিনে গান দিয়ে ভিন্ন আবহ তৈরি করেছেন।

১০০ মিটার স্প্রিন্ট মানেই উসাইন বোল্ট। তার বিদায়ের পর বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে সৃষ্ট শূন্যতা এখনও বিরাজমান। অন্যরা নিজেদের সেরাটা দিলেও বোল্ট যেন বোল্টই। তাই ১০০ মিটার স্প্রিন্ট শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগেও আলোচনায় ছিলেন বোল্ট। এরপর ১০০ মিটার স্প্রিন্ট শুরু হতেই পিনপতন নীরবতা। চোখের পলকেই এক ঝটকায় ছুটলেন সবাই।

স্তাদে দ্য ফ্রান্স স্টেডিয়াম

স্প্রিন্ট শেষ হয়েও যেন হয়নি শেষ। আমেরিকান নোয়াহ লাইলস ও জ্যামাইকার টম্পসন দুই জনই দাঁড়িয়ে রইলেন। দুই জনেরই টাইমিং ৯.৭৯ সেকেন্ড। স্টেডিয়ামের গ্যালারিও সম্পূর্ণ নিশ্চুপ। কে হচ্ছেন অলিম্পিকের স্বর্ণজয়ী দ্রুততম মানব?

সবার দৃষ্টি ইলেকট্রনিক বোর্ডের দিকে। আধুনিক প্রযুক্তিতে সেকেন্ডেরও কয়েক হাজার ভাগ করা যায়। সেই ফটো-ফিনিশিংয়ের রায় গেল আমেরিকান লাইলসের দিকে। লাইলসের টাইমিং ৯.৭৮৪ আর টম্পসনের ৯.৭৮৯। মাত্র ০.০০৫ সেকেন্ডের ব্যবধানে অলিম্পিকে স্বর্ণ-রৌপ্য নিষ্পত্তি। ব্রোঞ্জজয়ী মার্কিন স্প্রিন্টার ফ্রেড কার্লিও খুব বেশি পেছনে ছিলেন না। তার টাইমিং ৯.৮১। অলিম্পিকে ১০০ মিটার পুরুষ ইভেন্টে এত রোমাঞ্চকর লড়াই সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায়নি। ১৯৮০ সালের মস্কো অলিম্পিকে এমনটা হয়েছিল।

সবার মাঝে ১০০ মিটারের দ্রুততম মানব লাইলস

শিল্প-সাহিত্যে ফরাসিদের কদর বিশ্ব জুড়েই। খেলাধুলার সাফল্য ও আয়োজনেও তারা অগ্রগণ্য। ফ্রান্সের ক্রীড়া ইতিহাসের অন্যতম অনুষঙ্গ স্তাদে দ্য ফ্রান্স স্টেডিয়াম। এখানেই ১৯৯৮ বিশ্বকাপ ফুটবলে ব্রাজিলকে হারিয়ে স্বাগতিক ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। শত বছর পর অলিম্পিক ফিরেছে প্যারিসে। তবে ঐতিহাসিক স্তাদে দ্য ফ্রান্সে নেই ফুটবল। গেমসের অ্যাথলেটিক্স ও রাগবির ভেন্যু স্তাদে দ্য ফ্রান্স।

স্তাদে দ্য ফ্রান্স মানেই বিশ্ব ক্রীড়াপ্রেমীদের মনে ১৯৯৮ বিশ্বকাপ ফাইনালের ব্রাজিল-ফ্রান্স ম্যাচ। এখনও ফরাসি ফুটবলের মূল ভেন্যু স্তাদে দ্য ফ্রান্সই। জাতীয় দলের বড় ম্যাচ ও টুর্নামেন্ট এখানেই হয়। সুবিশাল স্টেডিয়াম। গেমস চলাকালে অবশ্য স্টেডিয়ামে ফুটবল জাদুঘর বন্ধ। তাই ফ্রান্স ফুটবলের নানা কীর্তি দেখার সুযোগ হয়নি।

এজেড/এএইচএস