চার দিকে সুনশান নীরবতা। সাতেউরো কমপ্লেক্সে প্রবেশের পর কয়েক কিলোমিটার পেরিয়ে শুটিং রেঞ্জ। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের দৃষ্টি ছিল সুদূর সাতেউরোতে। তাই প্যারিস থেকে ৩০০ কিলোমিটার পেরিয়ে শুটিং ফেডারেশন, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা এসেছেন। 

বাংলাদেশের শুটার রবিউল ইসলাম ৬২৪.২ স্কোর করে ৪৩ তম হয়েছেন। প্যারিস আসার আগে দেশে ফাইনাল রাউন্ডে (টপ এইটে) খেলার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। বাস্তবতা ও প্রত্যাশার সঙ্গে ফারাক হলো অনেক। শুটিং রেন্জ থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা শুটার বলেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা ও ম্যাচ টেম্পারমেন্টে ঘাটতি রয়েছে। অনুশীলন নিয়মিত করলেও আরো বেশি টুর্নামেন্ট খেলা প্রয়োজন।’

১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ৪৯ জন অংশগ্রহণ করেছিলেন। এর মধ্যে রবিউল ৪৩। বাছাইয়ে শীর্ষ ৮ জন ফাইনাল রাউন্ড খেলছেন৷ অষ্টম হওয়া শুটারের স্কোর ৬২৯.৮। রবিউলের চেয়ে ৫.৬ পয়েন্ট বেশি। এত স্বল্প ব্যবধানের মধ্যেই অনেক কিছু নিহিত রয়েছে বলে মন্তব্য বাংলাদেশি শুটারের, ‘আমি অনেক শুট ১০ করলেও ১০.১ ও. ২ বেশি ছিল। সেগুলো আরেকটু ভালো হলে পজিশন উন্নত হতে পারতো। পাঁচ পয়েন্টের এই ব্যবধান ঘুচাতে হলে আমাদের আরো বেশি টুর্নামেন্ট ও পরিকল্পনা করতে হবে।’

রবিউল ও বাংলাদেশের অনেক শুটারই জাতীয় পর্যায়ে ৬৩০ কাছাকাছি স্কোর করেন। জাতীয় পর্যায়ে ভালো করলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সফল হন না তারা। প্যারিস অলিম্পিকে বাংলাদেশের শেফ দ্য মিশন শুটিং ফেডারেশনের মহাসচিব ইন্তেখাবুল হামিদ অপু। 

সাতেউরো শুটিং রেঞ্জে দাড়িয়ে তার পর্যবেক্ষণ, ‘আমাদের শুটারদের ৬২৯-৩০ স্কোর করার সামর্থ্য রয়েছে। সেটা জাতীয় প্রতিযোগিতায় আপনারা দেখেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেই স্কোর করতে হলে নিয়মিত বিদেশে টুর্নামেন্ট খেলা প্রয়োজন। বিদেশে বেশি টুর্নামেন্ট খেললে অভিজ্ঞতা ও মানসিক দৃঢ়তা দুটোই বাড়বে। অভিজ্ঞতা ঘাটতির পাশাপাশি আমাদের শুটারদের মানসিকতার উন্নতিও ঘটাতে হবে।’

বাংলাদেশ শুটিং দলের সঙ্গে কাজ করছেন ইরানি কোচ জায়ের। শুটারদের স্কোর উন্নয়ন ও মানসিকতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করছেন তিনি। অলিম্পিকে শুটার রবিউলের পারফরম্যান্স নিয়ে তার মন্তব্য, ‘তার অনুশীলন ও প্রস্তুতি ভালোই ছিল। শুরুটাও দারুণ হয়েছিল। আকস্মিক কিছু শট একটু খারাপ হওয়ায় পজিশন পিছিয়েছে। সামগ্রিকভাবে তার স্কোর তেমন খারাপ হয়নি।’

অনেক দেশের ক্রীড়াবিদের জন্য অলিম্পিক পদক জয়ের মঞ্চ। বাংলাদেশের জন্য এখনো অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ই। প্যারিস অলিম্পিক শেষে শুটার রবিউল ইসলাম সেটাই বললেন, ‘অলিম্পিক অনেক বড় ক্ষেত্র। এখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে গর্বিত। অলিম্পিকে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা ক্যারিয়ারের বাকি সময় কাজে লাগবে।’

এজেড/জেএ