ফ্রান্সের রাজধানীর প্যারিসের প্রাণকেন্দ্র পোরটে ম্যালিয়ত। এই মেট্রো স্টেশনের পাশেই সুবিশাল ভবনে মেইন প্রেস সেন্টার। যেখানে বিশ্বের নানা দেশের সাংবাদিকদের পদচারণায় মুখরিত। সবার আকর্ষণ আগামীকাল গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে আয়োজকরা আনুষ্ঠানিক কোনো ব্রিফিং করেনি। শেষ মুহুর্তে নিরাপত্তার কারণে খানিকটা রাখঢাক করেই চলছে আয়োজন। আগামীকাল প্যারিস সময় সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত চলবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।

এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিন্নতা রয়েছে ব্যাপক। প্রথমবারের মতো কোনো স্টেডিয়ামে নয়, নদীতে হবে গেমসের উদ্বোধন। ফ্রান্সের রাজধানী সেন নদীর দুই ধারে গ্যালারীও করা হয়েছে। যেখানে কয়েক হাজার সাধারণ দর্শক গেমসের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন। উদ্বোধনী-সমাপনী অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ থাকে মার্চ পাস্ট। সেই মার্চ পাস্টেও থাকছে ভিন্নতা। প্রায় দুইশ’র কাছাকাছি নৌকায় খেলোয়াড়, কর্মকর্তারা মার্চ পাস্টে অংশ নেবেন। এ রকমভাবে কখনো গেমসের উদ্বোধন আগে কখনো হয়নি।

নদীতে আয়োজনের পাশাপাশি এই গেমসের উদ্বোধনে আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য ‘জিরো কার্বন’। গেমসে আতশবাজি ও আরো অনেক দ্রব্য পোড়ানো হয় যা পরিবেশ উপযোগী নয়। এবারের গেমসে পরিবেশকে অনেক প্রাধান্য দিয়েছেন আয়োজকরা। তাই পরিবেশের প্রতি হুমকি হতে পারে এমন কোনো কর্মকান্ডই রাখা হয়নি।

প্যারিস অলিম্পিক গেমসে থাকবেন বিশ্বের নানা খেলার নানা বড় ব্যক্তিত্ব। ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ছাড়াও থাকছেন রাজনৈতিক, সামাজিক ব্যক্তিবর্গও। করোনা পরবর্তী সময় বিশ্বরাজনীতি এখন নানা বিভাগে বিভক্ত। এমন সময় বিশ্বের প্রায় সকল দেশ এক ছাদের নিচে। তাই শুধু ক্রীড়া নয়, রাজনৈতিক-কূটনৈতিক দৃষ্টিও থাকছে প্যারিসের দিকে। এজন্য ফ্রান্স সরকারও সচেষ্ট। নানা হুমকি মোকাবেলায় নিরাপত্তা খাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও বাজেট রেখেছে।

শিল্প-সংস্কৃতির রাজধানী হিসেবে প্যারিসের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। সাংস্কৃতিক রাজধানী প্যারিস আগামীকাল বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনেও আরেক কৃত্তিত্বের স্বাক্ষী হচ্ছে। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের সর্ববৃহৎ আসর অলিম্পিক সর্বোচ্চ তিন বার আয়োজনে লন্ডনের সমকক্ষ হচ্ছে প্যারিস। আধুনিক অলিম্পিকের যাত্রা ১৮৯৬ সালে। প্রথম অলিম্পিকের পরের আসরই হয়েছিল ফ্রান্সের প্যারিসে। ১৯০০ সালের পর অলিম্পিক আয়োজনে ফ্রান্সকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল দুই যুগ। ১৯২৪ সালের পর তৃতীয় বারের মতো প্যারিসে অলিম্পিক আয়োজন, এবার অপেক্ষা ঘুচছে ১০০ বছরের।

এজেড/এইচজেএস