যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই দেশের সকল ফেডারেশন, ক্রীড়া সংস্থা ও ক্রীড়া স্থাপনা দেখভাল হয়। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী পদাধিকার বলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দাপ্তরিক প্রধান হিসেবে কাজ করেন সচিব। এনএসসি অ্যাক্টের নতুন সংশোধনীতে সচিবের পদের বিলুপ্তি হয়ে নির্বাহী পরিচালক হচ্ছে। 

ক্রীড়াঙ্গনে ‘এনএসসি সচিব’ শব্দটি বেশ আলোচিত ও সমাদৃত। তবে সরকারি নির্দেশনার জন্যই এই পদের বিলুপ্তি ঘটছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আইন কর্মকর্তা কবিরুল হাসান বলেন,‘মন্ত্রীপরিষদের একটি নির্দেশনা ছিল সচিব শুধু মন্ত্রণালয়ের পূর্ণাঙ্গ সচিবরাই ব্যবহার করবেন। মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা দপ্তরে সচিব ব্যবহার না করার। সেই নির্দেশনার আলোকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সচিবের পরিবর্তে নির্বাহী পরিচালক করে এনএসসি অ্যাক্ট ২০২৩ সংশোধনী প্রস্তাবনা নেওয়া হয়েছে।’

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাবেক সচিব পরিমল সিংহ থাকাবস্থায় এই সংশোধনীর কাজ হয়েছিল। সেটাই আবার সম্প্রতি ক্রীড়া মন্ত্রণালয় পাঠিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অ্যাক্ট ২০২৩ সংসদে উঠবে। সংসদে পাশ হলেই এই অ্যাক্ট বাস্তবায়ন হবে। 
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণাঙ্গ সচিব রয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে আছেন আরেক সচিব পদধারী। যুগ্ম সচিব/অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের ব্যক্তিই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব হন। দুই জনই সচিব দাপ্তরিক কাজে ব্যবহার করলেও রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদা অবশ্য ভিন্ন। ক্রীড়াঙ্গনের মতো এ রকম ঘটনা রয়েছে দেশের বিভিন্ন স্তরে। বিশেষত দেশের প্রতিটি ইউনয়িনেও রয়েছে সচিব পদ।  

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। নতুন অ্যাক্টে ভাইস চেয়ারম্যান-একাধিক করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী থাকলে একজন এনএসসির চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান,আবার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রী থাকলে একইভাবে চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান। সে সকল ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের সচিব এক্স-অফিসিও হিসেবে ভাইস চেয়ারম্যান হবেন। 
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মূল অ্যাক্ট ৭৪। সেটাই মাঝে মধ্যে প্রয়োজনে সংশোধিত হয়েছে। ২০১৮ সালে সর্বশেষ সংশোধনের পর এবার ২০২৩ হিসেবে সংশোধনের অপেক্ষায়। 

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে সচিব এবং চার জন পরিচালক (অর্থ, প্রশাসন, ক্রীড়া ,পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ) এই পাচ পদে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) ক্যাডারের। সরাসরি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পদায়ন হয়। এই পদগুলোতে যারা আসেন তারা সাধারণত দুই-তিন বছর থাকেন। কিছু ক্ষেত্রে তিন বছরের অধিক সময় আবার যোগদানের কয়েক মাসের মধ্যেও বদলির ঘটনা ঘটে। পরিচালক প্রশাসন হিসেবে সর্বশেষ কাজ করেছিলেন হামিম হাসান। তিনি অবসরে যাওয়ার পর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদটি এখনো শূন্য। মন্ত্রণালয়ের সচিব ,জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব উভয়ই তাগাদা দিয়েও শূন্যস্থান পূরণ করতে পারেননি এখনো। পরিচালক প্রশাসন নেই এর মধ্যে আবার পরিচালক ক্রীড়াও বদলি অর্ডার হয়েছে। 

সচিব ও চার পরিচালক ছাড়া জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে সিভিল সার্ভিস ক্যাডার না থাকলেও রাজস্ব খাতে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ক্রীড়া, প্রশাসন, ইঞ্জিনিয়ারিং সহ অনেক বিভাগে  কর্মরত রয়েছেন। রাজস্ব খাতের বাইরেও অনেকে কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে এবং মাস্টার রোলে।

এজেড/