বাংলাদেশের অন্যতম সেরা আরচ্যার দিয়া সিদ্দিকী। রিকার্ভ ব্যক্তিগত নারী বিভাগে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছেন। আজ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশ পুলিশ আরচ্যারি ক্লাবের জ্যোতি রাণী চাকমাকে হারিয়ে রিকার্ভ ইভেন্টে সোনা জিতেছেন। এ নিয়ে টানা তিন বার নিজের ইভেন্টে শ্রেষ্টত্ব বজায় রাখলেন।

রিকার্ভ ব্যক্তিগত ইভেন্টে বাংলাদেশ আনসারের দিয়া সিদ্দিকী গতকাল এলিমিনেশন রাউন্ড থেকে ফাইনালে পৌঁছাতে প্রতিপক্ষকে কোনো সেটই জিততে দেননি। সব পর্বেই তিনি সরাসরি ৬-০ সেটে জিতেছেন। আজ ফাইনালেও পূর্ণাঙ্গ পাঁচ সেটের প্রয়োজন হয়নি। চার সেটেই খেলা শেষ করেছেন দিয়া। জ্যোতি রানী চাকমাকে ২-৬ সেট পয়েন্টে পরাজিত করেছেন।  হ্যাটট্রিক জিতে বেশ উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশের সেরা নারী আরচ্যার, 'এই ইভেন্টে আমার টানা তিনবার স্বর্ণ আসল। বিউটি দি’র (বিউটি রায়) ছয় বার জেতার রেকর্ড আছে। সামনের বছর গুলোতে সেটা স্পর্শ করার লক্ষ্য রয়েছে।'

ব্যক্তিগত ইভেন্টে স্বর্ণ জিতলেও দলীয় দুই ইভেন্টে নারী দলগত ও মিশ্র দলগত রিকার্ভ কোনটিতেই ফাইনালে উঠতে পারেনি দিয়ার দল আনসার। মিশ্র বিভাগে এবার স্বামী রোমান সানার সঙ্গে জুটি গড়ে খেলেছিলেন। রোমান ও দিয়ার জুটিকে ব্রোঞ্জ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। নড়াইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাছে ৬-০ সেট পয়েন্টে হেরেছেন রোমান-দিয়া জুটি। ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে বিকেএসপিকে ৫-৩ সেট পয়েন্টে হারিয়েছেন তারা। 

গত বছর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ দেশের অন্যতম দুই তারকা। জীবনের জুটি গড়ার পর আজই প্রথম খেলার জুটি ছিলেন তারা। দুই সেরা আরচ্যার নড়াইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার (ইতি খাতুন ও আজিমুল হক) কাছে সরাসরি ৬-০ সেটে হেরেছেন। কোন সেটই জিততে না পারা খানিকটা অপ্রত্যাশিতই। তবে দিয়া বিষয়টি অন্য ভাবে দেখছেন, 'ক্রীড়া সংস্থার নাম দেখে অন্য রকম লাগলেও সেখানে ভালো খেলোয়াড়ই খেলেছেন। পুলিশ আরচ্যারি দলে যারা সুযোগ পাননি তারা নড়াইলের হয়ে খেলেছেন। তারা ভালো মানের আরচ্যারই।'

বিয়ের পর প্রথম জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে সোনার পরিবর্তে ব্রোঞ্জ জিতে খানিকটা আফসোস রয়েছে জুটির। তবে বাস্তবতায় বিশ্বাসী দিয়া, 'প্রত্যাশা ও আত্মবিশ্বাস ছিল স্বর্ণ জেতার। ব্রোঞ্জ জিতেছি এটাও একটা প্রাপ্তি।' রোমান সানা এবার অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে খেলেছেন। দিয়া একটি স্বর্ণ জিতলেও রোমান কোনো ইভেন্টেই ফাইনালে খেলতে পারেননি। এরপরও রোমানের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট তার স্ত্রী ও সতীর্থ, 'সে ভালোই খেলেছে। বিশেষ করে মিশ্র বিভাগে আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে। আমার চেয়ে তার স্কোর ভালোই হয়েছে। আমি বরং মিশ্রতে সেভাবে স্কোর করতে পারিনি।'

রিকার্ভ নারী ও পুরুষ দলগত দু’টো ইভেন্টেই ব্রোঞ্জ জিতেছেন রোমান ও দিয়া। এই জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে রোমান তিনটি ব্রোঞ্জ পদক আর দিয়া এক স্বর্ণের পাশাপাশি দু’টি ব্রোঞ্জ জিতেছেন। রোমান ও দিয়া দুই জনই বাংলাদেশ আনসারের হয়ে খেলেন। গত জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে আনসার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এবার তাদের সেই অবস্থান ক্ষুন্ন হয়েছে। এ নিয়ে অবশ্য অতৃপ্তি রয়েছে দিয়ার, 'দলগত ইভেন্টে আমাদের আরো উন্নতি করতে হবে। আগামী চ্যাম্পিয়নশিপে আমরা শিরোপা পুনরুদ্ধারে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।’

রিকার্ভ পুরুষ ব্যক্তিগত ইভেন্টে আনসারের সাকিব মোল্লা চমক দেখিয়ে ফাইনালে উঠেছিলেন। তবে ফাইনালে পুলিশ আরচ্যারি ক্লাবের আব্দুল হাকিম রুবেলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নশিপের বড় আকর্ষণ হতে পারেননি। রিকার্ভে এককে দিয়া, রুবেলের মতো কম্পাউন্ড এককেও আতিকুজ্জামান ও বন্যা আক্তারের মতো সুপরিচিত আরচ্যারই সোনা জিতেছেন।

এজেড/এইচজেএস