২৬ বছর পর সাঁতারে ঢাবি, রেকর্ড রাফির
জাতীয় পর্যায়ে এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রাধান্য ছিল। জাতীয় ফুটবল দল ছিল যেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিচ্ছবি। সাঁতারে অবশ্য সেই রকম কৃতিত্ব নেই। এরপরও ছিল নিয়মিত অংশগ্রহণ। কিন্তু ১৯৯৭ সালের পর জাতীয় সাঁতারে আর অংশ গ্রহণ করেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে ম্যাক্স গ্রুপ ৩২তম জাতীয় সাঁতার, ডাইভিং ও ওয়াটারপোলো প্রতিযোগিতা। এই আসর দিয়ে ২৬ বছর পর জাতীয় সাঁতারে অংশ নিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলোয়াড় কোটায় ভর্তি হয়েছেন বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের খেলোয়াড়। কিন্তু এবারের জাতীয় সাঁতারে অংশ নেওয়া সাঁতারুদের সবাই ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া।
বিজ্ঞাপন
এবার সাঁতার ও ওয়াটারপোলো দুই বিভাগে অংশ নিচ্ছেন কৃষ্ণ হালদার, আবু বকর সিদ্দিক, সাইফুল ইসলাম রাসেল, রাজন সেন, সাইফুল ইসলাম তপু, আবদুর রাজ্জাক রকি, ইলিয়াস হোসেন, এবাদুল ইসলাম, আলী রওনক ইসলাম, নায়েব মোহাম্মদ শাহরিয়ার, স্বপন মিয়া, মানিকুল ইসলাম ও শ্রাবন্তী আক্তার।
মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালকের উদ্যোগেই এবার জাতীয় সাঁতারে অংশ নেওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক নিবেদিতা দাস বলেন, ‘যেহেতু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত আন্তঃবিভাগ, আন্তঃহল সাঁতার, ওয়াটারপোলো আয়োজিত হচ্ছে। গত ১১ অক্টোবর শেষ হয়েছে আন্তঃবিভাগ সাঁতার। ওই ধারাবাহিকতায় এবার মনে হয়েছে একটা গোছানো দল পেয়েছি। একটা পর্যায়ে ওদের টাইমিং এসেছে। এজন্যই আমরা জাতীয় সাঁতারে এসেছি।’
নিবেদিতা জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত সাঁতারু। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে সাতার ফেডারেশনের নির্বাহী সদস্য আবার পেশায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে যেবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় সাঁতারে অংশ নিয়েছিল সেবার নিবেদিতা দাস জিতেছিলেন ৪টি সোনা ও ২টি রুপা। এরপর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় সাঁতারে অংশ নেয়নি। যদিও ২০১৩ সালে নামকা ওয়াস্তে একজন সাঁতারু অংশ নিলেও কোনো পদক পায়নি।
এবারের প্রতিযোগিতায় মাত্র দুটি বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে একটি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২, ১৯৭৪ ও ১৯৭৬ সালে জাতীয় সাঁতারে রানার্স আপ হয়েছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কখনোই চ্যাম্পিয়নশিপ দৌড়ে থাকেনি।
আজ জাতীয় প্রতিযোগিতার প্রথম দিনে নতুন জাতীয় রেকর্ড হয়েছে একটি। ছেলেদের ৫০ মিটার ব্যাক স্ট্রোকে জাতীয় রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সামিউল ইসলাম রাফি। রেকর্ড গড়তে সময় নেন ০০:২৬.৯০ সেকেন্ড। রাফি মূলত নিজেই নিজের রেকর্ড ভেঙেছেন। গত বছর জাতীয় সাঁতারে অংশ নিয়ে তিনি সময় নেন ০০:২৭.৩৮ সেকেন্ড।
প্রথম দিনে সাঁতারে ১০টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। ১ম দিনে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ৯টি সোনা, ৬টি রুপা, ২টি ব্রোঞ্জ পদক; বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১টি সোনা, ৪টি রুপা ও ৫ টি ব্রোঞ্জ এবং বিকেএসপি ৩টি ব্রোঞ্জ পেয়েছে। প্রতিযোগিতায় সব মিলিয়ে অংশ নিচ্ছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা, ক্লাব, বিশ্বিবদ্যালয় ও বিভিন্ন সার্ভিসেস সংস্থা মিলিয়ে ৫৪টি দল। ২৬ বছর পর আবারও জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া ৩৫ বছর পর জাতীয় সাঁতারে বিজিবি।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিকভাবে শুভ উদ্বোধন করেন সহকারী নৌ প্রধান রিয়ার এডমিরাল মোঃ মঈনুল হক । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা বদরুল সাইফ।
এজেড/এইচজেএস