এশিয়ার দ্রুততম মানব-মানবীর সন্ধিক্ষণে
অলিম্পিক স্পোর্টস সেন্টারের মিডিয়া ট্রিবিউনে রাজ্যের ব্যস্ততা। ফটোগ্রাফাররা পজিশন নিয়েও আবার সরে যাচ্ছেন আরো ভালো ছবি তোলার আশায়। প্রতিবেদকরাও একেবারে সর্বোচ্চ মনোযোগী।
শুধু সাংবাদিকরাই নন, স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় হাজার চল্লিশ দর্শকও দাড়িয়ে। সবাই মোবাইল উচিয়ে ধরেছেন। যেভাবেই হোক এশিয়ার দ্রুততম মানব-মানবীর মুহূর্ত ধারণের প্রাণান্ত চেষ্টা। সাংবাদিক, দর্শকদের উৎসাহে বাড়তি মাত্রা দিয়েছে আয়োজকরাও। ১০০ মিটার নারী-পুরুষ উভয় ফাইনালের আগে পুরো স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট বন্ধ করে শুধু ৮ ফাইনালিস্টের উপর মৃদু আলো। সঙ্গে ঘোষক প্রতি জনের বর্ণনা করছেন আর স্টেডিয়াম জুড়ে করতালি।
বিজ্ঞাপন
শত কলরব থেমে গেল স্টাটারের আগ মুহূর্তে। স্প্রিন্টারদের মনোযোগ ধরে রাখতে পিনপতন নিরবতা। দৌড় শুরু হওয়া মাত্র ফটোগ্রাফারদের ক্লিকের পর ক্লিক। গ্যালারিতেও তুমুল কোলাহল। অনেকটা উল্কার গতিতেই শেষ হলো এশিয়ার দ্রুততম মানবীর লড়াই।
আট নারী দৌড়বিদের মধ্যে ব্যতিক্রম ছিলেন বাহরাইনের অ্যাথলেট। সবাই শর্টস পড়ে দৌড়ালেও তিনি দৌড়েছেন ফুল ট্রাউজার পড়েই। ডিসপ্লে বোর্ডে তার নাম তৃতীয়তে দেখার পর মাটিতে গড়াগড়ি খেয়েছেন কয়েকবার। ব্রোঞ্জ জিতলেও আনন্দ ছিল সোনা জয়ের চেয়েও বেশি।
এশিয়ার দ্রুততম মানবী হয়েছেন চীনের স্প্রিন্টার। মহাদেশের মধ্যে দ্রুততম মানবী হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন দেশের পতাকা গায়ে জড়িয়ে পুরো স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ করে। দ্রুততম মানবও হয়েছেন চীনের। তারও উদযাপন প্রায় একই রকম ছিল। দ্রুততম মানব-মানবী উভয়কে সর্বোচ্চ সম্মানই দিয়েছে অলিম্পিক সেন্টারের দর্শকরা। দুই বারই দাঁড়িয়ে গিয়ে অভিবাদন জ্ঞাপন হয়েছে।
ফুটবল, ক্রিকেটের ফাইনালের মতো ১০০ মিটার স্প্রিন্টও স্নায়ুর লড়াই। মানবীর ইভেন্ট নির্বিঘ্নে হলেও মানবের ইভেন্টে থাই স্প্রিন্টার ফলস স্টার্টে বাদ পড়েছেন। পদকের লড়াইয়ে শেষ মুহূর্তে লড়তে না পারার চেয়ে প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটানোয় দুহাত জোরে ক্ষমা চেয়ে টার্ফ ছেড়েছেন।
অলিম্পিক কিংবা এশিয়ান যে কোনো গেমসের প্রধান আকর্ষণ ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। বাংলাদেশের অলিম্পিক খ্যাত বাংলাদেশ গেমস এবং অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজনে ১০০ মিটার প্রতিযোগিতা আগের মতো রং ছড়ায় না। গত দুই দশকেই গরমের মধ্যেই হাসফাস করতে করতে স্প্রিন্টাররা ১০০ মিটারে লড়েন। বিশ্ব অ্যাথলেটিকস তো বটেই এশিয়ান অ্যাথলেটিকসের অনেক ইভেন্ট ফ্লাডলাইটের আলোয় হয়। বাংলাদেশে এই সুযোগ কদাচিৎ। ফ্লাডলাইট আলোয় স্প্রিন্ট তো দূরের কথা দেশের প্রধান অ্যাথলেটিকস ভেন্যুতে দৌড়াতে পারেন না দুই বছরের বেশি। সেই দেশের অ্যাথলেট এশিয়ান গেমসের সেমিফাইনালে খেলেছে সেটাই তো অনেক!
এজেড/এইচজেএস