গেমসের অন্যতম প্রাণ মেইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি )। বিভিন্ন দেশ/সংস্থা থেকে আগত সাংবাদিকরা বিশ্বের নানা প্রান্তে গেমসের খবর পৌছে দেন। এবার হাংজু এশিয়ান গেমসে মিডিয়ার জন্য ডাইনিংয়ে করা হয়েছে হালাল কর্ণার।

হাংজুর অন্যতম অভিজাত এলাকা এক্সপো সেন্টারে মেইন প্রেস সেন্টার অবস্থিত। বেশ বড় আয়তন নিয়ে করা হয়েছে মিডিয়া ওয়ার্কিং এরিয়া। যেখানে প্রায় সহস্রাধিক সাংবাদিক এক সঙ্গে বসে কাজ করেন। কাজের ফাঁকে অবসর এবং আহার নিবারণের জন্য রয়েছে ডাইনিংয়ের ব্যবস্থা। 

ওয়ার্কিং সেন্টারের নিচেই সুবিশাল ডাইনিং হল। এক হাজারের বেশি আসন বিশিষ্ট ডাইনিংয়ে বিশ্বের প্রায় সকল ধরনের খাবারই রয়েছে। এমন বড় ডাইনিং হলের একেবারে শেষ প্রান্তে রয়েছে হালাল কর্নার। সেখানে আছে প্রায় একশ আসন। হালাল কর্নারে মাছ, মাংস, সবজি,ফল,জুস সহ সব আইটেমই বুফে ব্যবস্থা। হালাল খাবার কর্ণারে কিছুটা দক্ষিণ এশিয়ান ধাঁচ রয়েছে।

কোনো বেলায় চিংড়ি ভুনা, কোনো বেলায় আবার গরু, খাসি থাকলেও ভাত থাকে সব সময়ই। সবজি, মাছ-মাংস থাকলেও ঝাল এবং মশলার ব্যবহার কম হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে আগত সাংবাদিকরা খেয়ে তেমন তৃপ্ত হতে পারছেন না। তৃপ্ত না হলেও হালাল খাবার সহজলভ্য হওয়ায় সবাই বেশ সন্তুষ্ট।

হালাল কর্ণারের অন্য পাশে রয়েছে কেএফসি/ওয়েস্টার্ন ফুড। আরেক প্রান্তে আছে স্থানীয় চাইনিজ ফুড। অন্য কোনো ফুড নিয়ে হালাল কর্নারে প্রবেশাধিকার নেই। হালাল খাবারগ্রহণকারীরাও কেএফসি নিয়ে হালাল জোনে প্রবেশ করতে পারেন না। বেশ সতর্কতার সঙ্গেই হালাল এরিয়া পরিচালনা করছেন ডাইনিং কর্তৃপক্ষ।

চীন,জাপান অঞ্চলে এশিয়ান গেমস বা বৈশ্বিক আসর হলে মুসলিম ধর্মাবলম্বিরা হালাল খাবার নিয়ে একটু শঙ্কায় থাকেন। এজন্য অনেকে নানা পন্থা অবলম্বন করে। কেউ অনেক দূরে গিয়ে খাবার সংগ্রহ করে আবার কেউ এক সাথেই দিনের খাবার কিনে আনে। হালাল খাবার না পেয়ে অনেকে এক/দুই বেলা খেয়ে দিন পার করে। এবার এশিয়ান গেমস কাভার করতে আসা সাংবাদিকরা অন্য বিড়ম্বনায় পড়লেও খাবার নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি তেমন।

মিডিয়া অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড সক্রিয় করার পরই একটি ট্রান্সপোর্ট ও মিল কার্ড পেয়েছেন সবাই। সেই মিল কার্ডে চাইনিজ কারেন্সি রিচার্জ করে ডাইনিংয়ে খাবার গ্রহণ করেন সাংবাদিকরা। তিন বেলা খাবারের জন্য প্রতিদিন ৫০ চাইনিজ আরএমবি ব্যয় করতে হয় (দুপুর এবং রাত ২০ ও সকালের নাস্তা ১০ আরএমবি )।

৩৭ টি ভেন্যুতে বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের খেলা চলছে। সাংবাদিকরা গেমস কাভার করতে এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে ছুটে চলছেন। মেইন মিডিয়া সেন্টারে হালাল খাবারের ব্যবস্থা থাকলেও ভেন্যুগুলো লাঞ্চ/ডিনারের ব্যবস্থা নেই। সেখানে বাদাম,চা-নাস্তা খেয়েই কাটাতে হয়।

চীনে ভাষা বরাবরই একটা বিড়ম্বনার বিষয়। চাইনিজদের মধ্যে খুব কমই ইংরেজী জানেন ও ব্যবহার করেন। ফলে প্রাত্যহিক অনেক বিষয়ে যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা হয়। এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুর দূরত্ব প্রায় এক ঘন্টা আবার সেখান থেকে মেইন মিডিয়া সেন্টার আরো এক ঘন্টা। এই দূরত্বের সঙ্গে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের আরেকটু ভোগান্তি একটু দূরে হোটেলে অবস্থান। গেমসে কাভারে নানা ঝক্কির মধ্যে একটু খানিই স্বস্তি হালাল কর্ণার !

এজেড/জেএ