‘নো ফটো, নো ভিডিও ; প্লিজ গো ফরোয়ার্ড, পিপল আর ওয়েটিং’- প্রতি মিনিটে বলে যাচ্ছেন নিরাপত্তা কর্মীরা। দর্শনার্থীরা শুনলেও খুব গ্রাহ্য করেন না। চোখের সামনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কিছু নিদর্শন। সবাই প্রাণভরে সময় নিয়ে উপভোগ করতে চায়। অসংখ্য মানুষের চাপ ও অপেক্ষা থাকায় একজনের পক্ষে ১ মিনিটের বেশি এক দফায় দেখার সুযোগ নেই। অনেকে তাই একবার দেখে আবার দেখতে পুনরায় লাইন ধরেন।

ইস্তাম্বুলের তোপকাপি প্যালেস অনেক জায়গা জুড়ে। এই জাদুঘরে তুরস্ক, মুসলিমদের অনেক নিদর্শন থাকলেও সবার আকর্ষণ মুলত  ‘প্রফেট হাউজ’-এর দিকেই। যেখানে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বেশ কয়েকটি নিদর্শন রয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা সারা বিশ্ব থেকে সেগুলো দেখার জন্য ছুটে আসেন।

প্রফেট হাউজের কক্ষে প্রবেশের পরই এক কোণে আছে দেখা যায় পানির পাত্র। বিশ্বনবী এই পাত্রে পানি পান করতেন। সেই পানির পাত্রেই পাশেই রয়েছে হযরত মুসা (আ.)-এর লাঠি। অত্যন্ত মাজেজা সম্পন্ন সেই লাঠি সংরক্ষণ করে রেখেছে তুরস্ক। ঐ কক্ষে রয়েছে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্রের পোষাকও।

ওই কক্ষের সামনেই আসল কক্ষ। যেখানে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর পায়ের ছাপ, দাড়ি, দাত, যুদ্ধে ব্যবহার করা তরবারি রয়েছে। এগুলো অবশ্য আবরণ দিয়ে আবৃত করা। সব আবরণই সোনালী।

ওই কক্ষে চার খলিফার তরবারিও রয়েছে। খলিফার তরবারি ছাড়াও সাহাবীদের তলোয়ারও রয়েছে। ১৬ শতকের দিকে অটোমান সাম্রাজ্যের সময় তুরস্ক এগুলো সংগ্রহ করেছে৷ 

তোপকানি প্যালেসে প্রবেশের জন্য টিকিট কাটতে হয়। বিদেশিদের জন্য টিকিটের মূল্য চারশ বিশ লিরা। প্যালেসের বিভিন্ন জায়গার বর্ণনা ইংরেজি, পর্তুগিজ সহ নানা ভাষায় অডিও শোনার ব্যবস্থাও আছে। তোপকাপি প্যালেসে অমুসলিম অনেক দর্শনার্থী আসেন। অমুসলিম নারীরাও মুসলমানদের বিশেষ এই নিদর্শনগুলো পরিদর্শন করেন। অমুসলিম নারীদের পরিদর্শনের সময় মাথায় কাপড় পড়িয়ে দেয়া হয়।

তুরস্কে ইসলামিক সলিডারিটি গেমস মাত্র শেষ হয়েছে। কোনিয়ায় অনু্ষ্ঠেয় সেই গেমসে অংশ নিয়ে অনেকে ইস্তাম্বুলে এসেছেন শুধু এই নিদর্শনগুলো দেখতে। বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টের অনেকেই এই নিদর্শন দেখতে ইস্তাম্বুল এসেছিলেন। 

এজেড/এইচএমএ